বড় খেলা হবে, উত্তরবঙ্গে দিদির স্লোগান দিদিকেই ফিরিয়ে দিলেন 'ব্যতিক্রমী' রাজনাথ সিং
বিজেপির প্রচারে এসে দিদির স্লোগান দিদিকেই ফিরিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা রাজনাথ সিং৷ শুক্রবার বালুরঘাটের সভামঞ্চ থেকে হাসিমুখে তাঁর কটাক্ষ, 'দিদি বলছেন, খেলা হবে৷ আমিও বলছি, নিশ্চয় খেলা হবে৷ বড় খেলা হবে৷ বিকাশের খেলা হবে৷ শান্তির খেলা হবে৷'
দফায় দফায় রাজ্যে আসছেন বিজেপির হেভিওয়েটরা
বাঙালির মন পেতে দফায় দফায় রাজ্য়ে আসছেন বিজেপির হেভিওয়েটরা৷ সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই রাজ্যে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। ইদানীংকালে দেখা গিয়েছে, বাংলার শাসকদলকে আক্রমণের ক্ষেত্রে বিজেপি নেতানেত্রীরা বেশ চাঁচাছোলা৷ তাঁদের শরীরী ভাষাও বড় বেশি আক্রমণাত্মক৷ সেখানে রাজনাথ অনেকটাই ব্য়তিক্রমী৷ বরাবরই ভদ্র রাজনীতিবিদ হিসাবে পরিচিত তিনি৷ এদিনের সভাতেও তাই মার্জিত অথচ দৃঢ় সুরেই তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করতে শোনা গেল তাঁকে৷
এদিন সব বিষয়কেই ছুঁয়ে যান রাজনাথ
বিজেপির অন্য়ান্য় নেতা-মন্ত্রীর মতো রাজনাথেরও অভিযোগ, বাংলার সরকারের অসহযোগিতাতেই একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না এ রাজ্য়ের মানুষ৷ এ প্রসঙ্গ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে কিষান সম্মান নিধি, কিংবা আয়ুষ্মান ভারত, একে একে চলতি সব বিষয়কেই ছুঁয়ে যান রাজনাথ৷ তাঁর আশ্বাস, বিজেপির সরকার বাংলায় এলে পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে প্রত্য়েকের জন্য মাথার উপর ছাদ নিশ্চিত করা হবে৷ রাজ্য়ের একজনও গৃহহীন থাকবেন না৷
'আমার উচ্চারণ ঠিক আছে তো?'
বিজেপি নেতাদের বঙ্গ সফর মানেই পিসি-ভাইপোকে বাক্যবাণে বিদ্ধ করার সিরিজ৷ এক্ষেত্রেও যেন কিছুটা অন্য়রকম রাজনাথ৷ এদিন তাঁর ভাষণের ফাঁকে বারবার বাংলা বলতে শোনা যায় রাজনাথকে। বাংলায় কথা বলার পরই মঞ্চে উপস্থিত অন্য় বাঙালি নেতানেত্রীদের প্রতি তাঁর প্রশ্ন ছিল, 'আমার উচ্চারণ ঠিক আছে তো?'
'যত দোষ, নন্দ ঘোষ'
রাজনাথের দাবি, কংগ্রেস জমানার তুলনায় বাংলার মমতা সরকারকে অনেক বেশি টাকা দিয়েছে মোদীর সরকার৷ তারপরও কথায় কথায় কেন্দ্রকে দোষেন মমতা৷ এই প্রসঙ্গেই রাজনাথের মুখে শোনা যায় বহু প্রচলিত বাংলা প্রবাদ 'যত দোষ, নন্দ ঘোষ'৷ আর তখনই নিজের উচ্চারণ নিয়ে আশ্বস্ত হওয়ার জন্য রাজ্য় নেতাদের কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন রাজনাথ৷
সিএএ বা এনপিআর নিয়ে বিজেপি কোন নীতিতে এগোবে?
সিএএ বা এনপিআর নিয়ে সরাসরি মুখ না খুললেও এনিয়ে কেন্দ্রের অবস্থান ঠিক কী, তাও প্রচ্ছন্নভাবে অথচ স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজনাথ৷ তিনি বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলি (মূলতঃ মুসলিম অধ্যুষিত) থেকে প্রতারিত হয়ে যাঁরা ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য় হয়েছেন, তাঁদের সকলকেই নাগরিকত্ব দেবে ভারতের সরকার৷ অর্থাৎ দলের বাকি নেতাদের মতো খুব উগ্রভাবে হিন্দুত্ব নিয়ে সুর না চড়ালেও দলের লাইন কৌশলে বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজনাথ৷ হালকা গলায় ছুঁয়ে গিয়েছেন বাংলার দুর্গাপুজো ও সরস্বতী পুজোর প্রসঙ্গ ৷ যদিও তাঁর দাবি, কোনও নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় নয়, বাংলায় বিজেপির সরকার হলে, তা হবে সকলের সরকার৷