তৃণমূলের মুসলিম ভোট কি আদৌ অক্ষত থাকবে একুশে? সেকুলার ফ্রন্ট তৈরিতে প্রশ্ন
একুশের আগে বাংলায় দলবদলের হিড়িক পড়েছে। তারই মাঝে আবার এসেছে নতুন রাজনৈতিক দল। মুসলিমদের ধর্মীয় পীঠস্থান ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি গড়েছেন নতুন দল। আবার প্রতাপপুর দরবার শরিফের পিরজাদা রুহুল আমিনও নতুন রাজনৈতিক ফ্রন্ট তৈরি করেছেন। এই পরিস্থিতিতে স্বভাবতই চাপে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আদৌ কি অক্ষত থাকবে তৃণমূলের মুসলিম ভোট?
রাজ্যে সংখ্যালঘু তথা মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক বিগত ১০-১২ বছর ধরে তৃণমূলের সঙ্গেই রয়েছেন। রাজ্যের ৩০ শতাংশ মুসলিম, তার অন্তত ২৫ শতাংশ ভোট আসে তৃণমূলের বাক্সে। এখনও ওই ভোটব্যাঙ্ক অক্ষত। কিন্তু তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে এবার বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন পড়তে চলেছে। আদৌ কি আক্ষত থাকেব তৃণমূলের মুসলিম ভোট?

বিগত ১০-১২ বছর তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে মুসলিমরা
ইতিহাস বলছে, মুসলিমরা কোনও সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে কোনওদিনও থাকেনি। কংগ্রেসি আমলে কংগ্রেসের সঙ্গে থেকেছে, পরে বামেদের দিকে ঢলেছে। এখন বিগত ১০-১২ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছে মুসলিমদের অধিকাংশ সংগঠন। এবার তৃণমূল তা অক্ষত রাখতে পারে কি না, তা-ই দেখার।

একুশের আগে বাংলায় তৈরি দুটি সেকুলার ফ্রন্ট
পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে মিমের বৈঠক হয়েছে। তাঁরা একসঙ্গে লড়ার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই অবস্থায় আব্বাস সিদ্দিকি ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট তৈরি করেছেন। আবার পিরজাদা রুহুল আমিন ইউনাইটেড সেকুলার ফ্রন্ট তৈরি করেছেন। এখন এই দুই ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কী হয়, সেদিকেই চোখ রাজনৈতিক মহলের।

দু-মাস আগে তৈরি সংখ্যালঘু ফ্রন্ট কতটা কার্যকর!
আব্বাস সিদ্দিকি একটা রাস্তা খোলা রেখেছেন বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের। আর রুহুল আমিন তাঁর ফ্রন্টকে বিজেপি বিরোধী বলে ঘোষণা করেছেন। এই অবস্থায় ভোটোর দু-মাস আগে তৈরি সংখ্যালঘু ফ্রন্ট কতটা কার্যকর হয়, তা বোঝা যাবে কংগ্রেস ও বামেরা কী অবস্থান নিচ্ছেন তার উপর। ইতিমধ্যে কংগ্রেসের রোহন মিত্র ও আবদুল মান্নানের সঙ্গে আব্বাসের বৈঠকও হয়েছে।

আব্বাসদের দল কি প্রভাব ফেলতে পারবে একুশে
আব্বাসের দল করা নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল বাগযুদ্ধে নেমেছে। তৃণমূলের ফিরহাদ হাকিমের দাবি, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে মুসলিম ভোট কেটে ধর্মীয় দলগুলি বিজেপিকে জিততে সাহায্য করেছে। আব্বাসের দলও একই উদ্দেশ্যে ময়দানে নেমেছে। কিন্তু সুবিধা করতে পারবেন না পিরজাদা। বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য বলেছে, ওরা কোনও প্রভাবই ফেলতে পারবে না।

মুসলিম দলগুলি বাংলায় সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি
ভাইপো আব্বাসের দল নিয়ে আবার ত্বহা সিদ্দিকি বলেছেন, এই দলটার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। এখন খানিক হইচই হচ্ছে, দুদিন পরই সব চুপচাপ হয়ে যাবে। আব্বাসও ভুল বুঝতে পারেবে। এদিকে ইতিহাস বলছে, মুসলিম দলগুলি বাংলায় সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি। অজয় মুখোপাধ্যায়ের সময় থেকেই দেখা যাচ্ছে সেই প্রবণতা।

অজয় মুখোপাধ্যায় থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
অজয় মুখোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায় মুসলিম লিগের বিধায়ক ছিলেন, তাঁর অস্তিত্ব ছিল না। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী পিপলস ডেমোক্র্যাটিক কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়া নামে একটি দল করেছিলেন। তিনি আবার পরে নিজেই তৃণমূলে চলে আসেন। মুর্শিদাবাদে ওয়েলফেয়ার পার্টি অফ ইন্ডিয়া এবং সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি অফ ইন্ডিয়া নামে দুটি দল গঠন হয়, তাও হারিয়ে যায় অচিরে।

অপেক্ষা ২০২১-এর নির্বাচনী ফল প্রকাশ পর্যন্ত
সাম্প্রদায়িক শক্তির বাড়বৃদ্ধি হবে না বাংলায়। কারণ বাংলায় ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। বাংলার ধর্মনিরপক্ষ মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ দলকেই বেছে নেবে। তবে কালের নিয়মে তা হারিয়ে গেলেও সাময়িক কোনও প্রভাব বাংলার শাসকদলের উপর কোনও প্রভাব ফেলবে কি না, তা বলবে ভবিষ্যৎ। অপেক্ষা করতে হবে ২০২১-এর নির্বাচনী ফল প্রকাশ পর্যন্ত।

মমতার পাশাপাশি অভিষেক স্তূতি দিয়ে শুরু কৌশানী-পিয়ার তৃণমূলে যোগদান! কী বললেন অভিনেত্রীরা