মেদিনীপুরে উরষ উৎসব, বাংলাদেশি তীর্থযাত্রীদের ঢল নামল
সুফি সাধক হজরত সৈয়দ শাহ মুর্শিদ আলি আল কাদেরি আলি বাগদাদি (মওলা পাক) এর প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে উরষ উৎসবে যোগ দিতে অন্যান্য বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ থেকে মেদিনীপুরে এলেন তীর্থযাত্রীরা। সোমবার সকালে ২৩৩৩ জন তীর্থযাত্রী নিয়ে বাংলাদেশের রাজশাহী থেকে বিশেষ ট্রেন এল মেদিনীপুরে। এই তীর্থযাত্রীরা ফিরে যাবেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায়।
এই বছর ১১৯ তম উরষ উৎসব। বলা হয়, হজরত মহম্মদের ৩২ তম ও সুফি সাধনার আদি গুরু 'বড় পীর সাহেব' হজরত আবদুল কাদের জিলানির ১৯তম বংশধর এই মওলা পাক। তার মৃত্যুদিনে পালিত হয় এই উরষ। তার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করলে পুণ্য অর্জন হয় বলে বিশ্বাস করেন মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষ।
জানা গিয়েছে যে ১৯০২ সাল থেকে এই উরষ পালিত হচ্ছে। তখন থেকেই অধুনা বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসেন এই বিশেষ দিনটিতে।
এইদিন এই ট্রেন আসার পর মেদিনীপুর স্টেশনে ওই তীর্থযাত্রীদের ফুল মিষ্টি দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যেহেতু এই বছর করোনা ভাইরাস আতঙ্ক আছে, তাই এই যাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষে। জানতে চাওয়া হয় যারা এসেছেন তারা গত দু তিন সপ্তাহের মধ্যে চিন, জাপান, থাইল্যান্ডেরমতো দেশে গিয়েছেন কিনা।
মেদিনীপুরের মহকুমা শাসক দীন নারায়ণ ঘোষ জানিয়েছেন যে এই তীর্থযাত্রীদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তার দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। এই সময় জোড়া মসজিদ এলাকায় মেলা বসে। সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এই বছর নাগরিকত্ব আইন ও এন আর সি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি নেতারা বলছেন যে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
তবে বাংলাদেশের থেকে আসা লোকজন দাবি করেছেন যে এই নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হবে না। যারা এইদিন এই ট্রেনে আসেন তাদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগ নেতা হিয়ারত আলি সরাত। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভালো সম্পর্ক আছে। এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কোন প্রভাব পড়বে না। বরং প্রতিবছর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নত হচ্ছে। এই সঙ্গে তিনি বলেন যে ভারত যদি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য না করতো তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পেতে দেরি হয়ে যেত।