বর্ধমানে বিস্ফোরণে মৃত দুই, জঙ্গি-যোগ সন্দেহে তদন্তে এনআইএ
বর্ধমানের শহরের খাগড়াগড়ে একটি বাড়িতে গতকাল অর্থাৎ মহাষ্টমীর দুপুরে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থলেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় শামিম আহমেদ ওরফে শাকিল এবং শোভন মণ্ডল। আর এক ব্যক্তি হাসান সাবাহের শরীরের ৮০ শতাংশ পুড়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, দীপাবলির বাজি বানাতে গিয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। কিন্তু পরে পুলিশ ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অনেকগুলি অ্যালুমিনিয়াম পাইপ, ডিটোনেটর, তার, মোবাইলের সিম কার্ড, ছোট পেরেক ইত্যাদি উদ্ধার করে। বর্ধমান সদর থানার এক অফিসার বলেন, "সাধারণ তুবড়ি বা চরকি বানাতে কেউ এগুলো ব্যবহার করে না। অ্যালুমিনিয়াম পাইপ আর ডিটোনেটর পাওয়ার পর আমরা নিঃসন্দেহ যে, শক্তিশালী বোমা বানানো হচ্ছিল ওই বাড়িতে।"
খবর যায় এনআইএ-র কাছে। প্রসঙ্গত, সারা দেশে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে তদন্ত চালায় এনআআইএ। এটি একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। মহানবমীর সকালে বর্ধমান পৌঁছন এনআইএ গোয়েন্দারা। তাঁরা ছাড়াও গিয়েছে সিআইডি-র বম্ব স্কোয়া।
তবে এনআইএ এসে পৌঁছনোর আগেই ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক পুলিশ নিয়ে যায় দামোদর নদের চরে। সেখানে ওইগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়।
বিস্ফোরণ নিয়ে মৃত শামিম আহমেদ ওরফে শাকিলের স্ত্রী রুমি বিবি ও জখম হাসান সাবাহের স্ত্রী আমিনা বিবিকে জেরা করা হয়েছে বলে খবর। পুলিশের ধারণা, বর্ধমানের এই বাড়িতে বসে কোনও বড়সড় নাশকতার ছক কষা হয়েছিল। এর পিছনে মুজাহিদিনরা জড়িত নাকি মাওবাদী জঙ্গিরা নাকি বাংলাদেশের মৌলবাদীরা, তার খোঁজ চলছে। জঙ্গি সংস্রবের বিষয়টি চূড়ান্ত ভাবে প্রমাণিত না হলেও পুলিশ ও এনআইএ একমত যে, এখানে শক্তিশালী বোমা বানানো হচ্ছিল।
পুলিশ জানায়, লোকগুলি বর্ধমানের পুরনো বাসিন্দা নয়। মুর্শিদাবাদ ও নদীয়ার লোক এরা। তিন মাস আগে শামিম আহমেদ ওরফে শাকিল, শোভন মণ্ডল, হাসান সাবা, আমিনা বিবি ও রুমি বিবি এখানে এসে ওঠে। সঙ্গে দুই শিশু। তারা কেন হঠাৎ বর্ধমানে বাড়িভাড়া নিল, কে সেই ভাড়ার ব্যবস্থা করে দিল, শুরু হয়েছে খোঁজখবর।