বাংলার ভোটে তৃণমূলের হাত শক্ত করতে ওয়েইসির মিমের বড় প্রস্তাব! মমতার সামনে ভোটের আগে নয়া অঙ্ক
বিহারের ভোট ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই দেখা যায়, বহু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় আরজেডি-কংগ্রেসকে ছাপিয়ে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে ভর করে বাজিমাত করেছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির পার্টি মিম। এরপর কংগ্রেস সোজাসুজি ওয়েইসির দলকে 'ভোট কাটওয়া' বলে কটাক্ষ করলেও, পাল্টা অঙ্কে ওয়েইসি প্রমাণ করে দেন, কেন তাঁদের 'ভোট কাটওয়া' বলা যাবে না! এবার ওয়েইসির নজর বাংলায়। এদিকে,বাংলাতেও তাদের গেমপ্ল্যান একই রয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনার মধ্যেই ওয়েইসি দিলেন বড় বার্তা।

তৃণমূলের দিকে সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছে ওয়েইসি!
যে ছকে খেলা হবে বলে মনে করা হচ্ছিল, তাকে খানিকটা ওলট পালট করে দিয়ে এদিন তৃণমূলের দরবারেই সাহায্যের প্রস্তাব রাখেন হায়দরাবাদের মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম)। পার্টি প্রধান ওয়েইসি নিজে জানিয়েছেন, বিজেপিকে বাংলায় রুখতে তাঁরা তৃণমূলকে সাহায্য করতে প্রস্তুত।সূত্রের দাবি, এবিষয়ে মমতার দরবারে এসেছে একটি প্রস্তাবও।

বাংলা নিয়ে ওয়েইসি কী চাইছেন?
প্রসঙ্গত, বাংলায় ভোটের আগে মমতার সঙ্গে সমঝোতা চাইছেন আসদউদ্দিন ওয়েইসি। তিনি বিহারে প্রবল সাফল্যের পরই জানিয়ে দিয়েছেন যে বাংলার নির্বাচনেও তাঁর পার্টি লড়বে। ইতিমধ্য়েই ৪ জন প্রার্থীর নামও কার্যত স্থির করে ফেলেছে মিম, বলে সূত্রের দাবি।

সঠিক সময় বুঝে ওয়েইসির বার্তার নেপথ্যে কোন ইঙ্গিত?
গতকালই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, রাজ্যে 'বহিরাগত'রা এসে ভয় দেখাবে,হেনস্থা করবে। মূলত, অমিত শাহের বাংলা সফর নিয়ে ছিল মমতার কটাক্ষ । তবে কটাক্ষের ইঙ্গিত যে ওয়েইসির মতো, নেতাদের দিকেও রয়েছে , তারও দাবি করছে ওয়াকিবহাল মহল। আর ঠিক তার পরের দিনই মিমের তরফে এলো সমজোতার বার্তা। এদিকে, এর আগে মমতা একের পর এক সভায় দাবি করেন যে, 'টাকার থলি' নিয়ে রাজ্যে কয়েকজন আসছেন। বহু জায়গায় এক্ষেত্রে মিমই ছিল মমতার টার্গেট। মিম যে বাংলায় মুসলিম ভোট কাটতে আসবে সে বিষয়েও মমতা আগেই সরব হয়েছেন। এমন এক প্রেক্ষাপটে ২০২১ ভোটের আগে ২০২০ সালের নভেম্বরেই মমতাকে আগেভাগে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে 'আপাত' খেলার অভিমুখ ঘোরানোর চেষ্টায় মিম নেতা। এমনই দাবি বিশেষজ্ঞমহলের।

তৃণমূলের কণ্ঠে আগেই মিমি বিরোধিতা
এর আগে, তৃণমূলের তরফে সৌগত রায় বলেন, এআইএমআইএমকে বিজেপি তৈরি করছে, যাতে তৃণমূলের ভোট শেয়ার কাটা যায়। এদিকে, কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর দাবি, মিমি মূলত বিজেপির বি টিম। যারা বাংলার ভোটকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করে সুবিধা লুঠে নিতে চায়।

মিম রুখতে সচেষ্ট কংগ্রেস- বামেরা!
এদিকে,মিমকে বাংলায় রুখতে ইতিমধ্যেই বাম ও কংগ্রেস শিবির স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করতে শুরু করেছে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় সংখ্যালধু দিবসে দুটি পার্টি যৌথ কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে নামবে বলে খবর। এদিকে, বিজেপির তরফে দিলীপ ঘোষ সাফ জানিয়েছেন যে, মুসলিমরা বিজেপিকে ভোট দেননা। ফলে, আসন্ন নির্বাচনে বাংলা থেকে যদি মুসলিমরা মিমকে বেছে নেন ,তাহলে বুঝতে হবে, তৃণমূল ও সিপিএম তাঁদের আস্থা ধরে রাখতে পারেনি।

সীমাঞ্চল ও মিমের আত্মবিশ্বাস
প্রসঙ্গত,বিহারের সীমাঞ্চল এলাকায় কংগ্রেস ও আরজেডির পুরনো ভোটব্যাঙ্কের শক্ত জমি ছিল। বহু বছর ধরে এলাকায় ভোট পেয়ে অসেছে কংগ্রেস। অন্যদিকে , এলাকার মুসলিম ও যাদব ভোট পেয়ে এসেছেছে আরজেডি। তবে খেলা ঘুরে যায় ২০২০ সালের বিহার নির্বাচনে। সেখানে ১৯ আসনে প্রার্থী দিয়ে ৫ টি আসন জিতে নেয় মিম। এরপর থেকে সেই আত্মবিশ্বাস সঙ্গে নিয়েই বাংলায় মূলত , দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদের দিকে নজর দিচ্ছে মিম।
এখনই দল ছাড়ছেন না আভাস দিলেও, তৃণমূল নেতৃত্বকে ঘুরিয়ে বার্তা শুভেন্দু অধিকারীর