পাহাড় জ্বলছে, এবার জঙ্গলমহলেও আশঙ্কার মেঘ
গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে পাহাড়ে জঙ্গি আন্দোলন জারি রেখেছে মোর্চা। এবার আপাত শান্ত জঙ্গলমহলও উত্তপ্ত হল। রেল রোকো-চাক্কা জ্যাম দিয়ে শুরু। জঙ্গলমহলে হুমকি বৃহত্তর আন্দোলনেরও।
ক্ষমতায় এসেই মমতা বলেছিলেন পাহাড় হাসছে, জঙ্গলমহল হাসছে। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনে পাহাড়ে ফের আগুন জ্বলতে শুরু করেছে এখন। এবার শান্ত জঙ্গলমহলেও অশান্তির কালো মেঘ ছড়াতে শুরু করল। আদিবাসীদের আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জঙ্গলমহল। আদিবাসীদের প্রতিবাদ ঝাড়খণ্ড সরকারের বিরুদ্ধে, কিন্তু আঁচ এসে পড়ল এ রাজ্যের জঙ্গলমহলেও।[আরও পড়ুন:অবরোধে বিঘ্নিত দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পরিষেবা, জানুন ট্রেন চলাচলের আপডেট]
হুল দিবসে রেল রোকো ও চাক্কা জ্যাম কর্মসূচিতে রাস্তায় নেমে আদিবাসী সংগঠন নাকাল করে ছাড়ল যাত্রী সাধারণকে। প্রশাসনকে চরম নাকাল হতে হল এদিন। শুক্রবার আদিবাসীদের অবরোধ কর্মসূচি থেকেই আওয়াজ উঠল- দাবি না মানলে পাহাড়ের মতো জঙ্গলমহলও অচল করে দেওয়া হবে।
হুল দিবসকে শহিদ দিবস হিসেবে মানেন আদিবাসীরা। এই হুল দিবসে অনেকে যেমন উৎসব পালন করে, অনেকে আবার আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিবাদে রাস্তায় নামে। দ্রুত তাদের দাবি পূরণ না করা হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে সামিল হবেন বলে হুমকিও দিয়েছে আদিবাসীদের এই সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পরগনা মহল।
এই সংগঠনের দাবিগুলি হল- ঝাড়খণ্ড সরকারকে সাঁওতাল বিরোধী ঐতিহাসিক আইন সিএনটি ও এসপিটি আইনের সংশোধনী প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের আদিবাসীদের উপর অত্যাচার বন্ধ করতে হবে। আদিবাসীদের জল-জমি-জঙ্গল অধিকার রক্ষা করতে হবে। মূলত ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, সেই আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়ল পশ্চিমবঙ্গেও।
এদিন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন স্টেশনে রেল অবরোধ শুরু করে ওই আদিবাসী সংগঠনের সদস্যরা। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। শুধু রেল রোকো নয়, জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় পথ অবরোধও করা হয়। শালবনীতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ হয়। নিত্যযাত্রীরা সকাল থেকেই নাকাল হয়ে পড়েন। ঝাড়খণ্ডেরও বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ হয়।
ঝাড়খণ্ডের বিজেপি সরকার সিএনটি ও এসপি অ্যাক্ট বাতিল করেছে। এই আইনে আদিবাসীদের জমি কেবল আদিবাসীরাই কেনাবেচা করতে পারত। বিজেপি সরকার এই আইন বাতিল করে যে সংশোধনী এনেছে, তাতে বলা হয়েছে যে কেউ জমি কেনাবেচা করতে পারবে। এর ফলে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা। সেই আশঙ্কা থেকেই এই আন্দোলনের সূত্রপাত।