সিএএ যেন বিজেপির জন্য 'দিল্লি কা লাড্ডু', বাংলা-অসমের মন জয় করতে কোন পথে হাঁটবেন 'চাণক্য'
কয়েকদিন আগেই ঠাকুরনগরে সভা করতে এসে অমিত শাহ বলেছিলেন যে করোনা টিকাকরণ সম্পূর্ণ হলেই সিএএ লাগু হবে দেশজুড়ে। এদিকে কয়েকদিন আগেই অসমের এক জনসভায় গিয়ে রাহুল গান্ধী পাল্টা দাবি করেন, তাঁরা ক্ষমতায় এলে সিএএ লাগু হতে দেবেন না। যা পরিস্থিতি, তাতে বিজেপির কাছে এখন সিএএ 'দিল্লি কা লাড্ডু' হয়ে দেখা দিয়েছে। অসমে এর ভোটাররা সিএএ চাইছেন না, যা কাজে লাগাতে চাইছে কংগ্রেস। আবার বঙ্গে এই সিএএ হাতিয়ার ব্যবহার করেই মতুয়া ভোট নিজেদের ঝুলিতে ভরতে চাইছে বিজেপি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংসদে পাশ হয়েছিল সিএএ
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংসদে পাশ হয়েছিল সিএএ। তবে এরপরই সিএএ-র বিরোধিতায় রাস্তায় নামে দেশের বহু মানুষ। অসমে সিএএ পাশ হওয়ার আগের থেকেই রাস্তায় নেমেছিলেন বহু মানুষ। মূলত অসম থেকেই বাকি দেশে সিএএ বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। সিএএ বিরোধিতায় রাস্তায় নেমে অসমে প্রাণ হারান ৫ জন। এরই মাঝে দিল্লির শাহিনবাগেও অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন মহিলারা। যা বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছিল অমিত শাহ অ্যান্ড কোম্পানিকে। এরই মাঝে দিল্লির নির্বাচনে ধরাসায়ী হয়েছিল বিজেপি।
সিএএ ইস্যুতে সরগরম রাজনৈতিক ময়দান
দিল্লির নির্বাচনের মতোই কি অসমেও সিএএ ফ্যাক্টক বুমেরাং করে যাবে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। করোনা আবহে সিএএ ফোকাসের বাইরে চলে গেলেও নির্বাচন যত এগিয়েছে, ততই ফের রাজনৈতিক ময়দান সরগরম করতে সিএএ ইস্যু নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন রাজনীতিবিদরা।
সিএএ-র কারিগর হিসেবে দেখা হয় অমিত শাহকে
সিএএ-র কারিগর হিসেবে দেখা হয় অমিত শাহকে। অমিত শাহের আনা এই আইনে মুসলিমদের বাদ দেওয়াকে নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। আবার অসমে ইস্যুটি অন্য। সেখানে রাজ্যবাসীরা চান না যে বাংলাদেশের থেকে আসা কোনও ধর্মের মানুষই থাকুক অসমে। এদিকে বিজেপি এই সিএএ-র মাধ্যমে পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দিয়ে নিজেদের দিকে টানতে চায়।
বিজেপি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুকে হাতিয়ার করেছে
এদিকে অসম ও কেরলে এখন বিজেপি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুকে হাতিয়ার করেই সিএএ-র পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করে চলেছে। তবে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অসমে রাহুল গান্ধী, কেরলে পিনারাই বিজয়নরা বরাবরই সিএএ বিরোধিতায় সরব হয়েছেন। এই ইস্যুকে হাতিয়ার করেই এই তিন রাজ্যে বিজেপি বিরোধী ঝড় তুলতে চাইছেন বিরোধীরা। এতেই বিজেপি আরও সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে মেরুকরণের তাস খেলার।
অসমে বিষয়টি পুরোপুরি আলাদা
তবে অসমে বিষয়টি পুরোপুরি আলাদা। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে একই সাথে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে অসমে৷ তাঁর আগে অসমে নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। যেখানে তাঁর ঘোষণা অসমে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে, তাদের সরকার কোনওভাবেই সেখানে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রয়োগ করতে দেবে না৷ আর রাহুলের এই আক্রমণেই স্পষ্ট, সিএএ বিরোধিতার অ্যাজেন্ডির উপর কংগ্রেস কতটা নির্ভর করে রয়েছে অসমে। কারণ সেখানে এই ইস্যুটি ধর্মীয় নয়, বরং জাতি ভিত্তিক।