জেলা পরিষদে নয়া ‘নজির’ তৃণমূলের! কোন কোন জেলায় হল ‘স্বপ্নপূরণ’, দেখুন একনজরে
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিরোধী জেলা পরিষদ গঠনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতা-মন্ত্রীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চেয়েছিলেন সেই ইতিহাস ছুঁতে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিরোধীশূন্য জেলা পরিষদ গঠনের ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতা-মন্ত্রীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চেয়েছিলেন সেই ইতিহাস ছুঁতে। ১৯৭৮-র পর নয়া ইতিহাস তৈরি করল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০-তে ২০। তার মধ্যে ১১টি আবার বিরোধীশূন্য। ৫০ শতাংশের বেশি জেলা পরিষদে বিরোধীশূন্য করে নম্বর বাড়িয়ে নিলেন অনেক নেতাই।
[আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষ যোগাযোগ রাখছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে! 'হাস্যকৌতুক' নেতাকে মোক্ষম জবাব]
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমস্ত জেলা পরিষদ দখল করে নজির তৈরি করেছিল বামফ্রন্ট। তারপর থেকে অবশ্য কোনওবারই এই কীর্তির স্বাক্ষর রাখতে পারেনি কোনও রাজনৈতিক দলই। ৪০ বছর পর ২০১৮-তে বামফ্রন্টের কীর্তিকে ছুঁয়ে ফেলল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসঙ্গে ১১টি জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য করে ছাড়়ল তারা।
ভোটের আগেই বীরভূম জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে মুর্শিদাবাদ, অরূপ চক্রবর্তী, অরূপ খাঁ-দের হাত ধরে বাঁকুড়া জেলা পরিষদও দখল নিয়েছিল তৃণমূল। আর ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল ১১টি জেলা পরিষদে বিরোধীদের দূরবীন দিয়েও দেখা যাচ্ছে না।
[আরও পড়ুন:তৃণমূলমুক্ত জঙ্গলমহল গড়াই স্বপ্ন বিজেপির, পঞ্চায়েতের ফলে উৎসাহী দিলীপ ঘুঁটি সাজাচ্ছেন ]
তৃণমূলের ক্লিন সুইপের ঠেলায় এক এক করে এগারো জেলা পরিষদে বিরোধীদের একটি আসনও জুটল না। সেই তালিকায় রয়েছে অনুব্রত, শুভেন্দু, জ্যোতিপ্রিয় জেলা ছাড়াও আরও অনেক জেলা।
দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান ছাড়াও বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি, জলপাইগুড়ি ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাও এই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক এই ১১ জেলার ফলাফল
১)
জলপাইগুড়ি
:
আসন
সংখ্যা
১৯।
১৯টি
আসনেই
ভোট
হয়।
তৃণমূল
জয়
পায়
১৯টি
আসনেই।
২)
দক্ষিণ
দিনাজপুর
:
আসন
সংখ্যা
১৮।
১৮টি
আসনেই
ভোট
হয়।
তৃণমূল
জয়
পায়
১৮টি
আসনেই।
৩)
হুগলি
:
আসন
সংখ্যা
৫০।
১৩টি
আসনে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি।
বাকি
৩৭টি
আসনেও
জয়
পান
তৃণমূল
প্রার্থীরা।
৪)
উত্তর
২৪
পরগনা
:
আসন
সংখ্যা
৫৭।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি
৯টি
আসনে।
বাকি
৪৮টি
আসনই
তৃণমূলের
দখলে।
৫)
দক্ষিণ
২৪
পরগনা
:
আসন
সংখ্যা
৮১।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি
২৮
আসনে।
বাকি
৫৩
আসনেই
বিরোধীদের
পর্যুদস্ত
করে
তৃণমূল।
৬)
পূর্ব
মেদিনীপুর
:
আসন
সংখ্যা
৬০।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি
৭
আসনে।
বাকি
৫৩
আসনেই
জয়ী
তৃণমূল
কংগ্রেস।
৭)
পশ্চিম
মেদিনীপুর
:
আসন
সংখ্যা
৫১।
৫১টি
আসনেই
ভোট
হয়।
তৃণমূল
কংগ্রেসের
দখলে
যায়
৫১
আসন।
৮)
বাঁকুড়া
:
আসন
সংখ্যা
৪৬।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি
৩১
আসনে।
ভোট
হয়
মাত্র
১৫
আসনে।
১৫টি
আসনেই
জয়ী
হন
তৃণমূল
প্রার্থীরা।
৯)
পূর্ব
বর্ধমান
:
আসন
সংখ্যা
৫৮।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি
১৮
আসনে।
বাকি
৪০
আসনেই
জয়
পায়
তৃণমূল
কংগ্রেস।
১০)
পশ্চিম
বর্ধমান
:
আসন
সংখ্যা
১৭।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি
১
আসনে।
বাকি
১৬
আসনই
দখল
করে
নেয়
তৃণমূল
কংগ্রেস।
১১)
বীরভূম
:
আসন
সংখ্যা
৪২।
প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়নি
৪২
আসনেই।
ফলে
ভোটাভুটিই
হয়নি
এই
জেলা
পরিষদে।
- এছাড়া মুর্শিদাবাদ জেলা কান ঘেঁসে বেরিয়ে যায়। মাত্র একটি আসনে জিততে পারেনি তৃণমূল। ৭২ আসনবিশিষ্ট জেলা পরিষদে ৪৮টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। বাকি ২৪টির মধ্যে মাত্র ১টিতে জয় পায় কংগ্রেস। বাকি ২৩টি বিজেপির।
- ৩৩ আসনের কোচবিহারেও মাত্র ১টি আসন বেরিয়ে যায় তৃণমূলের হাত থেকে। ৩২টি-তে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। আর একটিতে জয়ী হয় নির্দল।
- ১৮ আসনের আলিপুরদুয়ারে ১৭টিতে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। একটি আসনে জয়ী হয় বিজেপি।
- ৪০ আসনবিশিষ্ট হাওড়া জেলা পরিষদ একটি আসনের জন্য বিরোধীশূন্য হল না। ৩৯টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল। একটি আসনে নির্দল প্রার্থীর কাছে হেরে যান তৃণমূল প্রার্থী।