এক রাতে দু'টি গণধর্ষণ, সকালে উদ্ধার শব
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাঁথি থানার অন্তর্গত সুনিয়া গ্রামে বিধানসভা ভোটের পর থেকেই ঘরছাড়া ছিলেন এক সিপিএম নেতা। নাম ব্যোমকেশ গিরি। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী একা থাকতেন। তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে ওই সিপিএম নেতার স্ত্রীকে তৃণমূল কংগ্রেসের কিছু কর্মী অশ্লীল ইঙ্গিত করত বলে অভিযোগ।
গতকাল সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ শাসক দলের কয়েকজন কর্মী জোর করে বাড়িতে ঢোকে বলে অভিযোগ। তাঁর কাছে 'ক্ষতিপূরণ' বাবদ ১২ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। তিনি বলেন, এত টাকা দিতে পারবেন না। তখন তারা চলে যায়। ফের দুপুর দু'টো নাগাদ আসে। আবারও টাকা চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়। 'দেখে নেব তোকে', এই হুমকি দিয়ে চলে যায়। সন্ধে সাড়ে ছ'টা নাগাদ অন্তত জনা কুড়ি তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে টানতে টানতে গ্রামের কাছে জগদীশ মোড় বলে একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। জনসমক্ষে শাড়ি-ব্লাউজ খুলে দেওয়া হয়। শ্লীলতাহানি করা হয়। মুখে ঘুষি মারা হয় বলেও অভিযোগ। তার পর টেনে-হিঁচড়ে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়। অন্তত ১২ জন মিলে তাঁকে পরপর ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এ দিন সকালে ওই বধূর ঝুলন্ত দেহ পাওয়া যায় বাড়ি থেকে। স্থানীয় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের দাবি, গণধর্ষণ করার পর তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার সময় ও পরে পুলিশকে জানালেও তারা ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে রয়েছে।
"আষাঢ়ে গল্প ফাঁদছে সিপিএম। আমাদের কেউ জড়িত নয়," বললেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক
সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেছেন, "বর্বর ও লজ্জাজনক ঘটনা। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে।" নাট্যকার কৌশিক সেন বলেন, "আমি এই ঘটনায় স্তম্ভিত। পশ্চিমবঙ্গে কখনও এমন ঘটনা ঘটবে, আমরা ভাবতেও পারতাম না। যদি সত্যি শাসক দলের লোকের জড়িত থাকে, তা হলে হয়তো এর কিনারাই হবে না। পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে, কেউ আবার ছোট্ট ঘটনার তত্ত্ব খাড়া করবেন। এ রাজ্যে আর কেউ নিরাপদ নেই।"
কাঁথির তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী বলেছেন, "আষাঢ়ে গল্প ফাঁদছে সিপিএম। আমাদের কেউ জড়িত নয় এই ঘটনায়। যে-ই এ সব করে থাকুক, পুলিশ আইনমাফিক ব্যবস্থা নেবে। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কুৎসা করা হচ্ছে।"
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া জেলার আমতার একটি বিএড কলেজে। সোমবার সকালে এক কিশোরীর নগ্ন রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের বক্তব্য, ওই কিশোরীকে সম্ভবত অন্য জায়গা থেকে তুলে এনে গণধর্ষণ করা হয়েছে। উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর গণধর্ষণের বিষয়টি সমর্থিত হয়েছে। মৃতার শবের পাশ থেকে মদের খালি বোতল মিলেছে। গণধর্ষণের পর ওই কিশোরীর মুখ থান ইট দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয়। ফলে এখনও তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। বিএড কলেজের দুই নিরাপত্তারক্ষীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।