ডিভিশন বেঞ্চে ভিন্ন মত, তাপস পাল মামলা যাচ্ছে বৃহত্তর বেঞ্চে
প্রসঙ্গত, নদীয়ার নাকাশিপাড়ায় চৌমুহা গ্রামে একটি দলীয় সভায় গত ১৪ জুন বিরোধীদের উদ্দেশে হুমকি দিয়েছিলেন তাপস পাল। বলেছিলেন, দলের ছেলেদের ঢুকিয়ে দেবেন বিরোধীদের ঘরে, তারা মেয়েদের ধর্ষণ করে চলে যাবে। সিপিএম, বিজেপি-র লোকেদের খুন করারও হুমকি দেন। এ নিয়ে নাকাশিপাড়া থানায় নালিশ করা হলেও পুলিশ এফআইআর করেনি। ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসেছিল।
তাই কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন জনৈক ব্যক্তি। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে মামলাটি উঠেছিল। গত ২৮ জুলাই সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত সিআইডিকে এর তদন্তের নির্দেশ দেন। বলেছিলেন, নাকাশিপাড়া থানাকে এফআইআর করে মামলা শুরু করতে হবে এবং তার পর মামলাটির ভার নিয়ে নেবে সিআইডি। পয়লা সেপ্টেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট জমা হবে। সিআইডি ঠিকঠাক তদন্ত করছে কি না, তার ওপর নজর রাখবে কলকাতা হাই কোর্ট।
আগামী তিন সপ্তাহ তাপস পালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে না পুলিশ
এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে শুনানি চলছিল। এ দিন রায় দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু দুই বিচারপতি ভিন্ন মত পোষণ করেন। বিচারপতি গিরীশচন্দ্র গুপ্ত এর আগে সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের রায়ের সমালোচনা করেছিলেন। বলেছিলেন, মশা মারতে কামান দাগা হয়ে গিয়েছে! সিআইডি তদন্তের ওপর আদালতের নজরদারি চালানোর নির্দেশ বাড়াবাড়ি হয়েছে। এ দিন তেমন কথা না বললেও পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে চাননি তিনি। তাপস পাল অপরাধ করার হুমকি দিলেও অপরাধ তো করেননি, এটাই ছিল তাঁর যুক্তি। কিন্তু বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ভিন্ন মত পোষণ করে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের অনুরূপ অবস্থান নেন। তিনি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেছেন এবং তাপস পালের উসকানিমূলক ভাষণের নিন্দা করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও সুপারিশ করেন। দু'জনে একমত না হওয়ায় নির্দিষ্ট কোনও রায় হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, আগামী তিন সপ্তাহ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না পুলিশ।
এ বার মামলাটির শুনানি হবে বৃহত্তর বেঞ্চে। কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর এই বেঞ্চ গঠন করবেন।