স্বপ্নাদেশ, গুপ্তধন, তান্ত্রিক, সুড়ঙ্গ - একুশ শতকের এই ঘটনা বিস্মিত করে
বাঁকুড়া এক গ্রামের বাড়িতে গত কয়েকদিন ধরে চলছিল গুপ্তধনের সন্ধান। একটি ২০ ফুট গভীর গর্ত সেখানে খনন করা হয়েছিল।
গুপ্তধনের লোভে বাড়ির মেঝে খুঁড়ে গত ১৫ দিনে কেটে ফেলা হয়েছিল প্রায় ২০ ফুট গভীর গর্ত। এদিকে বাড়িতে সন্দেহজনক লোকজনের যাতায়াত দেখে পুলিশে খবর দিয়েছিলেন পাড়া প্রতিবেশীরা। পুলিশ এসে গ্রেফতার করে এক তান্ত্রিক ও তার সাগরেদকে। সুযোগ বুঝে গা ঢাকা দিয়েছেন বাড়ির কর্তা।
বাঁকুড়ার কোতলপুর থানার বুটবাড়ি গ্রামের ঘটনা। গ্রামবাসীদের অগোচরে এখানকার এক বাসিন্দা রোহিত নন্দীর বাড়িতে এই কাজ চলছিল বলে জানা গিয়েছে। রোহিতের সঙ্গে ছিল ওই তান্ত্রিক ও তার সাগরেদ। বাড়ির একটি ঘরের মেঝেতেই ৬ ফুট লম্বা ও চওড়া ওই গর্ত খোঁড়া হয়। গবীরতা ক্রমশ বাড়ায় উপরের মাটিতে ধস নামছিল। তাই সেখানে কাঠের তক্তা দিয়ে সামাল দেওয়া হয়েছিল।
এই কাঠের তক্তা আনাটাই কাল হল রোহিতদের। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন গত কয়েকদিন ধরেই রোহিতের বাড়িতে মোটরবাইকে করে কিছু লোক আসত। তারা সকালে আসত, আর সারাদিন কাটার পর রাতে বের হতো। তাতে গ্রামবাসীদের মনে প্রথম সন্দেহ দেখা দেয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে কাঠের তক্তা আনার পর গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেন। আর তাতেই সামনে আসে এই ঘটনা।
এদিকে স্বপ্নাদেশ কে পেয়েছিলেন, সেই নিয়ে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। পুলিশএর কাছে তান্ত্রিকটি দাবি করেছে, স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন রোহিত। তিনিই তাকে ডেকে আনেন। আবার রোহিত নন্দীর স্ত্রীর দাবি তান্ত্রিকটিই তাদের বাড়ি বয়ে এসে গুপ্তধনের কথা বলেছিল। মাঝখান থেকে গুপ্ত ধনের কথা জানাজানি হওয়াতে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে আশপাশের গ্রামে। ওই বাড়ির সামনে গুপ্তধন দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে গিয়েছে।
এতে গ্রামবাসীদের একাংশ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তাঁরা বলছেন, তাদের গ্রাম শিক্ষিত গ্রাম। এখানে কুসংস্কারের জায়গা নেই। রোহিত তাদের নাম ডুবিয়েছেন। সেইসঙ্গে তাদের দাবি গুপ্তধন দেখার নাম করে গ্রামে প্রচুর বদলোকের আনাগোনা শুরু হয়েছে। পুলিশ ওই সুড়ঙ্গ বুজিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। গ্রামবাসীরা বলছেন রোহিত কেটেছেন, তিনিই বোদাবেন গর্ত। এদিকে পুরো ঘটনায় হতাশ রোহিতের স্ত্রী। তিনি বলছেন, 'গুপ্তধন তো পেলামই না, স্বামীও কোথায় চলে গেল!'