ছাত্রদের কফিনবন্দি দেহ মাটিতে পুতে অভিনব বিক্ষোভ! অনড় সিবিআই তদন্তের দাবি
উত্তর দিনাজপুরের ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত দুজনের কফিনবন্দি দেহ মাটিতে পুতে রেখে শুরু হল অভিনব বিক্ষোভ। দাবি সিবিআই তদন্তের।
উত্তর দিনাজপুরের ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত দুজনের কফিনবন্দি দেহ মাটিতে পুতে রেখে শুরু হল অভিনব বিক্ষোভ। দাবি সিবিআই তদন্তের। যতক্ষণ না সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ কফিনবন্দি দেহ পাহারা দেবেন গ্রামবাসীরা। মৃতদেহ দাহ করতে দেওয়া হবে না। নতুন সমস্যা ইসলামপুরের দাড়িভিটেতে।
গ্রামবাসীরা রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মনের কফিনবন্দি দেহ মাটিতে পুতে রেখে শুক্রবার রাতভর পাহারা দিয়েছেন। শনিবার সকাল থেকেও পাহারা চলছে। কোনওমতেই তাঁরা দাবি থেকে সরতে নারাজ। রাজেশ সরকারের বাবা দাবি করেছে, তাঁর ছেলের দেহের ময়নাতদন্তের ব্যাপারেও তাঁকে জানানো হয়নি। পাশাপাশি গ্রামে ধরপাকড়ের নামে পুলিশি হয়রানি চলছে। ছাত্রদের গ্রেফতার করতে মুখিয়ে রয়েছে পুলিশ।
গ্রামবাসীদের ক্ষোভ মূলত পুলিশের বিরুদ্ধেই। তাঁদের বদ্ধমূল ধারণা, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে দুই ছাত্রের। সেদিনে পুলিশই গুলি চালিয়েছিল। নিজের দোকানের সামনে দাঁড়িয়েছিল রাজেশ। তখনই গুলি লাগে তাঁর পিছন দিকে। তাপস বর্মনকে গুলি লাগে তাঁর বাড়ির সামনে। তাপসের বোনের দাবি, আমার চোখের সামনে মেরে ফেলল আমার দাদাকে। এদিন এমনও দাবি ওঠে, তাপস বা রাজেশ কেউই প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে ছিল না ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে। তবু তাঁদের প্রাণ দিতে হল।
তাপসের মায়ের দাবি, স্কুলের সামনেই তাপসের বাড়ি। তার পাশে মিষ্টির দোকানে। সেখানেই রাজমিস্ত্রি কাজ করছিলেন, সাহায্য করছিল তাপস। আর স্কুলের গন্ডগোলকে কেন্দ্র করে পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ চলছিল। গ্রামবাসীরা ইট-পাটকেল ছুড়ছিল পুলিশকে লক্ষ্য করে। পুলিশ গুলি চালায় বলে অভিযোগ। তখনই তাপসের বুকে গুলি লাগে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
এখন কে গুলি চালিয়েছি, তা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তা নিয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তাপসের মায়ের দাবি, মুখে কালো কাপড় বেঁধে গুলি চালানো হয়েছিল। সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু গ্রামবাসী সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড়। তাঁদের কথায়, রাজ্যের পুলিশের তদন্তে আমাদের বিশ্বাস নেই। সিবিআই তদন্ত করতে হবে। তবেই প্রকৃত ঘটনা সামনে আসবে। আর সেই দাবিতেই মৃতদের মাটিতে পুতে রেখে বিক্ষোভ চলছে গ্রামবাসীদের।