শুধু গ্রাম নয় শহরও 'দিদি'-র সঙ্গেই, কলকাতায় তো ফুল মার্কস!
কলকাতা, ১৯ মে : সারদা চিটফান্ড সামনে আসা থেকে শুরু করে নারদ, খাগড়াগড় কাণ্ড, উড়ালপুল দুর্ঘটনা, একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত হয়েছে তৃণমূল। আর সেই প্রসঙ্গ টেনে দুঁদে রাজনীতিবিদ, টেলিভিশনের পণ্ডিত বিশেষজ্ঞরা এবং সর্বোপরি মিডিয়ার একাংশ একপ্রকার ঘোষণা করেই দিয়েছিল, গ্রামীণ ভোট যাই হোক না কেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ শহুরে ভোটে প্রভাব ফেলবেই। তৃণমূলের আসন কমবেই কোথায় কী?
বাংলার রায়: অধীর আগ্রহের অবসান, মমতা ঝড়ে ঢাকা পড়ল সূর্য, বাংলার পরিবেশে মিশল গেরুয়া হাওয়াও
বরং কলকাতার শহুরে ভোটার যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই পক্ষে তার হাতে নাতে প্রমাণ হল কলকাতার নির্বাচনের ফল। ১১ টি আসনের মধ্যে ১১টিতেই জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস। কোনও দুর্নীতিরই প্রভাব প্রতিফলিত হয়নি ভোটবাক্সে। বরং গোটা রাজ্যের পাশাপাশি শহরেও উল্লেখযোগ্যভাবে ভাল ফলাফল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
কলকাতার পাশাপাশি, শহরতলিতেও দুরন্ত ফল করেছে তৃণমূল। আসলে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিশ্রমও নজর টেনেছে সাধারণ মানুষের। মমতা যে আক্ষরিক অর্থেই জননেত্রী তা নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকতে পারে না। ভোটের নির্বাচনের প্রচারে একাই ৫৬ দিনে ২০০টি জনসভা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর থেকে দক্ষিণ একা চষে বেড়িয়েছিলেন গোটা বাংলায়। আর এই পরিশ্রম শুধু ভোটের আগে নয়, সারাবছর ধরেই চালিয়ে গিয়েছেন তিনি।
(ছবি) উত্তর থেকে দক্ষিণ উচ্ছ্বাসের সবুজ রং, নির্বাচন ফলাফলের বিভিন্ন মুহূর্ত ছবিতে
অন্যদিকে, বামেরা হলেন ফুলবাবু। তারা মূলত নিজের নিজের কেন্দ্রে মনোনিবেশ করেছিলেন। সেই পুরনো কায়দায় ভোটের আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুখে হাসি নিয়ে হাত জোড় করে ভোট চেয়েছিলেন তারা। তার উপর খাঁড়া আবার জোট।
মমতাকে গদিচ্যুত করতে যেভাবে নীতি বিসর্জন দিয়ে বাম-কংয়ে জোট হয়েছিল তা কট্টর বামপন্থী ও কংগ্রেস সমর্থকরা মন থেকে মেনে নিতে পারেনি। তার একটা প্রভাবও ভোটে পড়েছে বটেই। অন্যদিকে দুর্নীতির প্রশ্নে কিছুটা বেনিফিট অফ ডাউট গিয়েছে শাসক দলের পক্ষে। কারণ এমন তো নয়, যে এরাজ্যের একমাত্র দুর্নীতির অভিযোগ এই শাসকদলের বিরুদ্ধেই উঠেছে। তবু দলনেত্রীর ইমেজে কিন্তু হাজারো চেষ্টার পরেও কালি ঢালতে পারেনি বিরোধীরা।
আর সবশেষে তৃণমূলের নির্বাচনী সাফল্যে একটা বড় ভূমিকা রয়েছে মিডিয়ার একাংশ শাসকদল বিরোধী প্রভাবশালী গোষ্ঠী। যারা একতরফা মমতার বিরোধীতা করে গিয়েছে। প্রত্যেকের ভাল খারাপ দুটি দিক হয়। কারোর ভালো বেশি কারোর খারাপ বেশি। কিন্তু এই মিডিয়া গোষ্ঠীগুলি দিনের পর দিন মমতার একতরফা বিরোধীতা করে গিয়েছে। তা শহুরে শিক্ষিত মানুষের মনে অবশ্যই প্রভাব ফেলেছে। যার প্রতিফলন হয়েছে ভোট বাক্সে।