পাহাড়ে গোর্খা কাঁটায় বিদ্ধ ঘাসফুল! বিনয় বনাম বিমলের লড়াইয়ে ফেঁসে তৃণমূল
উত্তরবঙ্গের তিনটি পাহাড়ি আসন 'বন্ধু' গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকে ছেড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে এই আসন কী আদৌ তৃণমূলের ঝুলিতে আসবে? নাকি বিনয় তামাং বনাম বিমল গুরুঙের দ্বন্দ্বে বিজেপি বাজিমাত করবে এই আসনগুলিতে। পাহাড়ের রাজনৈতিক আবহাওয়া এখন অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের জন্য।
বড়সড় ধাক্কা খান বিমল গুরুং
কয়েকদিন আগেই পাহাড়ে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিলেন বিমল গুরুং। দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেন কালিম্পঙের বিমলপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি তথা ওই বিধানসভা কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রার্থী শুভ প্রধান। একইসঙ্গে জেলা কমিটির আরও ১১ জন সদস্য তথা জিটিএ সভাসদ এবং প্রথম সারির নেতা দলত্যাগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন সভাসদ গোপাল রুচেল। একসঙ্গে এতজনের দলত্যাগে অস্বস্তিতে বিমলপন্থী মোর্চা।
গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তনের পরই সরগরম রাজ্য রাজনীতি
বিমল গুরুংয়ের পাহাড়ে প্রত্যাবর্তনের পর থেকেই সরগরম হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। এনডিএ জোট থেকে বেরিয়ে এসে নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন গুরুং। বিধানসভা নির্বাচনে কালিম্পং, কার্শিয়াং এবং দার্জিলিং বিধানসভা কেন্দ্রে নিজস্ব দলীয় প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও তরাই এবং ডুয়ার্সের ১৮টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেসকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপিতে যোগ গোর্খা নেতাদের
সূত্রের খবর, তাঁর সমর্থনের কথাটি প্রকাশ্যে আসতেই দল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন বিক্ষুব্ধরা। তিলক চাঁদ রোকা, সহ-সভাপতি বিশাল ছেত্রী, শঙ্কর অধিকারীর মতো একাধিক নেতা দল ছেড়ে দিয়েছেন এবং বিজেপিতে যোগ দেন। এবার কালিম্পঙের দাপুটে নেতা দল ত্যাগ করায় তাঁদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইঙ্গিত আরও বেশি প্রকট হয়ে উঠছে।
পৃথক প্রার্থী বিমল-বিনয়দের
এই আবহে ২৩ মার্চ বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করতে চলেছে বিমলপন্থী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। অন্যদিকে বিনয় তামাংরা যে আলাদা প্রার্থী ঘোষণা করবেন তা ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে সূত্র মারফত। এই আবহে বিমলপন্থীদের মধ্যে এহেন ভাঙন কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে তৃণমূল কংগ্রেসেরও।
মাথায় হাত তৃণমূলের
উল্লেখ্য, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল শিবিরের কালিম্পঙে অন্যতম মুখ শুভ প্রধান। তিনি কালিম্পং পৌরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন। বিমল লুকিয়ে থাকাকালীনও বিনয় তামাং শিবিরের কাছে নতি স্বীকার করেননি শুভ প্রধান। বরং পৌরসভা দখল নিয়ে বিনয়রা চাপ সৃষ্টি করায় তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। এহেন শুভ প্রধান দল ছাড়ায় চাপে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি পাহাড়ে তৃণমূল কর্মীরা কোন পন্থী নেতা-কর্মী বা প্রার্থীদের সমর্থন করবে তা নিয়েও দ্বিধায় রয়েছে।