মমতার দলেরই সাংসদ সরব 'সিএএ' থেকে 'মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব' নিয়ে! ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামল তৃণমূল
বাংলার ভোটের আগে ক্রমাগত পারদ চড়াচ্ছে মতুয়া ইস্যু। বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এই নিয়ে বহু আগে থেকেই মন্তব্য করতে শুরু করায় গেরুয়া শিবির অস্বস্তিতে পড়ে। এরপর শান্তনুকে নিয়ে বৈঠকে বসেন বঙ্গবিজেপি প্রধান দিলীপ ঘোষ। এদিকে, এমন এক পরিস্থিতিতে মমতাবালা ঠাকুরের মন্তব্য নিয়ে খানিকটা অস্বস্তিতে তৃণমূল।
মমতাবালা ঠাকুরের বক্তব্য
উত্তর২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে ঠাকুরবাড়িতে মতুয়াদের একটি সভা আয়োজিত হয়। সেখানেই বিজেপির বিরুদ্ধে পারদ চড়িয়েও কার্যত সিএএর মাধ্যমে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে সরব হন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তিনি বলেন, 'বিজেপি সরকার ও বিজেপি নেতারা বিভিন্ন সময়ে বলেছেন সিএএর মাধ্যমে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তাঁরা মতুয়াদের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি করেছেন। কোথাও লেখা নেই মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।'
মতুয়াদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক!
মমতাবালা ওই সভায় সাফ জানান, যদি কেন্দ্রীয় সরকার মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব না দেয়, তাহলে তিনি বৃহত্তর আন্দোলনের রাস্তায় হাঁটবেন। প্রয়োজনে তিনি দিল্লির বুকে গিয়ে আন্দোলনের পথ বেছে নেবে। মমতাবালা এদিন বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার যদি অবিলম্বে মতুয়াদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব না দেয় , তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব। আমরা প্রথমে বিধানসভাভিত্তিক আন্দোলন করব। তারমধ্যে যদি নাগরিকত্ব না দেয়, তাহলে সারা ভারতবর্ষের লোক নিয়ে গিয়ে দিল্লিতে আন্দোলন করব। সংসদ ঘেরাও করব।'
মমতা, সিএএ ও মমতাবালা
প্রসঙ্গত, গত ২০১৯ ডিসেম্বর মাসে সিএএ নিয়ে যখন গোটা ভারতে আগুন জ্বলেছে, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা তৃণমূলকে সঙ্গে নিয়ে মোদী সরকারের সিএএ আইনের বিরোধিতায় নামেন। 'কা কা ছিঃ ছিঃ' স্লোগান তুলে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় তিনি বিরোধিতার পারদ চড়ান। এর ঠিক ১ বছর পর সেই বাংলার মাটিতেই মতুয়াদের নাগরিকত্ব দাবি করে খোদ মমতার পার্টির সদস্য মমতাবালা ঠাকুর সরব হয়েছেন। তিনি সরব হয়েছেন সিএএর প্রসঙ্গেও। এমন এক পরিস্থিতিতে অস্বস্তিতে তৃণমূল।
তৃণমূলের তরফে সৌগত রায়ের বক্তব্য
মমতাবালা ঠাকুরের বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে সৌগত রায় বলেন ,'মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও প্রশ্নই নেই। ওঁরা নাগরিক ছিলেন, আছেন, থাকবেন। তাঁরা ভোট দিচ্ছেন, রেশন কার্ড আছে। সুতরাং এটার কোনও দরকার নেই। আমরা দেখেছি অসমে এনআরসি করতে গিয়ে ১৯ লাখ বাঙালি হিন্দুর নাম বাদ গিয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে।' এই বক্তব্যরে পাশাপাশি, মমতাবালা ঠাকুরের মন্তব্যকে ব্যক্তিগত মন্তব্য বলে দাবি করেন সৌগত রায়।