(ছবি) বিধানসভা নির্বাচন : ভবানীপুরের লড়াইটা স্পষ্টতই 'দিদি' বনাম 'বৌদি'র
কলকাতা, ২৭ এপ্রিল : আগামী শনিবার পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণ। বলাই বাহুল্য এই দফার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য় আসন ভবানীপুর, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূর্গ। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য আজকাল তৃণমূল খবরে এলেও'দিদি' নিজের আসন ধরে রাখতে পারবেন এ বিষয়ে দলের অন্দরে কোনও মতবিরোধ নেই।
ভবানীপুরের মানুষের উপর তাঁর সম্পূর্ণ আস্থা আছে বলে, মমতাও খোলা আওয়াজে জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু 'বৌদি' কি মমতার বাড়া ভাতে ছাই দিতে পারবেন? তা পুরোপুরি সময়ের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের নেতানেত্রীরা।[দুর্নীতি, কেলেঙ্কারি, পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সত্ত্বেও ভোট সমীক্ষায় কেন তৃণমূলের জয়জয়কার?]
বৌদি বলেই দলের কর্মীদের কাছে পরিচিত কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাসমুন্সি, যিনি ভবানীপুরের হাই প্রোফাইল কেন্দ্র থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। বিজেপির তরফ থেকে এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রপৌত্র চন্দ্র বসু হাইপ্রোফাইল বৃত্তটিকে শুধু বড় করেছেন।
মমতাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে কংগ্রেস-সিপিএম নিজেদের রাজনৈতিক আদর্শগত দুরত্ব ভুলে 'হাতে কাস্তে হাতুড়ি" ধরেছে। কং-বাম একযোগে দিদির বিরুদ্ধে বৌদিকে জেতানোর জন্য প্রাণপাত করছে। কখনও সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত মন্দাক্রান্তা সেন, কখনও সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে দীপা দাসমুন্সির জনসভায় নিয়ে এসে সমাজের বিভিন্ন স্তরের পরিচিত মুখকে সামনে আনা হচ্ছে। [অভিনেত্রী থেকে বিজেপি নেত্রী হলেই বুঝি লাল টিপ, হাল্কা শাড়ি আর কোমর বেঁধে আঙুল উঁচিয়ে 'প্রতিবাদ'?]
কিন্তু ভবানীপুর মমতার দূর্গ। এই দুর্গের অলিখিত সম্রাজ্ঞী মমতা। আর এই বাস্তবটা অস্বস্তির কাঁটা হয়ে বিঁধছে বাম-কংকে। তাই হাজারো চেষ্টা সত্ত্বেও আত্মবিশ্বাসে কোথাও ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছে দল।
জোটের পক্ষে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছ্বাসে তৃণমূলনেত্রী নার্ভাস: দীপা দাসমুন্সি
এই কেন্দ্রের লড়াইটা স্পষ্টতই দিদি বনাম বৌদির। এখানে বিজেপি চন্দ্র বসুকে এনে যতই হাই প্রোফাইল যুদ্ধের প্রতিযোগী করুক না কেন তাতে আদতে খুব একটা লাভ নেই। তবে ২০১৫ সালে পুরসভার নির্বাচনে দিদির এলাকার ৭০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছিল বিজেপি। অন্য ৬টি আসনেও বেদম টক্কর দিয়েছিল বিজেপি।
জোটের একাংশের দাবি, ২০১১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত রাজ্যে যেসব ভোট হয়েছে তার ফল ধরে প্রেডিক্ট করলে হবে না। এই ভোটের ইকুয়েশনটা অনেকটা বদলেছে। এই নির্বাচনে ভোটের ধরনটা নয় মমতার পক্ষে বা মমতা-বিরোধী। সেক্ষেত্রে বিজেপির ভোটের একটা বড় অংশই জোটের দিকে ঘুরবে। ফলে বাড়তে পারে জোটের ভোট ভাগের অঙ্কটা। [বাংলার এই দীর্ঘ দৈর্ঘ্যের নির্বাচন কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বড় ধাক্কা?]
খোদ দিদি নিজের জয় নিয়ে নিশ্চিত। ঠিক কী বলছেন বৌদি? দীপার কথায়, "এর আগে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের গুরুত্ব দিতে চাননি। কিন্তু জোটের পক্ষে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত উচ্ছ্বাসে উনি নার্ভাস। আমি জানি এই লড়াইটা আমার কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। দলের প্রত্যাশাপূরণের চেষ্টা করব।"