কলকাতার হাসপাতালেও অক্সিজেনের জন্যে হাহাকার! দৈনিক চাহিদা ৫৫০ মেট্রিক টনে পৌঁছোতে পারে আশঙ্কা মমতার
গোটা দেশজুড়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদাও। কিন্তু কোথায় অক্সিজেন? কার্যত দেশেই প্রত্যেকদিনই অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে অক্সিজেন তুলে সাহায্যের জন্যে কেন্দ্র চেষ্টা
গোটা দেশজুড়ে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদাও। কিন্তু কোথায় অক্সিজেন? কার্যত দেশেই প্রত্যেকদিনই অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ছে। বিভিন্ন রাজ্য থেকে অক্সিজেন তুলে সাহায্যের জন্যে কেন্দ্র চেষ্টা করলেও তা অনেকাংশেই কম হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় এবার খোদ কলকাতায় অক্সিজেনের সঙ্কট। এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাসপাতালে চরম এই সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কীভাবে তা সামাল দেওয়া যাবে সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। যদিও ইতিমধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে রাজ্য।
মাড়োয়ারি হাসপাতালে চরম অক্সিজেন সঙ্কট
গোটা দেশে অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দিলেও বাংলায় এখনও সেই ছবি দেখা যায়নি। তবে এবার সেই ছবিই দেখা গেল উত্তর কলকাতার মাড়োয়ারি হাসপাতালে। সেখানে চরম অক্সিজেন সঙ্কট বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, বর্তমানে ৮০ জন কোভিড রোগী ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। এঁদের মধ্যে ৭০ জনের নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন লাগছে। এই অবস্থায় হাসপাতালে দৈনিক ১৬০ থেকে ১৮০টি সিলিন্ডার অক্সিজেন প্রয়োজন। কিন্তু সেখানেই দেখা দিয়েছে সমস্যা।
একাধিক কর্মী করোনা আক্রান্ত
হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে যে যারা হাসপাতালে অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতো সেই সংস্থার বেশির ভাগ কর্মীই করোনা আক্রান্ত। ফলে সেই সংস্থার তরফে আর অক্সিজেনের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও আরও দুই সংস্থা হাসপাতালে অক্সিজেন সাপ্লাই করে থাকে। কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে কোনও নিশ্চয়তা তাঁরাও দিতে পারছেন না। দুই ভেন্ডর জানিয়েছে, অনিয়মিতভাবে দিতে পারবে তারা। কতটা দিতে পারবে সেই নিয়েও নিশ্চয়তাও দিতে পারেনি। যদিও এই অবস্থায় হাসপাতাল প্রশাসনের তরফে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন করা হয়। অবিলম্বে এই বিষয়ে সাহায্য করা হবে বলে হাসপাতাল প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তাতে কিছুটা হলেও সমস্যার সমাধান হয়েছে। কার্যত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন হাসপাতাল আধিকারিকরা।
মোদীকে চিঠি মমতার
ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামি সাতদিন রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়বে তাই আগেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ অক্সিজেন বাড়ানোর অনুরোধ করে চিঠি দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই নিয়ে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন মমতা। আগামী ৭-৮ দিন আরও খারাপ হবে রাজ্যের পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিতে লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিতে মমতা লিখেছেন আগামী কয়েকদিন রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়বে। তাই বাংলার জন্য বরাদ্দ অক্সিজেন যেন বাড়ানো হয় তার অনুরোধ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও কি লিখলেন মমতা
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭০ মেট্রিক টন মেডিক্যাল অক্সিজেনের চাহিদা ছিল। আগামী ৭-৮ দিনে অক্সিজেনের দৈনিক চাহিদা ৫৫০ মেট্রিক টনে পৌঁছোতে পারে। কাজেই এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের চাহিদামতো অক্সিজেন সরবরাহ করা হোক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠিতে লিখেছেন, রাজ্যের চাহিদামতো অক্সিজেন সরবরাহ কররা হচ্ছে না। উল্টে গত ১০ দিনে রাজ্যে উত্পাদিত অক্সিজেন অন্য রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এখন রাজ্যকে দিনে ৩০৮ মেট্রিক টন অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে, যেখানে রাজ্যের চাহিদা অনেক বেশি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রয়োজনমতো অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী যেন নির্দেশ দেন, চিঠিতে সেই অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।