বোধনেই বিসর্জন হয় প্রতিমার! আবহমানকাল ধরে এই রীতি উত্তরদিনাজপুরের নন্দীবাড়িতে
বোধনেই বিসর্জন! অবাক হবেন না। এ বাড়িতে এটাই রীতি। বরাবর বোধনের দিনই মা দুর্গার প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। বছরের পর বছর, এই ধারা চলে আসছে।
বোধনেই বিসর্জন! অবাক হবেন না। এ বাড়িতে এটাই রীতি। বরাবর বোধনের দিনই মা দুর্গার প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। বছরের পর বছর, এই ধারা চলে আসছে। আজও তার অন্যথা হয় না। উত্তর দিনাজপুরের নন্দী পরিবার এ ব্যপারে খুবই নিষ্ঠাবান। পুজোর রীতি-নীতিতে একচুলও এধার-ওধার করা চলবে না।
ভাবছেন তো, বোধনেই যদি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়ে যায়। তবে পুজোটা হয় কবে? কী করেই বা পুজো হয়? যদি ঘটেই দুর্গা-বন্দনা হবে, তা হলে ঘটা করে প্রতিমা গড়েই বা কী লাভ! এ বাড়িতে বোধনের দিন যেমন বিসর্জনও হয়, তেমনই মৃন্ময়ী প্রতিমায় ঘটা করে চারদিন পুজোও হয়- দুটোই সত্যি।
আসলে বোধনের দিন নিরঞ্জন হয় গত বছরের প্রতিমা। ইসলামপুরেরে নন্দীবাড়ির সদস্যরা প্রতি বছর বোধনের দিন নিয়ম করে প্রতিমা নিরঞ্জন করেন, তারপর বেলতলায় শুরু হয় দেবী দুর্গার বোধন। পরদিন মহাস্নান করে দুর্গা আরাধনা শুরু। নন্দীবাড়তে এটাই বরাবরের রীতি। আবহমানকাল ধরে এই রীতি চলে আসছে।
ইসলামপুরের এই বনেদি বাড়িতে পুজো আসলে চারদিনের নয়। এখানে দেবী দুর্গার আরাধনা ৩৬৫ দিন। এবার যে প্রতিমায় অকালবোধন হল, সেই প্রতিমায় সারা বছর পূজার্চনা চলে। তারপর পরের বছর বোধনের দিন নিরঞ্জন হয় দেবীপ্রতিমার। ঠিক যেমন এবারও হবে আগের বছরের প্রতিমার নিরঞ্জন।
কিন্তু কেন এই নিয়ম। কথিত আছে, নন্দী বাড়ির কোনও এক পূর্বপুরুষ স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন দশমীতে প্রতিমার নিরঞ্জন নয়। সারা বছর পুজো চান মা। সেই থেকেই এ বাড়িতে দশমীতে নিরঞ্জন হয় না দেবী মায়ের। সারা বছর প্রতিমাকে পুজো করা হয় ঠাকুর দালানে।
বাংলাদেশের বিক্রমপুরে তাদের আদিবাস। তারপর বিক্রমপুর থেকে ইসলামপুরে চলে আসে নন্দী পরিবার। সেই থেকে পুজো হয়ে আসছে এখানে। নন্দীবাড়ির বর্তমান সদস্যরা বলেন, ৩৫ বছর ধরে বিসর্জনের এই রীতি চলে আসছে। ১৯৮৩ সালে এই বাড়িরই পূর্বপুরুষ অষ্টমীর রাতে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। তারপরই থেকেই ওই রীতি চলে আসছে।