পিকেকে ভোট কৌশলী নিয়োগে তৃণমূলে বুমেরাং! একুশের আগে দীর্ঘতর হচ্ছে বিদ্রোহীর তালিকা
প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বাড়ছে তৃণমূলে। তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর এবং তাঁর টিম আই-প্যাকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন। হাওড়ার শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়ী তো প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলের বর্তমান সঙ্কটের জন্য তাঁকে দায়ী করেছেন।

পিকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীর তালিকা দীর্ঘতর
দীর্ঘদিন ধরে প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক। দিন দিন সেই তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে শুরু করেছ। মিহির গোস্বামী তো বিদ্রোহ ঘোষণা করার পর দল ছেড়ে বিজেপিতেও যোগ দিয়েছেন ইতিমধ্যে। তারপর শুভেন্দু অধিকারী, শীলভদ্র দত্ত, কৃষ্ণপদ সাঁতরা থেকে শুরু করে হালে জটু লাহিড়ী-সহ আরও কত বিধায়ক রয়েছেন এই তালিকায়।

পিকেকে ভোট কৌশলী নিয়োগ দলের ক্ষতি?
তাঁদের প্রায় প্রত্যেকেরই অভিযোগ, প্রশান্ত কিশোরকে ভোট কৌশলী হিসেবে পার্টিতে নিয়োগ করার পরই চারদিক থেকে ক্ষয়ক্ষতি শুরু হয়েছে। জটু লাহিড়ী তো ফলাও করে বলেছেন, আমি কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। তাই আমি মনে করি এই পার্টির রাশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে থাকাই উচিত।

প্রশান্ত কিশোর ইস্যুতেই দলে ক্ষুব্ধ শুভেন্দু!
এই প্রশান্ত কিশোর ইস্যুতেই দলে ক্ষুব্ধ হয়ে শুভেন্দু অধিকারী মতো জনপ্রিয় নেতা দল থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী গত সপ্তাহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভা থেকেও পদত্যাগ করেছেন। এখন তাঁর দলবদল নিয়ে চর্চা চলছে। তিনি নিত্যদিনই নতুন জল্পনার বাতাবরণ তৈরি করছেন।

একুশের আগে বুমেরাং হবে পিকের কৌশল!
শুভেন্দু অধিকারীর পদত্যাগ তৃণমূলকে আড়াআড়ি দু-ভাগ করে দিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। তিনি বিধানসভা নির্বাচনের আগে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসনের উপরে নিজের প্রভাব বজায় রেখেছেন। এহেন পরিস্থিতি একুশের নির্বাচনের আগে বুমেরাং হতে পারে বলে আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের বিদ্রোহী বিধায়করা।

পিকে ও তাঁর টিমের বাংলায় সফল হওয়া কঠিন!
অনেক তৃণমূল নেতা বিশ্বাস করেন, প্রশান্ত কিশোর ও তাঁর টিমের বাংলায় সফল হওয়া কঠিন। পিকে এবং আই প্যাক বেশিরভাগ কাজ করেছে উত্তর ভারত কেন্দ্রীভূত রাজ্যে। বাংলায় তাঁর সাম্প্রতিক উদ্যোগ ‘দিদিকে বলো' বা ‘বাংলার গর্ব মমতা' আপাত সাফল্য পেলেও, তাঁর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে। তৃণমূলের মধ্যেই অন্তর্কলহের সৃষ্টি করেছে সেই উদ্যোগ।

‘দিদিকে বলো’তে মমতার সঙ্গে কথা বলে ক্ষুণ্ণ অনেকে
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক অনেক তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, এই ‘দিদিকে বলো' কর্মসূচিতে অনেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার প্রত্যাশা করছিল। কিন্তু ‘দিদিকে বলো'তে কেবল অভিযোগগুলি রেকর্ড করা হয়েছিল এবং সেই অভিযোগগুলির কিছু কিছু সমাধান হলেও, অনেক মানুষের সন্তুষ্টি হয়নি।

'বাংলার গর্ব মমতা'ও অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছে
এই ‘দিদিকে বলো' তৃণমূলের কর্মীদের বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছিল। এই কর্মসূচির জন্য অনেক নেতা-নেত্রী সাধারণ মানুষের ক্রোধের মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং এটি বহু বুথে দল থেকে তৃণমূলকর্মীদের বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তাপর করোনা মহামারীর কারণে 'বাংলার গর্ব মমতা' অভিযান শেষ করা যায়নি। ফলে বাংলার গর্ব মমতা সে অর্থে ফলপ্রসূ হয়নি।

এবার তৃণমূলের অভ্যন্তরেই উঠল বহিরাগত হঠানোর দাবি! পোস্টার ঘিরে চাঞ্চল্য