রাত বাড়লেই ছাদে আসর পাতেন তেনারা, তাণ্ডব নৃত্য আর কান্নার শব্দে আত্মারাম খাঁচা
রাত বাড়লেই তেনারা আসেন। শুরু হয়ে যায় তাণ্ডব নৃত্য। হরেকরকমের শব্দ, চিৎকার। ছাদের উপর ছোটাছুটি করতে থাকেন তেনারা। আর তেনাদের জ্বালায় ছাদের নিচে টেকাই দায়।
রাত বাড়লেই তেনারা আসেন। শুরু হয়ে যায় তাণ্ডব নৃত্য। হরেকরকমের শব্দ, চিৎকার। ছাদের উপর ছোটাছুটি করতে থাকেন তেনারা। আর তেনাদের জ্বালায় ছাদের নিচে টেকাই দায়। নিত্য রাতে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ির মাল ব্লকের চেংমারিতে। মডেল স্কুল হোস্টেলের উপর প্রতিদিন ভূতের আড্ডা বসে। আর তাতেই আত্মরাম খাঁচা এলাকাবাসীর।
গ্রামবাসীরা তো সন্ধ্যের পর আর ওপথ মাড়ায়ই না। এহেন অবস্থায় ভয়ে সসেমিরা হস্টেল নির্মাণকারী সংস্থার ম্যানেজারের পরিবারও। তারা বেশ কিছুদিন হল ওই হোস্টেলের রুমেই থাকছিলেন। কিন্তু ভূতের তাণ্ডবে হোস্টেলের বাসা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ভয়ে আড়ষ্ট ম্যানেজার পরিবার তাই বাড়ি ভাড়া করে থাকছেন পাশের গ্রামে।
এখনও হোস্টেলের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। ফলে নির্মীয়মান হস্টেলে নেই কোনও পড়ুয়া। কিন্তু যে ভৌতিক কাণ্ড ঘটে চলেছে, তারপর কোনও আবাসিক সেখানে থাকবেন কি না, তা নিয়েই উঠে পড়েছে প্রশ্ন। মডেল স্কুলের এই ভৌতিক কাণ্ড-কারখানা অবশ্য বিজ্ঞানমঞ্চের তরফ থেকে স্রেফ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কথায় ভূত বলে কিছু হয় না। কিন্তু কেন এমন ভৌতিক কাণ্ড জানতে হোস্টেলে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যরা।
হোস্টেলের নির্মাণকারী সংস্থার ম্যানেজারের কথায়, আমি দু-বছর ধরে এই হোস্টেলেই আছি। মাঝেমধ্যেই এমন শব্গ শুনতে পেতাম। ঘর থেকে ভয়ে বের হতাম না। কিন্তু বিগত মাস তিনেক ধরে অসম্ভব অত্যাচার বেড়েছে, তাই বাধ্য হয়েই হোস্টেলের রুম ছাড়ি। এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, এখানে ছিল এক বিরাট শ্মশান। হোস্টেল হওয়ার আগেও এখানে ভূত দেখা যেত বলে প্রচার রয়েছে। মহিলা কণ্ঠে অনেকের নাম ধরে ডাকত ভূত। সন্ধ্যের পর ভয়ে কেউ ওই পথ মাড়াতেন না।
খুলনাই নদীর ধারে ওই হোস্টেলটি নির্মাণ করা হচ্ছে। মডেল স্কুলের হোস্টেলটি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে দীর্ঘদিনই। আর দিন ১৫-র মধ্যে হোস্টেলটির কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। এরপরেই ওই হোস্টেলে থাকতে শুরু করবে কচিকাঁচা ছাত্ররা। কিন্তু এই অবস্থায় কোনও অভিভাবকই তাঁদের সন্তানদের ওই হোস্টেলে পাঠাবেন না।
শুধু ছাত্রছাত্রীরাই নয়, ভূতের তাণ্ডবে আতঙ্কগ্রস্ত গ্রামবাসীরাও। রাত শুরু হলেও ভূতের নাচ শুরু হয় হোস্টেলের ছাদে। সেই আওয়াজ নাকিও অদূরবর্তী বাড়িগুলি থেকেও শোনা যায়। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের কথায়, ভূত বলে কিছু হয় না, ওসব মানুষের মনের ভয়। আমরা শীঘ্রই ওখানে যাব। খতিয়ে দেখব কেন এই ঘটনা।