নন্দীগ্রাম ধর্ষণকাণ্ডে কি প্রতিহিংসা! আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার নির্যাতিতার স্বামী, কেন
তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন নির্যাতিতা এবং অভিযুক্ত নেতা গ্রেফতার হয়েছেন বলেই তার বদলা নিতে তৃণমূল চক্রান্ত করে তাঁর স্বামীকে ফাঁসাল।
নন্দীগ্রামের নির্যাতিতার স্বামীকে বেআইনি অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। খেজুরির ইটভাটায় গিয়ে তিনি বন্দুক দেখিয়ে কর্মীদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। নির্যাতিতা মহিলার পাল্টা অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। তৃণমূল পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে মারধরের পর হাতে বন্দুক ধরিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁর স্বামীকে।
মঙ্গলবার খেজুরির একটি ইটভাটায় গিয়েছিলেন নির্যাতিতার স্বামী পরশুরাম মান্না। তিনি ইট কেনাবেচার ব্যবসা করেন। সেই কারণেই খেজুরির ইটভাটায় গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ইটভাটায় গিয়ে ইটের দরাদরি করছিলেন। তা নিয়েই ইটভাটাকর্মীদের সঙ্গে তাঁর তর্কবিতর্ক শুরু হয়। সেইসময় বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে নির্যাতিতার স্বামীর বিরুদ্ধে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানান, খেজুরির ইটভাটা থেকে খবর আসে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। তারপরই খেজুরি থানার পুলিশ গিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। তিনি বলেন, নন্দীগ্রামের নির্যাতিতার ঘটনার সঙ্গে এদিনের ঘটনার কোনও যোগসূত্র নেই। পুলিশ অভিযোগ পেলে যত দ্রুত সম্ভব পুরো ঘটনা তদন্ত করে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
নির্যাতিতার অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে। তিনি তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন এবং অভিযুক্ত নেতা গ্রেফতার হয়েছেন বলেই তার বদলা নিতে তৃণমূল চক্রান্ত করে তাঁর স্বামীকে ফাঁসাল। তিনি অভিযোগ করেন, খেজুরিতে গেলে স্থানীয় তৃণমূল পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়ে হেনস্থা করা হয় তাঁর স্বামীকে। কেন তাঁদের বাড়িতে বিজেপি ও 'আক্রান্ত আমরা'র প্রতিনিধিরা গিয়েছিলেন, তার কৈফিয়ৎ চাওয়া হয়। ওই পার্টি অফিসে আটকে তাঁর স্বামীকে মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর হাতে একটি দেশি বন্দুক ধরিয়ে দিয়ে তুলে দেওয়া পুলিশের হাতে।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবেন। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও অভিযোগ তাঁর কাছে আসেনি। নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দেন তিনি। উল্লেখ্য, ইন্দিরা আবাস যোজনার টাকার একটা অংশ তৃণমূল নেতাকে না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শুদ্ধিগ্রামের ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। তারপরই জনরোষের মুখে পড়ে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, সেই গ্রেফতারির বদলা নিতেই নির্যাতিতার স্বামীকে ফাঁসানো হয় অস্ত্র আইনে।