ইস্তফা দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি, মুকুলের দলত্যাগ নিয়েও খোঁচা মমতাকে
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে পদত্যাগ পত্র দিয়ে এলেন পাঞ্জাবের তৃণমূল সভাপতি। তাঁকে কাজের সুযোগ দেওয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি তিনি সমালোচনাও করেন দলনেত্রীর।
তৃণমূলের পাঞ্জাব ইউনিটের সভাপতি জগমিত সিং ব্রার ইস্তফা দিলেন পদ থেকে। ফলে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর ধাক্কা খেলেন দলের ভারত-বিস্তার পরিকল্পনায়। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে তিনি পদত্যাগ পত্র দিয়ে আসেন। তাঁকে কাজের সুযোগ দেওয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পাশাপাশি তিনি সমালোচনাও করেন দলনেত্রীর। বলেন, 'মুকুল রায়ের দলত্যাগের পর মমতাজি বাংলা নিয়েই বেশি চিন্তিত। ফলে অন্য রাজ্যে সংগঠনের কাজ সেভাবে দেখভাল করা হচ্ছে না।'
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মর্যাদা রক্ষায় বিভিন্ন রাজ্যে ইউনিট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেইমতো পাঞ্জাবেও তৃণমূল ইউনিট খোলে। পাঞ্জাব রাজ্যের সভাপতি ছিলেন জগমিত সিং ব্রার। তাঁর নেতৃত্বে পাঞ্জাবে বিস্তার লাভের স্বপ্ন দেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল গত বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করেছিল পাঞ্জাবে। কিন্তু তার পর থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পাঞ্জাব নিয়ে আগ্রহ ছিল না। সেই কারণেই সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত নেন জগমিত।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যে সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেও তিনি এখনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা স্থির করেননি। তিনি দুবার সাংসদ ছিলেন। নির্বাচনে তৎকালীন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী সুখবীর সিং বাদলকে তিনি পরাজিত করেছিলেন। তারপর ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ পর্যন্ত এইআইসিসি সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। তার আগে ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি এআইসিসি-র সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন ভারতীয় যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে এসে পদত্যাগ পত্র দেন স্বয়ং দলনেত্রীর হাতে। সাংবাদিকদের প্রপশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এখন বাংলা নিয়েই বেশি ব্যস্ত। অন্য রাজ্যে তাঁদের বিস্তারের ভাবনা কার্যত বাধা পাচ্ছে। তাই তিনি এই পদে থাকার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছেন না। আমি মমতাজির প্রস্তাব মেনে পাঞ্জাব সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলাম। চেষ্টা করেছিলাম উত্তর ভারতে তৃণমূলের বিস্তারের। কিন্তু জাতীয় স্তরে দলের বিস্তারের সে অর্থে কোনও পরিকল্পনা এই মুহূর্তে শীর্ষ নেতৃত্বের নেই বলেই আমার মনে হয়েছে। আমি চেয়েছিলাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে বিকল্প ফ্রন্টের নেতৃত্ব দিন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তা হয়নি।'
তিনি আরও বলেন, 'কয়েক সপ্তাহ আগেই আমার মনে হয়েছিল, দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এখন বেশি গুরুত্ব দিতে হচ্ছে বাংলায়। মুকুল রায় দল ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন বাংলার দিকে দৃষ্টি দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তখনই আমি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত পাকাপাকি নিয়ে নিই।'
ইস্তফাপত্র গ্রহণ করার জন্য তিনি এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ দেন। জগমিত সিং ব্রার বলেন, আমি এখনও আমার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঠিক করিনি। আমি আমার বন্ধু ও হিতাকাঙ্খীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
[আরও পড়ুন:দিল্লির কাছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বে পরিবর্তন চেয়ে দরবার! হাসপাতাল থেকেই বয়ান দিলীপের]