সংযুক্ত মোর্চার যা দাবি, তা হিন্দুদেরও! ২০১৬-র জোটে বামেদের অবস্থান নিয়ে 'স্বীকারোক্তি' সূর্যকান্তের
সংযুক্ত মোর্চা (United alliance) যেসব দাবিতে আন্দোলনে নামছে, তা হিন্দুদেরও দাবি। মুসলিমদের মতো সমানভাবেই আক্রান্ত তাঁরা। ফলে আইএসএফকে নিয়ে প্রচার চালিয়ে বিজেপি সুবিধা করতে পারবে না। এমনটাই মন্তব্য করেছেন সিপিএম (cpim
সংযুক্ত মোর্চা (United alliance) যেসব দাবিতে আন্দোলনে নামছে, তা হিন্দুদেরও দাবি। মুসলিমদের মতো সমানভাবেই আক্রান্ত তাঁরা। ফলে আইএসএফকে নিয়ে প্রচার চালিয়ে বিজেপি সুবিধা করতে পারবে না। এমনটাই মন্তব্য করেছেন সিপিএম (cpim) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (suryakanta mishra)। সঙ্গে তিনি বলেছেন ২০১৬-তে বাম-কংগ্রেসের জোটে অস্পষ্টতা ছিল। এবার তা নেই।
'বেসুরো' তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর, ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জল্পনা
অস্পষ্টতা ছিল ২০১৬-তে
২০১৬ সালে এরাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের সময় বামপন্থীরা কংগ্রেসের সঙ্গে আসন বোঝাপড়া করলেও তার মধ্যে অস্পষ্টতা ও বিভ্রান্তি থাকায় সফল হয়নি। দলীয় মুখপত্র গণশক্তি এমনটাই মন্তব্য করেছেন রাজ্য সিপিএম সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেছেন, বিজেপি এবং তৃণমূল ভবানীপুর সহ বেশ কিছু আসনে পরস্পর ভোট ট্রান্সফার করেছিল। কিন্তু বামপন্থীরা নির্বাচনে সফল না হলেও বিজেপি'র বিপদকে অনেকাংশে প্রতিহত করতে পেরেছিল। না হলে বিজেপি তখনই রাজ্যে দ্বিতীয় শক্তি হয়ে যেত, বলেছেন তিনি।
তৃণমূলের ছায়ায় বেড়েছে বিজেপি
তাঁর অভিযোগ রাজ্য সরকারের ছত্রছায়ায় বিজেপি বেড়েছে, সঙ্ঘ পরিবার প্রসারিত হয়েছে। তৃণমূলের শাসনের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মানুষের মধ্যে মেরুকরণ হয়েছে। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য কোনও বিকল্প তুলে ধরা যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বিজেপি'র উত্থানে সন্ত্রস্ত সংখ্যালঘুরা অনেকেই বাধ্য হয়ে তৃণমূলকে সমর্থন করেছিলেন। আর আদিবাসী, তফসিলি ও অন্যান্য অনগ্রসরদের একাংশ বিজেপি'র দিকে চলে গিয়েছিল।
মেহনতি মানুষের ঐক্যে ভাঙন ধরানোই বিপদ
সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, এটাই তো বিপদ। পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার ৫১ শতাংশই হলো আদিবাসী, তফসিলি, অন্যান্য অনগ্রসর এবং সংখ্যালঘু অংশের মানুষ। এরাই রাজ্যের দরিদ্র অংশের ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ এরাই মেহনতি অংশ। এই মেহনতি অংশের ঐক্যে ভাঙন ধরানোই তো বিপদ। বামপন্থীরা বরাবরই শ্রেণি সংগ্রামের সঙ্গে সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে একসূত্রে বেঁধে লড়াই করেছে। এখনও জীবন-জীবিকা, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার ওপরে আক্রমণের মোকাবিলায় শ্রেণি ও সামাজিক শক্তিগুলোর ঐক্য গড়ে তোলাই একমাত্র পথ। এটাই এই সময়ে বামপন্থীদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব। পশ্চিমবঙ্গে সংযুক্ত মোর্চার কাজ কেবল নির্বাচনী সংগ্রামের মধ্যে সীমিত থাকবে না, তা সুদূরপ্রসারী হবে। শ্রেণি ও সামাজিক শোষণের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে।
আইএসএফকে নিয়ে প্রচারে সুবিধা পাবে না বিজেপি
কোনও কোনও মহলের তরফে বলা হচ্ছে আইএসএফ'কে সঙ্গে নেওয়ায় উলটোদিকে বিজেপি'র সুবিধা হতে পারে। সাম্প্রদায়িক প্রচার চালিয়ে হিন্দুদের নিজেদের পক্ষে সংহত করতে সুবিধা হয়ে যাবে তাদের। এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ভুল ধারণা। শ্রেণি ও সামাজিক শক্তিগুলোর ঐক্য প্রয়াসে ওরা ইতিমধ্যেই সমস্যায় পড়েছে। সংযুক্ত মোর্চা যে সব দাবিতে লড়ছে সেগুলো তো হিন্দুদেরও দাবি, হিন্দুরাও তো মুসলিমদের মতোই সমানভাবে আক্রান্ত। তাঁদের জীবন-জীবিকাও বিপন্ন। পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ সব জায়গার লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা, সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলির অভিজ্ঞতা দেখিয়ে দিচ্ছে সবাইকে যদি ব্যাপকভাবে ঐক্যবদ্ধ করা যায় তাহলে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিরোধ করা সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গেও সম্ভব। মন্তব্য করেছেন সূর্যকান্ত মিশ্র।