মুখ খুলেছেন শিশির, একুশের ভোটে অধিকারীদের ডেরায় কি ফুটবে পদ্ম, হালখাতার হিসেব কষছে কালীঘাট
মুখ খুলেছেন শিশির, একুশের ভোটে অধিকারীদের ডেরায় কি ফুটবে পদ্ম, হালখাতার হিসেব কষছে কালীঘাট
অধিকারীদের ঘরে পদ্ম ফুটতে শুরু করে দিয়েছে। শুভেন্দু, সৌমেন্দু বিজেিপতে যোগ দিয়ে ফেলেছেন। ভোটের অঙ্ক এবার কী হবে কাঁথি লোকসভার সাত বিধানসভা কেন্দ্রে। কালীঘাট এই নিয়ে হিসেব কষতে শুরু করে দিয়েছে।কারণ লোকসভা ভোটে শিশির জয় ছিনিয়ে আনলেও কোনও বিধানসভা কেন্দ্রেই ভোটের ব্যবধান তেমন বেশি ছিল না বিজেপির সঙ্গে। সাতটি বিধানসভাকেন্দ্রে লোকসভা ভোটের অঙ্ক কষলে খুব একটা সুবিধা জনক অবস্থায় যে তৃণমূল কংগ্রেস নেই সেটা আঁচ করাই যায়।
নজরে কাঁথি
কাঁথি লোকসভা কেন্দ্র। তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। মোট প্রাপ্ত ভোট ৭,১১,৮৭২। এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন ডাক্তার দেবাশিস সামন্ত। তিনি পেয়েছে ৬,০০,২০৪ ভোট। শিশির অধিকারীর থেকে এক লক্ষ ভোটে পিছিেয় ছিলেন তিনি। কিন্তু সাত বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে কোথায় কত ভোট পেয়েছিলেন দেবাশিস যে শিশির অধিকারীর কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছিলেন তিনি। সাত বিধানসভার ভোটের অঙ্ক দেখলে বোঝা যাবে দেবাশিসকে কিস্তি মাৎ দিতে শিশির অধিকারীকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে ভগবানপুর। কারণ ভগবানপুরে বিজেপিপ্রার্থীর সঙ্গে শিশির অধিকারীর ভোটের ব্যবধান সবচেয়ে বেশি। ভগবানপুরে ১, ১৭, ১৯৭টি ভোট পেয়েছেন শিশির অধিকারী অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস সামন্ত পেয়েছেন ৭৯,৮০৬টি ভোট।
অধিকারীদের দাপটকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছে কোন কেন্দ্র
শুধু ভগবানপুর দেখলেই তো হবে না আরও ৬ বিধানসভা কেন্দ্রে শিশির অধিকারী কত পেয়েছে সেটাও হিসেব কষতে হবে। চণ্ডীপুর, পটাশপুর,খেজুরি, দক্ষিণ কাঁথি মোটের উপর বাকি ৬ কেন্দ্রের বেশিরভাগ জায়গাতেই বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে তৃণমূলের শিশির অধিকারীর ভোটের ব্যবধান হাজার চার পাঁচ। কোথাও আবার ৯ কী ১০ হাজারের কাছাকাছি। কাজেই অধিকারীর পরিবারকে তেমন সিঁদুরে মেঘ দেখাতে পারেনি গেরুয়া শিবির।
হাওয়া বদল পূর্ব মেদিনীপুরে
একুশের ভোটে বড় অঘটন ঘটিয়ে ফেলেছে পূর্ব মেদিনীপুর। যে অধিকারীদের দাপটে কাঁথি, খেজুরি সহ গোটা জেলায় বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত। সেই অধিকারী বাড়িতেই পদ্মফুেটছে। তৃণমূল কংগ্রেসের দাপটে নেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীও বিজেপিতে। এবার অপেক্ষা কেবল দিব্যেন্দু আর শিশির অধিকারীর। যদিও তাঁরা ২ জনই এখনও দলবদলের কোনওকথা বলেননি। তবে এই নিয়ে জল্পনা হয়েছে প্রচুর। কাঁথি শহরে গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে মিথিল করে শক্তি প্রদর্শন করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। খেজুরি, পটাশপুর, চণ্ডীপুর চষে বেরাচ্ছেন তিনি। তবে রামনগরে তেমন কায়দা করতে পারেননি। অধিকারীদের প্রবল প্রতিপক্ষ অখিল গিরি রামনগরের বিধায়ক। শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পর অখিল গিরি এখন তৃণমূলের পরম আস্থা ভাজন হয়ে উঠেছেন।
মুখ খুলেছেন শিশিরট
প্রবীণ সাংসদ।তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা শিশির অধিকারী। দলের প্রতি একনিষ্ঠতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন হবে না। কিন্তু ছেলে বিজেপিতে যাওয়ার পর অধিকারী পরিবারের উপর যে রোষ নেমে এসেছে শাসক দলের এই নিয়ে মুখখুলেছেন তিনি। ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁর জয় কামনা করেছেনষ অপর্থাৎ পরোক্ষে দলনেত্রীর পরাজন হবে বলেই বুঝিয়ে দিয়েছেন।শিশির অধিকারী সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন যেভাবে শুভেন্দুর উপর আক্রমণ হানা হচ্ছে তা প্রতিহত করতে হবে। বিজেপি মাঠে আছে, এগিয়ে আছে। শিশিরের এই মন্তব্যের পরেই জল্পনা মাথা চারা গিয়েছিল। তাহলে কি রাম নবমীর আগেই অধিকারী পরিবারের পদ্ম ফুটতে চলেছে। কারণ শুভেন্দু নিজেই বলেছিলেন রামনবমীর আগে পদ্ম ফুটবে অধিকারী পরিবারে।
তৃণমূলের ঢাল অখিল গিরি
পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকারী গড়ের মোকাবিলায় এবার তৃণমূলের ঢাল রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। তাঁকে সামনে রেখেই রণকৌশল সাজাচ্ছে কালীঘাট। কাঁথি, খেজুর, পটাশপুর,চণ্ডীপুরের ভোটের অঙ্ক কোন দিকে এগোবে তা অখিল গিরিকে সামনে রেখেই হিসেব কষছে টিম পিকে। অধিকারীদের দাপট কমায় এক শ্রেণির তৃণমূল কর্মী সক্রিয় হয়ে উঠেছেন মেদিনীপুরে। আর সেটাকেই হাতিয়ার করছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। শেষ পরীক্ষা যদিও হবে সেই ভোটবাক্সেই।
একুশের নির্বাচনে মুখোমুখি হওয়ার আগে জয়নগরের সাত কেন্দ্রে কে কোথায় এগিয়ে