আলিয়ায় থাকতে চান না উপাচার্য, কান্নায় ভেঙে পড়ে বললেন ফিরতে চাই যাদবপুরে
আলিয়ায় থাকতে চান না উপাচার্য, কান্নায় ভেঙে পড়ে বললেন ফিরতে চাই যাদবপুরে
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম অপমানিত হয়েছেন উপাচার্য। প্রাক্তন ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিন বাহিনীর হাতে তাঁকে হেনস্থা হতে হয়েছে। তাই আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে চান না উপাচার্য। সেদিনের ঘটনা প্রথম মুখ খুলে কেঁদে ফেললেন উপাচার্য মহম্মদ আলি। তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পুরনো কর্মস্থলে ফিরতে চান বলেও জানিয়ে দিলেন।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এদিন চোখে জল নিয়ে বলেন, বিশ্বাসই করতে পারছি না, ছাত্ররা উপাচার্যকে এমন ভাষায় গালিগালাজ করতে পারে। যা পরিস্থিতি তার পর আর আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার মতো মানসিক অবস্থা নেই। যেভাবে ছাত্রদের হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন তিনি, তারপর যাদবপুরে ফিরে যেতে চান বলে জানিয়েছেন মহম্মদ আলি।
তিনি এই মর্মে ইতিমধ্যেই যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে চিঠিও লিখেছেন। তিনি সেই চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, আলিয়ায় আর সম্মান ও নিরাপত্তা নেই তাঁর। তিনি যে ঘটনার সম্মুখীন হলেন, তার পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আর তিনি কাজ করতে পারবেন না বলেও মনের জোর পাচ্ছেন না।
উপাচার্যের কথায়, ঘটনার দিন উত্তেজনার আঁচ পেয়ে তিনি প্রথমে বোর্ড রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তারপর উপুর্যপুরি দরজা ধাক্কা দেওয়ায় তিনি বেরিয়ে আসেন। ছাত্র-নেচতা গিয়াসউদ্দিন ও তাঁর সঙ্গীদের হাতে হগেনস্থার সময় পুলিশকে ফোন করেও সাহায্য পাননি তিনি। সেই অভিযোগও করেছেন উপাচার্য।
এদিন উপাচার্য বলেন, বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা গিয়াসউদ্দিন-সহ অভিযুক্তদের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তারপরও তাঁরা কী করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকল। সেই প্রশ্নের উত্তরে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি বলেন, নিরাপত্তারক্ষাদের ভয় দেখিয়ে তাঁরা জোর করে ক্যাম্পাসে ঢুকেছে।
আলিয়া'র প্রসঙ্গ উঠতেই মেজাজ হারিয়ে মমতা বললেন, 'বিশ্বভারতীর ভিসিকে কেন গ্রেফতার নয়'
উল্লেখ্য, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকে উপাচার্যকে ঘিরে ধরে খুনের হুমকি ও অশ্রাব্য গালিগালাজ দেয় ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডল ও তরা শাগরেদরা। সেই তাণ্ডব চালানোর দু'দিন পর গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত তৃণমূলের ছাত্রনেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলকে। এরপর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তিন বছরে আগেই তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও বলেছেন ওই বহিষ্কৃত নেতার ক্যাম্পাসে ঢোকার কোনও অনুমতি ছিল না।
তৃণমূলের বহিষ্কৃত ছাত্রনেতার ওই দাদাগিরি ফের একবার শিক্ষাঙ্গনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে থাপ্পড় মারার হুঁশিয়ারি, গালিগালাজ দেওয়া, এমনকী খুনের হুমকি দেওয়া হয়। এই ভিডিও পরে ভাইরাল হয়ে যায়। সেই ভিডিওতে তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতার দাদাগিরি সামনে চলে আসে। এরপর বিধাননগর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্তকে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে আর থাকতে চাইছেন না মহম্মদ আলি।