ফিরতে চাইলে সকলকেই দলে স্বাগত! বার্তা পাওয়ার পরেই মমতা-অভিষেকের প্রশংসা বিজেপি নেতার মুখে
ফিরতে চাইলে সকলকেই দলে স্বাগত! বার্তা পাওয়ার পরেই মমতা-অভিষেকের প্রশংসা বিজেপি নেতার মুখে
বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে দলে দলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। তৃণমূল ছেড়ে একের পর এক বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু নবান্ন দখলে তাঁদের অধিকাংশকেই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে যাওয়া কোনও প্রভাবশালী নেতাই এবার ভোটে জিততে পারেননি। তবে বিপুল সাফল্য পাওয়ার পরও দলত্যাগীদের প্রতি উদারতা দেখিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফিরতে চাইলে সকলকেই দলে স্বাগত জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সোমবার জয়ী বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকেই এই বার্তা দেন মমতা।
মমতা-অভিষেকের প্রসংশা প্রবীরের মুখেই
এই বার্তা পাওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা বিজেপি প্রার্থীর মুখে। ভোটের আগে চার্টাড ফ্লাইটে দিল্লি উড়ে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন উত্তরপাড়ার পরাজিত বিজেপি প্রার্থী প্রবীর ঘোষাল। কিন্তু নির্বাচনে হারের পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গেল বিজেপি নেতার মুখে। একই সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করলেন প্রবীর ঘোষাল। একই সঙ্গে বিজেপির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
উন্নয়নের কর্মধারা চলছে বাংলায়
আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন প্রবীর ঘোষাল। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উন্নয়নের কর্মধারা শুরু করেছেন সেটা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ২০১৯ এর বিপর্যয়ের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই কাজ হাতে নিয়েছিল। আর আজ তার ফল তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে। একইসঙ্গে নিজের দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়েও এদিন মুখ খোলেন প্রবীর ঘোষাল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপির দুর্বলতা তো ছিলই। সাংগঠনিক দুর্বলতা ছিলই। এমনকি বুথ স্লিপ পর্যন্ত প্রত্যেক মানুষের কাছে পৌঁছতে পারা যায় নি, আর সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপির কর্মীরা। প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদন়কে বাংলার মানুষ অনেক বেশি গ্রহন করেছিল বলে আজ এই ফল।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই মানুষ গ্রহণ করেছেন
বাংলা দখলের জন্যে একাধিকবার বাংলায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন অমিত শাহ-জে পি নাড্ডারা। লাগাতার তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছেন। প্রবীরবাবু এদিন বলেন, অস্বীকার করে কোনও লাভ নেই প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুরো বিজেপি এখানে ঝাঁপিয়ে ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই মানুষ গ্রহণ করেছেন, তার জন্যেই এই ফলাফল। এদিন তাঁকে প্রশ্ন করা হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে আহ্বান জানিয়েছেন যারা দলে ফিরতে চায় তাঁরা স্বাগত। এই নিয়ে তাঁর অবস্থান কী জানতে চাওয়া হলে এদিন প্রবীরের উত্তর ছিল, "এই মুহূর্তে সবথেকে বড় যে ব্যাপার সেটা হচ্ছে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা। যেটা মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন সেইটাই এখন প্রথম প্রায়োরিটি তারপরে রাজনীতি। আগে মানুষ বাঁচবে তারপরে তো রাজনীতি।" অর্থাৎ ঘরে ফেরার রাস্তা কার্যত বন্ধ করেননি এমনিই ইঙ্গিত মিলেছে একসময় উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়কের এদিনের সুরে।
শোভন-বৈশাখীর মুখেও মমতার প্রসংশা
তৃণমূলের জয়ের পরেই শোভন-বৈশাখীর সুর বদল! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা দুজনের মুখেই। শুধু তাই নয়, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনা করেছেন শোভন এবং বৈশাখী দুজনেই। উল্লেখ্য, ভোটে টিকিট না পেয়েই বিজেপি নেতৃত্বের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন দু'জনে। বিজেপির ভরাডুবির পর শোভন-বৈশাখীর সুরে আমূল পরিবর্তন। মমতার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং অভিনন্দন জানিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। একই সঙ্গে বৈশাখীর মুখেও মমতার প্রসংশা। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুর্ণিশ করি। যেভাবে হুইলচেয়ারে গিয়ে একের পর এক জায়গাতে প্রচার করেছেন তা স্যালুট জানানোর মতোই। স্বভাবতই শোভন-বৈশাখীর এই সুরবদল দেখে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি তাঁরা তৃণমূলে ফিরতে পারেন? যদিও সে বিষয়টি উহ্যই রেখেছেন দুজনেই।