মুসলিমদের হাত থেকে কী করে বাঁচবেন হিন্দু মেয়েরা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বাতলে দিল ১০ উপায়
মুসলিম ছেলেরা তোমাদের লোভ দেখাতে পারে। খবরদার সেই লোভে পা দেবে না।
মুসলিম ছেলেরা তোমাদের লোভ দেখাতে পারে। খবরদার সেই লোভে পা দেবে না। এমন বাক্য লিখেই এখন লিফলেট বিলি করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এই লিফলেটে পরিষ্কার করে লেখা রয়েছে মুসলিম ছেলেদের বিছানো ফাঁদ থেকে রেহাই পেতে হিন্দু মেয়েদের কী করতে হবে, কী করতে হবে না।
সূত্রের খবর বিলি হওয়া এই লিফলেটেই একটি স্থানে বিবাহিত হিন্দু মেয়েদের সারাক্ষণ শাঁখা-সিঁদূর পরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এতে নাকি হিন্দুত্বের রক্ষা হবে। এমনকী, কোনও মুসলিম ছেলের সঙ্গে হিন্দু মেয়েদের বিয়ে হলে নাম না পরিবর্তনের জেদ বজায় রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোনও হিন্দু মেয়ের শ্বশুরবাড়ি যদি মুসলিম হয় তাহলে সারাক্ষণ হিন্দু পুজো-আর্চা পালন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন হিন্দু সংস্কার বজায় রাখারও কথা বলা হয়েছে। মুসলিম পরব না মেনে নিজের হিন্দু উৎসব পালন করার কথা নাকি লেখা হয়েছে এই লিফলেটে।
বলতে
গেলে
বিশ্ব
হিন্দু
পরিষদের
তৈরি
করা
এই
লিফলেটে
আগাগোড়াটাই
মুসলিম
বিদ্বেষে
ভর্তি।
যার
মূল
কথাই
হল
হিন্দু
মেয়েরা
হিন্দু
ছেলেদেরই
বিয়ে
করুক
অথবা
মুসলিম
ছেলেকে
বিয়ে
করলেও
তাকে
ধর্ম
পরিবর্তন
করে
হিন্দু
হতে
বলুক।
বিশ্ব
হিন্দু
পরিষদের
এই
লিফলেট
নিয়ে
বিতর্কও
শুরু
হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের
মতো
স্থানে
যেখানে
জাত-পাত
বা
ধর্মের
ভিত্তিতে
রাজনীতি
হয়
না
সেখানে
এই
কট্টর
হিন্দুত্বের
প্রচারে
উসকানির
অভিযোগ
উঠেছে।
আর
কী
ধরণের
বিধিনিষেধের
কথা
বলা
হয়েছে
বিশ্ব
হিন্দু
পরিষদের
এই
লিফলেটে।
১।
গ্রাম
বাংলায়
থাকা
হিন্দু
মেয়েদের
মিথ্যা
প্রতিশ্রুতি
দেয়
মুসলিম
ছাত্ররা।
২।
এরা
হিন্দু
মেয়েদের
জন্য
বাসে
আসন
ধরে
রাখে।
আবার
অনেক
মুসলিম
ছেলে
মোটরবাইকে
চাপার
জন্যও
আহ্বান
জানায়।
৩।
কোনও
উৎসবে
বা
অনুষ্ঠানে
মুসলিম
ছেলেরা
হিন্দু
মেয়েদের
নিশানা
করে।
তাদের
সঙ্গে
বন্ধুত্ব
পাতায়।
এরপর
প্রলোভন
দেখায়।
৪।
হিন্দু
মেয়েদের
নিজেদের
ফাঁদে
ফেলতে
বহু
সময়
মুসলিম
ছেলেরা
হিন্দু
ছেলেদের
নামও
ধারণ
করে।
যেমন-
পিন্টু,
মিন্টু
ইত্যাদি।
৫।
মেয়েদের
মন
পেতে
মুসলিম
ছেলেরা
দামি
দামি
জিনিস
উপহার
দেয়।
যেমন-
মোবাইল,
পারফিউম,
মোবাইল
ইত্যাদি।
৬।
শারীরিকভাবে
ঘণিষ্ট
হওয়ার
চেষ্টা
করে
এরা।
এর
জন্য
এরা
মেয়েটিকে
ছবি
দেখিয়ে
ব্ল্যাকমেল
করতেও
পিছপা
হয়
না।
৭।
সিনেমা
দেখার
নাম
করে
বা
হস্টেলে
নিয়ে
গিয়ে
এরা
হিন্দু
মেয়েদের
সঙ্গে
শারীরিকভাবে
ঘণিষ্ট
হওয়ার
চেষ্টা
করে।
৮।
কোনও
মুসলিমদের
মাধ্যমেই
এরা
হিন্দু
মেয়েদের
সঙ্গে
যোগাযোগ
রাখে।
৯।
এরা
খুব
ভালো
অভিনয়
করতে
পারে
এবং
সিনেমার
তারকাদের
মতো
জামা-কাপড়
পরে।
১০।
যদি
কোনও
হিন্দু
মেয়ে
এদের
সঙ্গে
সম্পর্কে
আপত্তি
জানায়,
তাহলে
এই
মুসলিম
ছেলেরা
আত্মহত্যার
অভিনয়ও
করে।
এতেই শেষ হয়নি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এই নীতি-পুলিশগিরি। কোনও হিন্দু মেয়ে যদি কোনওভাবে 'লাভ জিহাদ'-এর শিকার হয় তাহলে কী করতে হবে তারও এক নির্দেশিকা রাখা হয়েছে এই লিফলেটে। এমনকী, মুসলিম শ্বশুরবাড়িতে হিন্দু ধর্মের পরিবেশ গড়ে তোলার সঙ্গে সঙ্গে ছোটদের রামায়ণ, মহাভারত পড়ানোর অভ্যাস তৈরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: স্কুল-কলেজে হিন্দুত্বের প্রচারে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, নামানো হল ৭৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ]
ইতিমধ্যেই কলকাতা ও জেলার বেশকিছু স্কুল-কলেজেও এই লিফলেট বিলি করেছে ভিএইচপি। কিন্তু, অধিকাংশ হিন্দু ছাত্র-ছাত্রী এই লিফলেটে বর্ণিত সমস্ত নির্দেশিকা ও পরামর্শকে উড়িয়ে দিয়েছে। এই হিন্দু-ছাত্রছাত্রীদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের মতো ধর্ম নিরপেক্ষ রাজ্যে ধর্মের নামে এই জিগির টেকসই হবে না। কে কাকে পছন্দ করবে, কার সঙ্গে থাকবে- সেগুলি একজনের ব্যক্তিগত পছন্দ। এখানে জোর করে ধর্মের নামে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। কারা এই ধরণের নির্দেশিকা বানায়? এমন প্রশ্নও তুলেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। লিফলেট তৈরি করাদের মাথায় সমস্যা রয়েছে বলেও অনেকের দাবি।
[আরও পড়ুন:জগিং-এর সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক সাফাই অভিযান, বেঙ্গালুরু পারলেও কলকাতা কেন পারছে না]
ভিএইচপি-র কার্যনির্বাহী সম্পাদক অলোক কুমার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, 'যখন হিন্দু মেয়েদর মুসলিম ধর্মান্তর করা হয় তখন এক জন একটা গোটা জেনারেশনেরই ধর্মান্তর ঘটে। তাই আমরা হিন্দু মেয়েদের সতর্ক করছি যে মুসলিমদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি-তে পা না দিয়ে নিজেদের ধর্মের মধ্যেই বিয়ে করতে।'