পুলিশের গাফিলতিতে সরকার কেন ভুগবে? হাঁসখালি-বগটুই নিয়ে তীব্র ভর্ৎসনা মুখ্যমন্ত্রীর
হাঁসখালিকাণ্ডের ঘটনায় মুখ খুললেন ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে হাঁসখালি ধর্ষণের ঘটনায় মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকারের। ঘটনায় নাম জড়িয়েছেন শাসকদলেরই এক প্রভাবশালী নেতার। এই অবস্থায় আজ বুধবার নবান্নে সমস্ত জেলার প্রশাসনিক আধিকারিক এবং পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

আর সেই বৈঠক থেকেই ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে বগটুইয়ের ঘটনা নিয়েও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জন্মদিনের পার্টিতে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ। এমনকি কাউকে না জানিয়েও দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই। আর এই ঘটনা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পুলিশ প্রশাসনকে।
কেন হাঁসখালির ঘটনা ঘটল, প্রথমেই রানাঘাটের এসপিকে কড়া প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, সঠিক সময়ে খবর না পাওয়ার জন্যেও পুলিশ প্রশাসনকে ভতসনা করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "পুলিশের গাফিলতির জন্য সরকার কেন ভুগবে? সরকার তো কোনও কিছু লুকোতে চায় না। আর এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের হাথরস সহ বেশ কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে হাঁসখালির ঘটনায় আইসির গাফিলতি রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, ঠিক সময়ে অ্যাকশন নেওয়া হয়নি। কিন্তু কেন নেওয়া হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
পাশাপাশি কাগজ ছাড়া মৃতদেহ পুড়িয়ে দেওয়া নিয়েও মুখ খুলেন মমতা। বলেন, কত ডেডবডি যাচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজ রাখা হচ্ছে না। স্বাভাবিক মৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যু কজনের হচ্ছে? কোথায় কার মৃত্যু হচ্ছে, কীভাবে মারা যাচ্ছে, দেখা হয়নি কেন? সে নিয়েও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
পাশাপাশি হাঁসখালির ঘটনায় একাধিক বয়ান সামনে আসছে। সেগুলি ভালো ভাবে খতিয়ে দেখার জন্যে পুলিশকে কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বগটুই-য়ের ঘটনা নিয়েও এদিন মুখ খোলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। সেখানেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বলেন, ''কোথাও কিছু হলে প্রত্যাঘাত তো হবে। যদি ডিএসপি সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যেতেন তাহলে এটা হত না। রামপুরহাটে অনেক ভুল হয়েছে। তার খেসারত সরকারকে দিতে হচ্ছে বলেও দাবি তাঁর।
একই সঙ্গে রামপুরহাটের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই পদক্ষেপকে ঘুষ বলে দাবি বিরোধীদের। সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা বলে ইতিমধ্যে হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে। আর এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ঘুষ কাকে বলে! লুকিয়ে চুরিয়ে এখানে কিছু করা হয়নি। আমি আমার থেকে চাকরি দিয়েছি বলে এদিন বিরোধীদের স্পষ্ট বার্তা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর।
তাঁর মতে, আমরা লুকিয়ে কাউকে কিছু দিইনি। আমাদের দেখে শেখা উচিত বলেও মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।