পুজোর পরেই গ্যাসের দামবৃদ্ধি নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে তৃণমূল কংগ্রেস, জানালেন শুভাশিস
হিংসা নয় রাজনৈতিক মোকাবিলাটাই বড়। সম্প্রতি ক্যানিং-হওয়া হিংসায় এমনই মতামত ব্যক্ত করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার নবনিযুক্ত তণমূল সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী।
হিংসা নয় রাজনৈতিক মোকাবিলাটাই বড়। সম্প্রতি ক্যানিং-হওয়া হিংসায় এমনই মতামত ব্যক্ত করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার নবনিযুক্ত তণমূল সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী। রাজনৈতিক মতাদর্শের ফারাক থাকতেই পারে, তাই বলে রক্ত ঝরাটাকে সমর্থন করা যায় না বলেই মনে করেন তিনি। ক্যানিং এবং বাসন্তীতে যে হিংসার ঘটনাকে তণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্ধ বলা হচ্ছে তা মোটেও সত্য নয় বলেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি জানিয়েছেন, এই এলাকার মুগবেড়িয়ায় কিছু জন আরএসএস দ্বারা প্রভাবিত হয়েই হিংসাত্মক ঘটনা ঘটাচ্ছেন। যার জেরে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এটা কোনওভাবেই কাঙ্খিত নয়। তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয় তাই এমন সব বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে-ই মোকাবিলা করতে চান বলে ওয়ানইন্ডিয়া বেঙ্গলিকে জানিয়ে দিয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তী।
নতুর বছর পড়লেই বেজে যাবে লোকসভা নির্বাচনের দামামা। যার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। এই বছরের একদম শেষ পর্যায়ে দেশের চার রাজ্যে ভোট। পশ্চিমবঙ্গে ভোট না থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে অগাস্ট মাস থেকে 'বিজেপি হটাও দেশ বাঁচাও' কর্মসূচি শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজোর পরে এই কর্মসূচি আরও তীব্রতা পাবে বলেই ২১ জুলাই-এর শহিদসভা থেকে ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এই কর্মসূচি শেষ হলেই জানুয়ারি মাসে তৃণমূলের ব্রিগেড জনসভা। যেখানে অরবিন্দ কেজরিওয়াল থেকে শুরু করে রাহুল গান্ধী ও সনিয়া গান্ধীদের হাজির করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন তণমূলনেত্রী। এই কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পেট্রোপণ্য নীতির বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতে চাইছেন তণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী।
প্রতিনিয়ত বাড়ছে তেলের দাম। মাঝে কয়েক পয়সা করে দাম কমানো হলেও বৃদ্ধির অঙ্ক কয়েক টাকা। যা পরিস্থিতি তাতে তেলের দাম শতরান না করে ফেলে সে আশঙ্কাতে রয়েছেন সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে গ্যাসের দাম ৫৯টাকা বেড়েছে। কর ধরে এই অঙ্ক কলকাতা এবং বাংলাতে প্রায় ১০০টাকার বৃদ্ধি হয়েছে। গ্যাসের এই দামবৃদ্ধি নিয়ে শুক্রবার মোদী সরকারকে তীব্র কটাক্ষে বিঁধেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্যাসের এই বিপুল দামবৃদ্ধি নিয়ে অবিলম্বে আন্দোলনে নামতে চেয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা তণমূল সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী। কিন্তু পুজোর উৎসবের একটা হাওয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় আপাতত গ্যাসের দামবৃদ্ধি নিয়ে আন্দোলনকে একটু পিছিয়ে দিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে আন্দোলন পুজোর পরেই শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তী। জেলা জুড়ে বিশাল মিছিল বের করা হবে। যেখানে তণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীরাও অংশ নেবেন বলে জানান তিনি।
জেলার দায়িত্ব তাঁর কাছে নতুন নয় বলেই জানিয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তী। ১৯৯৮ সালে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করেছিলেন সে সময় দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগঠনের দায়ভার তাঁর উপরেই ছিল। ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটে এই দক্ষিণ ২৪পরগনাতেই তণমূল সেবার ৩২টি আসনের মধ্যে ১৪টি আসন পেয়েছিল। পাথর প্রতিমা ও মগরাহাট পূর্ব আসনটি অল্প ব্যবধানে হার হয়েছিল। এছাড়াও যুব কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছিলেন। তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়নের দায়িত্ব সামলিয়েছেন। সুতরাং নেতৃত্ব দেওয়ার অভ্যাসটা তাঁর পুরনো। তাঁর আশা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে পারবেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৫টি লোকসভা আসনেই প্রার্থীদের লক্ষাধিক ভোটে জেতানোই তাঁর লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলায় তণমূল কংগ্রেসকে ঐক্যবদ্ধ করতে তিনি বদ্ধপরিকর বলেই জানিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনের দেখভাল করছিলেন। সুতরাং, ইতিমধ্যে দলকে অনেকটাই সংগঠিত করে ফেলেছেন। ভাঙড়ে দল এখন অনেক বেশি সুসংবদ্ধ হয়েছে। যার জন্য পঞ্চায়েতে এখানে বোর্ড গঠন করতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-র বাড়ন্তে খুব একটা চিন্তুতও নন এই তৃণমূল সাংসদ। কারণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিজেপি-র সেভাবে অস্তিত্ব আছে বলে তিনি মনে করেন না। তাঁর এখন একটাই লক্ষ দলের সকলকে একত্রিত করে চলা। প্রয়োজনে ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের সঙ্গে আলোচনাও করবেন বলে জানিয়েছেন শুভাশিস চক্রবর্তী।