মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডেকে সরালেন মমতা, নিলেন আরও একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত
তৃতীয় বারের জন্যে ফের বাংলার মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘড়ির কাঁটা মেনে ঠিক ১০ টা ৪৫ মিনিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল ধনখড়। করোনার কারনে খুব ছোট করেই অনুষ্ঠান করা হয় সেখানে। আমন্ত্রিতদের তালিকাও
তৃতীয় বারের জন্যে ফের বাংলার মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘড়ির কাঁটা মেনে ঠিক ১০ টা ৪৫ মিনিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল ধনখড়।
করোনার কারনে খুব ছোট করেই অনুষ্ঠান করা হয় সেখানে। আমন্ত্রিতদের তালিকাও ছিল খুবই কম। মাত্র এক ঘন্টার কিছু বেশি সময় রাজভবনে কাটিয়েই নবান্নে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজভবন থেকে বের হওয়ার সময়ে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পরেই প্রথম কাজ হবে কোভিড নিয়ে আলোচনা এবং দ্বিতীয় রাজ্যের আনশৃঙ্খলা নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া। আর তাই নবান্নে ফিরেই জরুরি বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠক শেষে একদিকে করোনা নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশকা জানান অপর দিকে পুলিশ প্রশাসনে রদবদলের কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে ভোট মিটতেই পুলিশ আধিকারিকদের পুরানো পদ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন মমতা।
সেই মতো ফের রাজ্যের ডিজির দায়িত্বে এলেন বীরেন্দ্র। নবান্নে বৈঠক শেষে এমনটাই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই এডিজি আইনশৃঙ্খলা পদে জাভেদ শামিমকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ।
তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে একাধিক জেলাশাসক পদে রদবদল করা হয়েছে এদিন। যেমন ভোটের আগে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলার ঘটনার পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তৎকালীন জেলাশাসক বিভু গয়ালকে সরিয়ে দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
জেলাশাসক হিসেবে নিয়ে আনা হয় স্মিতা পাণ্ডেকে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা শপথ নেওয়ার পরেই সেই স্মিতাকে সরিয়ে দিল রাজ্য সরকার। তাঁর জায়গায় নতুন জেলাশাসক হিসেবে আনা হয়েছে পূর্ণেন্দু মাজিকে। ইতিমধ্যে নবান্নের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে এই সংক্রান্ত।
নির্দেশিকা জারি করে বলা হয় স্মিতাকে সরিয়ে পূর্ণেন্দুকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক হিসেবে নিয়ে আসা হয়েছে। পূর্ণেন্দু এর আগে ইন্ডাস্ট্রিয়াল কর্পোরেশনের সচিব ছিলেন। অন্য দিকে স্মিতাকে ওয়েবল-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
বদলি করা হয়েছে পুরুলিয়ার জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কেও। তাঁকে পাঠানো হয়েছে কম্পালসরি ওয়েটিংয়ে। তাঁর জায়গায় নতুন জেলাশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে রাহুল মজুমদারকে। অন্যদিকে পুলিশ প্রশাসনেও হয়েছে একাধিক বদলের খবর।
ডিজি পদে বীরেন্দ্র ও জাভেদ শামিমকে ফেরানোর পরেও একাধিক রদবদলের খবর পাওয় গিয়েছে। জানা গিয়েছে, কমিশনের নিয়োগ করা ডিজিকে দমকল বিভাগের ডিজি ও এডিজি জগমোহনকে সিভিল ডিফেন্সে বদলি করেছে নবান্ন।
অন্যদিকে, রাজ্যের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা নিয়েও কড়া বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দুষেছেন নির্বাচন কমিশনকে। পাশাপাশি জানিয়ে দিয়েছেন যে, আর কোনওরকম অশান্তি মেনে নেওয়া হবে না। এজন্য জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের আরও কড়া হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "প্রত্যেক এসপি এবং জেলাশাসককে পরিষ্কার বলে দেওয়া হয়েছে, কোনও রকম অশান্তির ঘটনা মেনে নেওয়া হবে না। যে জায়গাগুলিতে বিজেপি জিতেছে, সেই জায়গাগুলিতেই অত্যাচার করা হচ্ছে। গত তিনমাস ধরে এইধরনের ঘটনা ঘটে আসছিল। আর এতদিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই সময় সমস্ত কিছু নির্বাচন কমিশনের হাতে ছিল।
তবে কিছু কিছু মিথ্যেও খবরও ছড়ানো হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। আগের ঘটনা এখনকার বলে চালিয়ে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। এগুলিতে একদম বিশ্বাস করবেন না। তবে কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনাও ঘটেছে এই সময়।
প্রত্যেকটি দলের কাছে আবেদন করব এবার এগুলো বন্ধ করুন। নির্বাচনেও অনেক অত্যাচার করেছেন আপনারা। এবার এই অত্যাচার করা বন্ধ করুন। আইন কিন্তু আইনের পথে চলবে। বাংলায় হিংসার কোনও জায়গা নেই। বাংলা সংহতি, সম্প্রীতি, সংস্কৃতির জায়গা।"