কংগ্রেস-সিপিএম ডুবো নৌকা, বিজেপিই প্রধান প্রতিপক্ষ পঞ্চায়েত ভোটে, মনে করছে তৃণমূল
তৃণমূল মনে করে কংগ্রেস ও সিপিএম অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। ওদের আর ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁদের প্রধান প্রতিপক্ষ হতে চলেছে বিজেপিই।
কংগ্রেসের ঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে কংগ্রেসকেই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। কংগ্রেসকে ডুবো নৌকার তুলনা করে তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এবার দল পরিবর্তন করে নয়, ভোটে জিতেই মালদহ জেলা পরিষদ দখল করবে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই জন্য বুথভিত্তিক সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার ডাক দেন তিনি। দলের আর এক শীর্ষ নেতা মুকুল রায়ও কংগ্রেসকে শুকনো নদীর সঙ্গে তুলনা করেন।
তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতাই মনে করেন কংগ্রেস ও সিপিএম অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। ওদের আর ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁদের প্রধান প্রতিপক্ষ হতে চলেছে বিজেপিই। শনিবার মালদহে কর্মী সম্মেলনে কংগ্রেস ও সিপিএমকে তুচ্ছজ্ঞান করে মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী বার্তা দেন, 'আসন্ন নির্বাচনে তাঁদের লড়তে হবে সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপি-র বিরুদ্ধেই। কংগ্রেস বা সিপিএম সে অর্থে কোনও ফ্যাক্টর হবে না।'
এদিন পুরাতন মালদহের তাঁতিপাড়া মাঠে অনুষ্ঠিত তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সম্মেলনে দলের জেলা স্তরের নেতা ও কর্মীদের উদ্দেশে তাঁরা সাফ জানান, এখন থেকেই সংগঠন শক্তিশালী করতে হবে। বুথভিত্তিক সংগঠনে জোর দিতে হবে। কেননা পঞ্চায়েত নির্বাচন আর বেশি দূরে নয়। এবার লড়াই আরও কঠিন।
পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, রাজ্যে তৃণমূল এগিয়ে চলেছে ঠিকই, এই মালদহ জেলায় কিন্তু এখনও সে অর্থে কোনও সাফল্য পায়নি। দলকে জেলায় সাফল্যের পথে আনতে হলে আত্মসমালোচনা করা দরকার। এবার দল পরিবর্তন করে নয়, ভোটারদের মন পরিবর্তন করেই মালদহ জেলা পরিষদ দখল করবে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই লড়াইয়ের জন্যই কর্মীদের প্রস্তুত হতে নির্দেশ দেন তিনি।
মালদহের কংগ্রেস ঘাঁটিতে দাঁড়িয়েই তিনি শতাব্দী প্রাচীন দলের কঠোর সমালোচনা করেন। বলেন, কংগ্রেস এখন একটা ফুটো নৌকা। এ রাজ্যে কংগ্রেস ডুবতে বসেছে। আর অস্তিত্বহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে সিপিএম। এখন বামেরা সব রাম হয়ে গিয়েছেন। বিজেপি-র সঙ্গে একজোট হয়ে তৃণমূলকে হারানোর চেষ্টায় নেমেছে বামেরা। কিন্তু তাদের সেই অভিসন্ধি পূর্ণ হবে না। অশুভ শক্তিকে হারিয়ে এবার রাজ্যের সমস্ত জেলা পরিষদই দখল করবে তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিন বিজেপিকে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি শুভেন্দু। তিনি বলেন, বিস্তারক যোজনার নামে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে বিজেপি নেতা-নেত্রীরা। তাই মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদেরই সেই ভুল ভেঙে দিতে হবে। মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। তৃণমূলের প্রতি তাঁদের আবেগ জাগিয়ে তুলতে হবে।
মুকুল রায়ও এদিন মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে বার্তা দেন সংগঠন জোরদার করার ব্যাপারে। তিনি বলেন, মালদহ জেলায় দলের সংগঠন এখনও ভালো নয়। মালদহে জেলা নেতৃত্বকে অন্য জেলার নেতৃত্ব যাতে ছোটো চোখে দেখতে না পারে, তার চেষ্টা করতে হবে। ফলাফল করে দেখিয়ে দিতে হবে, আমরাও কেনও জেলার থেকে পিছিয়ে নেই।
সে জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন, সেই উন্নয়নের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তাতেই সাফল্য আসবে। এদিন কংগ্রেসকে শুকনো নদীর সঙ্গে তুলনা করেন মুকুল রায়। বলেন কংগ্রেস আর জাগবে না এ রাজ্যে। দেশেও অস্তিত্ব হারাচ্ছে দল। মাত্র দু'টো রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে তারা।