বিধানসভায় মমতাকে প্রণাম অতীত, এবার দুই বিধায়কে পার্টি অফিসে সংবর্ধনা বিজেপির
দুপুরে দুই বিধায়ক বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (mamata banerjee) ঘরে দেখা করেছিলেন। তারপরেই শোরগোল পড়ে যায় গেরুয়া শিবিরে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন মুকুল রায়ের (mukul roy) মতো শীর্ষ নেতারা। একে
দুপুরে দুই বিধায়ক বিধানসভায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (mamata banerjee) ঘরে দেখা করেছিলেন। তারপরেই শোরগোল পড়ে যায় গেরুয়া শিবিরে। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন মুকুল রায়ের (mukul roy) মতো শীর্ষ নেতারা। একে একে দুই বিধায়ককে নিয়ে হেস্টিংসের পার্টি অফিসে ঢোকে বিজেপি নেতৃত্ব। বৈঠকের পরে দুই বিধায়ককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
মমতাকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম
সোমবার দুপুরে দুই বিধায়ক বনগা উত্তরের বিশ্বজিৎ দাস এবং নোয়াপাড়ায় সুনীল সিংকে দেখা যায় নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে বসে থাকতে। এরপরেই তাঁরা চলে যান মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে। সুনীল সিং দূর থেকে হাত জোড় করে প্রণাম করলেও, বিশ্বজিৎ দাস মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মুখ্যমন্ত্রী ডেকে পাঠান পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও। প্রায় কুড়ি মিনিট কথা হয় তাঁদের মধ্যে। মুখ্যমন্ত্রীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেই প্রশ্ন করেন, কীরে কিছু সিদ্ধান্ত নিলি। আর তো সময় নেই। সেই সময় কোনও উত্তর দিতে দেখা যায়নি বিশ্বজিৎ দাসকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বেরনোর সময় ভি চিহ্ন দেখা সুনীল সিং। এই দুই বিধায়ক কি ফের তৃণমূলে ফিরতে চলেছেন, বাড়ে জল্পনা। যদিও দুজনেই জানিয়েছিলেন নিজেদের এলাকায় বকেয়া কাজ ও বরাদ্দ নিয়েই কথা বলতে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
থমথমে পরিবেশ বিজেপির পার্টি অফিসে
যেসব দুই বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন, সেই সময় হেস্টিংসে বিজেপির পার্টি অফিসে চলছিল নবাগতদের সংবর্ধনা দেওয়ার কাজ। ভাষণ দিচ্ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীর মতো নেতারা। কিন্তু এই খবর টেলিভিশন চ্যানেলগুলিতে সামনে আসতেই মুহুর্তেই থমথমে পরিবেশ তৈরি হয় সেখানে। তবে দমে না গিয়ে পাল্টা আসরে নামে বিজেপি নেতৃত্ব।
দলীয় অফিসে সংর্বধনা
এই খবর পেয়েই হেস্টিংসে বিজেপির পার্টি অফিসে চলে যান দায়িত্ব প্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়। কিছুক্ষণের মধ্যে বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে নিয়ে ঢোকেন মুকুল রায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। এরপর দেখা যায় অর্জুন সিং ঢুকছেন সুনীল সিংকে নিয়ে। তাঁদেরকে নিয়ে আলাদা করে বৈঠক করেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, অর্জুন সিংরা। পরে এই দুই বিধায়ককে মঞ্চে তুলে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়।
২০১৯-এর ভোটের পরেই শিবির বদল
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে বিশ্বজিৎ দাস এবং সুনীল সিং জিতেছিলেন তৃণমূলের টিকিটে। কিন্তু ২০১৯-এর নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের মতো উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূল ধরাশায়ী হওয়ার পরেই এই দুই বিধায়ক শিবির বদল করেন। সুনীল সিং-এর আত্মীয় অর্জুন সিং ২০১৯-এর ভোটের আগেই বিজেপিতে নাম লিখিয়ে ততদিন ব্যারাকপুরের সাংসদ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাঁদেরকে বিজেপিতে খুব একটা সক্রিয় থাকতে দেখা যায়নি। বিধানসভায় বিজেপি বিধায়করা জয় শ্রীরাম স্লোগান দিলেও চুপচাপই থাকতেন সুনীল সিং। অন্যদিকে বিশ্বজিৎ দাসের মূল অভিযোগ ছিল জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে।