২ গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে ৩ তালা শাসকদলের অফিসে! আদি-নব্য ঝামেলা মেটাতে তৎপরতা পুলিশের
রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের পার্টি অফিসে তিনটি তালা। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের পিন্ডিরার কাশীপুর গ্রাম। কালনা ২ নং ব্লক সভাপতি প্রণব রায় এই বুথের সভাপতি বদলানোয় তালার পর তালা পড়েছে। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দুটি তালার উপর তৃতীয় তালাটি পুলিশের।
ফের ক্ষমা চাইলেন অনুব্রত! মমতার ক্ষমতায় থাকা কেন জরুরি, বললেন অনুব্রত

বিধায়ক, ব্লক সভাপতির দ্বন্দ্ব
তৃণমূল নেতা হামিদ শেখ সিপিআইএম জমানা থেকে কাশীপুরের বুথ সভাপতি ছিলেন। তাঁর কথায়, দলের পুরনো কর্মী তাঁরা। এখন তাঁদের বিরুদ্ধেই ক্ষমতা প্রয়োগ হচ্ছে। তাতে দলেরই ক্ষতি হচ্ছে। ২০১৩ সাল থেকে নির্বাচিত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ানো সিপিআইএমের প্রার্থী সুকুর আলিকে আচমকা বুথ সভাপতি করা সিংহভাগ নেতা-কর্মী মানছেন না। সাম্প্রতিক দলীয় কর্মসূচিতে তার প্রমাণ মিলেছে। কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুন্ডু ও ব্লক সভাপতি প্রণব রায়ের মধ্যে সম্পর্কের অবনতির ফলেই প্রণব-ঘনিষ্ঠ অঞ্চল সভাপতি ঋতব্রত কপ্তির পরিকল্পনায় এই সমস্যা বলে অভিযোগ।

তৃণমূলের অফিসে ৩ তালা
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বুথে নতুন বুথ সভাপতি করাকে কেন্দ্র করে অন্তর্কলহ দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। দলের একাংশের দাবি, নতুন বুথ সভাপতির কাছে একটা তালার চাবি রয়েছে। অফিসে বৈঠক করতে না পেরে আগের বুথ সভাপতি আর একটা তালা দিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বড় ধরনের অশান্তির আশঙ্কায় কালনা থানার পুলিশ আবার একটা তালা মেরেছে।
বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ হামিদ শেখ বলেন, তিনি দুটো সভায় যেতে পারেননি। হঠাৎ করেই তাঁকে সরিয়ে সুকুর আলিকে বুথ সভাপতি করে দেওয়া হয়েছে। দিন কয়েক আগে অফিসে মিটিং করতে গিয়ে দেখেন তালা দেওয়া। তারাও একটা তালা দিয়ে দেন। তারপর পুলিশ আসে। পুলিশও একটা তালা দিয়ে বলে, এখন অফিস বন্ধ থাকবে।

দ্বন্দ্ব মেটাতে চেষ্টা পুলিশের
দু-পক্ষকে ডেকে কথাও বলেছে কালনা থানার পুলিশ। হামিদের কথায়, এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে খারাপ বার্তা যাচ্ছে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছেন সিপিআইএম, বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই সিপিআইএমের নেতা এখন তৃণমূলে এসে তাদেরই পার্টি অফিসে ঢুকতে দিচ্ছেন না! অন্যদিকে ব্লক সভাপতি প্রণব রায় এই ঘটনাকে সামান্য বিষয় বলে দাবি করে বলেন, ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তাঁর দাবি সুকুর সিপিআইএমে ছিলেন না।

তিন তালার 'তালাক' চাইছেন নেতারা
হামিদ শেখ চার মাস আগে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেছেন বলে বুথ সভাপতি বদল হয়েছে। হামিদ শেখের পাল্টা দাবি, কিছু বিষয়ের জন্য মৌখিকভাবে বলেছিলেন, তিনি বুথ সভাপতি থাকবেন না। কিন্তু তখন ব্লক সভাপতি নিজে আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, কে কী বলল শোনার দরকার নেই। তিনিই যেন বুথ সভাপতি থাকেন। এখন এই চাপানউতোর কাটতে পারে তিন তালার তালাকেই।