মমতা গোলকিপার হলে আমি স্ট্রাইকার, বিজেপিতে যোগদানের আগে বললেন দীপেন্দু
আজ বিজেপির হেস্টিংস পার্টি অফিসে তৃণমূল ছেড়ে অনেকেই বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন। এর মধ্যেই জল্পনা শুরু হয় দীপেন্দু বিশ্বাসকে নিয়ে। বসিরহাট দক্ষিণে এবার দীপেন্দুকে প্রার্থী করেনি দল। তা নিয়ে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ বসিরহাটের ঘরের ছেলে মিঠু। ফেসবুকে একের পর ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করছিলেন। গতকাল ফেসবুকেও তিনি লিখেছেন, আত্মবিশ্বাসী। দীপেন্দু আজ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মুকুল রায়ের বাসভবনে যান। তাতেই তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। এরপর তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে হেস্টিংসের পার্টি অফিসে যান।
বসিরহাটে বিস্ময়
বসিরহাটে দলের দায়িত্বে থেকে সংগঠন মজবুত করার পাশাপাশি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। নিজের জায়গা বলে বিধানসভা এলাকায় অনেক সময় দিচ্ছিলেন। এমনকী নুসরত জাহানকে লোকসভা ভোটে জেতানোর পিছনেও বড় ভূমিকা ছিল তিন প্রধানে খেলা এই ফুটবলারের। এবার প্রার্থীতালিকায় তাঁর নাম বাদ পড়ায় অনেকেই অবাক হন।
দীপেন্দুর হতাশা
পারফরম্যান্স দাম পেল না বলে বিশ্বাস করেন দীপেন্দু বিশ্বাসও। দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে বসিরহাটে যাওয়ার সময় মাঝপথে খবর পান তাঁকে এবার দল বসিরহাট দক্ষিণে প্রার্থী করেনি। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হন। দীপেন্দু বলেন, আমাকে আগে থেকে বলতেই পারত যে প্রার্থী করা হবে না। পারফর্ম করেও এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে খারাপ লাগছে। আমার বাবা খুব কষ্ট পেয়েছেন।
ফেসবুকে ইঙ্গিত
প্রার্থীতালিকায় নাম না দেখার পরদিন থেকেই ফেসবুকে একের পর ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করতে থাকেন দীপেন্দু। তিনি পাজল গেমের সামনে বসে থাকার একটা ছবি পোস্ট করে লেখেন কী করব ভাবছি। তিনি আরও লেখেন, দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছরের রাজনৈতিক লড়াইয়ে একবার বাদে প্রতিবার ভেটের লড়াইয়ে দলকে জিতিয়েছি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি সর্বক্ষণ। আমার ব্যবহারে কেউ দুঃখ পেলে ক্ষমা করবেন। এরপর কখনও তিনি ফেসবুকে সাদা-কালো জার্সি গায়ে নিজের খেলার ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন গোলের পর। আবার কখনও লিখেছেন আত্মবিশ্বাসী।
মুকুলের বাড়িতে
আজ সকালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রয়াত মায়ের সঙ্গে নিজের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে লিখেছেন, সকলকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাই। এরপরই তিনি রওনা দেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের বাসভবনে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসেই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন দীপেন্দু। বিধানসভা উপনির্বাচনে শমীক ভট্টাচার্যের কাছে অল্প ব্যবধানে হারলেও ২০১৬ সালে সেই শমীক ভট্টাচার্যকে হারিয়েই বিধায়ক হন দীপেন্দু। শমীক এখন বিজেপির মুখপাত্র। দীপেন্দু এখন সেই দলেই নাম লেখাতে চলেছেন।
মমতা গোলকিপার আমি স্ট্রাইকার
দীপেন্দু বিশ্বাস হেস্টিংসে বিজেপি পার্টি অফিসে ঢোকার আগে বলেন, আমি খেলার জগতের মানুষ। পারফরম্যান্স বিচার্য হয় সেখানে। আমি প্রথমে উপনির্বাচনে হেরে যাওয়ার ২ বছরের মধ্যে বসিরহাট দক্ষিণে সকলকে নিয়ে কাজ করে আসনটি তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। সেখানে কাজ করি। কিন্তু দেখলাম এবার পারফরম্যান্স দেখানো সত্ত্বেও আমার নাম তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় নেই। এটা খারাপ লেগেছে। এরপরই সিদ্ধান্ত নিই। আজ তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ফোন করে বলেছিলেন বিজেপিতে না যেতে। কিন্তু ততক্ষণে আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। এক প্রশ্নের উত্তরে দীপেন্দু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোলকিপার হলে আমিও স্ট্রাইকার। তবে খেলা হবে এই স্লোগান নিয়ে কিছু বলা আমার মতো একজন খেলোয়াড়ের পক্ষে বলা ঠিক হবে না।