কলকাতায় করোনা ৫ দিনে ৬ গুণ! বাংলা কি তবে আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটবে
কলকাতায় করোনা ভাইরাসের নয়া সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কলকাতার সঙ্গে শহরতলির জেলাগুলিতেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। ওমিক্রনের হাত ধরে করোনার তৃতীয় ঢেউ এসে পড়ায় ফের শহর ও শহরতলির গ্রাফ বেলাগাম হয়েছে।
কলকাতায় করোনা ভাইরাসের নয়া সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। কলকাতার সঙ্গে শহরতলির জেলাগুলিতেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। ওমিক্রনের হাত ধরে করোনার তৃতীয় ঢেউ এসে পড়ায় ফের শহর ও শহরতলির গ্রাফ বেলাগাম হয়েছে। এই অবস্থায় বাংলা ফের ৩ জানুয়ারি থেকে আংশিক লকডাউনে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার কলকাতায় করোনার নতুন সংক্রমণের সংখ্যা ২৩৯৮। বাংলার মোট সংক্রমণের প্রায় অর্ধেক। গত পাঁচ দিনে শুধুমাত্র বাংলার রাজধানী শহরেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছ'গুণ বেড়েছে। বাংলায় এদিন দৈনিক করোনা সংক্রমণ ৪৫১২। পাঁচ হাজার ছুঁই ছুঁই। এর মধ্যে কলকাতা ও শহরতলির চার জেলা এবং পশ্চিম বর্ধমান মিলিয়ে সংক্রমণ চার হাজার প্রায়। বাকি ৫০০ সংক্রমণ ১৭ জেলায়।
২৮ ডিসেম্বর কলকাতায় ৩৮২ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন করোনায়। সেদিন রাজ্যে সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ৭৫২। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, এদিন কলকাতার সংক্রমণ দাঁড়িয়েছে ২৩৯৮। আর বাংলার করোনা সংক্রমণ দাঁড়িয়েছে ৪৫১২। কলকাতার সংক্রমণ ৬ গুণেরও বেশি বেড়েছে ৫ দিনে। বাংলার সংক্রমণও বেড়েছে প্রায় ৬ গুণ।
এই পরিস্থিতিতে সতর্কতা জারি করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেও সাবধান করা হয়েছে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই কয়েকটি বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বাতিল করা হয়েছে ৩ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি অনুষ্ঠান। ৩ জানুয়ারি থেকে সমস্ত 'দুয়ারে সরকার'-এর শিবিরও বাতিল করা হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্ট এবং জেলা আদালতগুলি কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ৩ জানুয়ারি থেকে ভার্চুয়াল মোডে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে, রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম বলেছেন, হাসপাতাল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা, জেলা প্রশাসন এবং পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সতর্কতা মেনে সংক্রমণ রুখতে পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে।
রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়লে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পর্যালোচনা করতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্যোড়পাধ্যায়। সেইমতো পর্যালোচনা করে ব্যবস্থা নিতে পারে রাজ্য প্রশাসন। কলকাতায় কন্টেনমেন্ট পয়েন্ট করা শুরু হয়েছে। এরপর স্কুল, কলেজ থেকে পরিবহণের উপর কোপ পড়তে পারে। করোনা বাড়বৃদ্ধি দেখে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
সম্প্রতি গঙ্গাসাগরে প্রশাসনিক বৈঠকের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্য সচিব এইচ কে দ্বিবেদী ও স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমকে ওয়ার্ড-টু-ওয়ার্ড সমীক্ষা পরিচালনা করে মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জোন আরোপ করার বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেন। সেদিনই স্কুল-কলেজ ও রাজ্য সরকারি কর্মীদের নিয়ে বিশেষ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
করোনা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এদিন দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প, মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি অনুষ্ঠান, কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বৈঠক স্থগিত করে রাজ্য সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে বর্ষবরণের রাত কেটে যাওয়ার পরই কড়া বিধি-নিষেধ আরোপ হতে চলেছে। সেক্ষেত্রে আংশিক লকডাউনের চেহারা নিতে পারে বাংলা।