সাগরে ধেয়ে আসা টাইফুন নোরু কি পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং-এ, পুজোর মুখে পূর্বাভাস
সাগরে ধেয়ে আসা টাইফুন নোরু কি পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং-এ, পুজোর মুখে পূর্বাভাস
বাংলার পুজো কি ভাসবে সাগর বেয়ে ধেয়ে আসা টাইফুন নোরুর প্রভাবে। চিন সাগরে ফুঁসে ওঠা টাইফুন নোরুর কারণে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণাবর্ত। তারই জেরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়। সেই ঘূর্ণাসুরের এবার বাংলার পুজোয় ভোগাতে পারে দর্শনার্থীদের। উল্লেখ্য, আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে, সপ্তমী থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি হবে। দুর্যোগ বাড়বে নবমী থেকে।
২৫৫ কিলোমিটার বেগে বয়ে আসছে নোরু
বাংলা থেকে প্রায় ৫ হাজারে কিলোমিটার দূরে সাগরের বুকে বাসা বেঁধেছিল ঘূর্ণাবর্ত। পিলিপিন্স সাগরে সেই ঘূর্ণাবর্ত টাইফুন নোরুতে পরিণত হয়ে ধেয়ে আসছে। ইতিমধ্যে ফিলিপিন্স-সহ একাধিক এলাকায় প্রবল বেগে বয়ে গিয়েছে ঝড়। ২৫৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় ফিলিপিন্সের স্থলভাগে আঘাত করেছিল। কিন্তু তারপরও শক্তি হারায়নি নোরু।
চিন সাগর দিয়ে কি বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করবে নোরু?
দ্বীপপুঞ্জে ল্যান্ডফলের পরও সাগরে শক্তি বাড়িয়ে তা সুপার টাইফুনে পরিণত হয়েছে। চিন সাগর দিয়ে তা ভিয়েতনাম উপকূলের দিকে ধেয়ে চলেছে। তার ফলেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে চিন সাগর দিয়ে কি বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করবে নোরু। তার জেরে উত্তাল হবে বঙ্গোপসাগর এবং তৈরি হবে নতুন কোনও ঘূর্ণাবর্ত। তা আবার বাংলা বা ভারতের অন্য কোনও উপকূলে হানা দেবে?
ভিয়েতনাম উপকূলে আছড়ে পড়ার পর স্থলভাগে নোরু
আবহবিদরা প্রথমে সেই আশঙ্কা করলেও বর্তমানে অনেকটাই স্বস্তিতে। কারণ ফিলিপিন্সে টাইফুন নোরু আছড়ে পড়ার পর ফের সাগর পেয়েছিল, কিন্তু এখন ভিয়েতনাম উপকূলে আছড়ে পড়ার পর স্থলভাগ দিয়ে বয়ে যাবে টাইফুন। ফলে তা শক্তি হারিয়ে ফেলবে বঙ্গোপসাগরে আসার আগে। ভিয়েতনামের পর লাওস, থাইল্যান্ড, মায়ানমার। তারপর মায়ানমার সাগর। ফলে টাইফুনের পুনরায় ফুঁসে ওঠার সম্ভাবনা কম।
আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে চিন সাগরের টাইফুন নোরুকে নিয়ে
এরই মধ্যে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য ও উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে ১ অক্টোবর। মায়ানমার উপকূলের কাছাকাছি ওই ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। এখন টাইফুন নোরু সেই ঘূর্ণাবর্তে আরও শক্তি সঞ্চার করে কি না, সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তখন শক্তি বাড়ানো ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপ, এমনকী ঘূর্ণিঝড়েও রূপান্তরিত হতে পারে।
টাইফুন নোরুর ইন্ধন দেওয়ার মতো শক্তি থাকবে না
তবে প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করার পর টাইফুন নোরুর ইন্ধন দেওয়ার মতো শক্তি থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা সেক্ষেত্রে থাকছে না। এবার বর্ষায় বৃষ্টির ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। তাই মৌসুমী বায়ু বিদায় নেওয়া আগে সুদে-আসলে বর্ষার ঘাটতি মিটিয়ে দিয়ে যেতে পারে।
বিদায় নেয়নি বর্ষা, পুজোয় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাই সিংহভাগ
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, সেপ্টেম্বরে সবসময় বৃষ্টির দাপট থাকে। স্বাভাবিকভাবেই সেপ্টেম্বরে ৩০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়। ১৯৭৮ সালে বন্যার জন্য অতিবৃষ্টিকেই দায়ী করেছিল। একদিনেই গোটা মাসের বৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল। গত বছরও সেপ্টেম্বরে বিপু বৃষ্টি হয়। স্বাভাবিকের দ্বিগুণ বৃষ্টি হয়। এবার এখনও মৌসুমি বায়ু রয়ে গিয়েছে। বিদায় নেয়নি বর্ষা। তাই পুজোয় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনাই সিংহভাগ।
ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত করার শক্তি নেই, বড়জোড় নিম্নচাপ
আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, টাইফুন নোরু থেকে ঘূর্ণিঝড় সিতরাং তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। কারণ টাইফ নোরুর যেটুকু প্রভাব মায়ানমার সাগরে আসছে, তার ক্ষমতা খুবই ক্ষীণ। সেখান থেকে ঘূর্ণাবর্তকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত করার শক্তি মিলবে না। বড়জোড় নিম্নচাপ হতে পারে। এবার চিন সাগরের ঝড় বঙ্গোপসাগরকে প্রভাবিত করতে ব্যর্থ হবে।
দুপুরে আট জেলায় চলল ভারী বৃষ্টি! কী হবে পুজোর সময়, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়ার পূর্বাভাস একনজরে