অদ্ভুত সমাপতন! একুশের বিধানসভায় ‘ফার্স্টবয়’ হয়ে গনিই ভাঙলেন ৫০ বছরের গনি-মিথ
অদ্ভুত সমাপতন! একুশের বিধানসভায় ‘ফার্স্টবয়’ হয়ে গনিই ভাঙলেন ৫০ বছরের গনি-মিথ
৫০ বছরের গনি-মিথ ভেঙে খানখান। গনির জেলায় একটি আসনও দখল করতে পারেনি কংগ্রেস। এমনকী গনি খান চৌধুরীর আসনটিও হাতছাড়া হয়েছে এবার। ৭২ সালে তিনি যে আসন থেকে জিতে বিধানসভায় গিয়েছিলেন, এবার সেই আসনেই রেকর্ড ভোটে পরাজয় হয়েছে কংগ্রেসের। আর এক গনি এবার গনিখানের মিথ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছেন।
গনিখানের আসনে জিতে বিধায়কদের ফার্স্টবয় গনি
মালদহ কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। এই জেলায় বরাবরই তারা দাপট দেখিয়ে এসেছে। কিন্তু এবার বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মালদহ তৃণমূলের পক্ষেই মত দান করেছে। তার ফলে একুশের এই লড়াই থেকে রেকর্ড ভোটে জয় ছিনিয়ে এনেছেন তৃণমূল প্রার্থী। গনিখানের আসনে এবার তৃণমূল প্রার্থী করেছিল আর এক গনিকে। তিনিই এবার হয়েছেন বিধায়কদের ফার্স্টবয়।
২৯২ জন বিধায়কের মধ্যে সবথেকে বেশি মার্জিনে জয়
গনিখান চৌধুরীর গড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হানা দিয়েছিলেন অনেক আগেই। তাঁর এক ভাই, ভাগনি এখন জেলা তৃণমূলের সর্বেসর্বা। তারপর গনিখানের আসনে তিনি যাঁকে প্রার্থী করেছিলেন তিনিও যে গনি। প্রাক্তন বিচারপতি মহম্মদ আবদুল গনি। তিনি ২৯২ জন বিধায়কের মধ্যে সবথেকে বেশি মার্জিনে জয়ের রেকর্ড করেছেন।
গনি মিথ ভেঙে তৃণমূলের বিপুল জয়ে হেরে ভূত ঈশা
গনিখানের আসন সুজাপুর থেকে মহম্মদ আবদুল গনি জয়ী হয়েছেন। তাঁর জয়ের ব্যবধান ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৬১৬। তৃণমূলের এই জয়েই গনি মিথ ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস তলিয়ে গিয়েছে রসাতলে। এখানে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী। তিনি হেরে ভূত হয়ে গিয়েছেন গনির দাপটে।
১৯৭২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বজায় ছিল গনি-মিথ, ভাঙন একুশে
১৯৭২ সালে এই কেন্দ্র থেকে জিতে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন মমতার বরকতদা। বরকত গনি খান চৌধুরী। তারপর ১৯৮০ সালে তিনি মালদহ লোকসভা আসনে দিতে রেলমন্ত্রী হন। আমৃত্যু এই এলাকা থেকে সাসংদ ছিলেন তিনি। সুজাপুর ছিল তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। সেই থেকেই সুজাপুর থেকে বিধায়ক হয়েছেন কখনও বোন রুবি নুর, কখনও ভাগ্নি মৌসম বেনজির নুর। কখনও ভাই আবু নাসের খান চৌধুরী ও ভাইপো ঈশা খান চৌধুরীও বিধায়ক ছিলেন।
কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী জামানত রাখতে পারেননি গনির আসনে
এবার হাওড়ার জগৎবল্লভপুর থেকে প্রাক্তন বিচারপতি বিধায়ক মহম্মদ আবদুল গনিকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন মালদহের সুজাপুরে। তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী জামানত রাখতে পারেননি। তবে এই জয়কে গনি মিথে ভাঙন বলতে রাজি নন জেলা তৃণমূলের সভাপতি খোদ গনিথানের ভাগ্নি মৌসম।
গনি মিথে ভেঙে চুরমার, মানতে রাজি নন তৃণমূলের মৌসম
মৌসমের কথায়, গনি মিথ আর ভোটের ফলাফল পুরোপুরি ভিন্ন বিষয়। এবার সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে গোটা রাজ্য দিদির পাশে দাঁড়িয়েছে। তারই ফলে এই বিপুল জয়। গনি মিথ জেলায় অটুট আছে। তাঁর অবদান জেলার মানুষ ভুলবে না। তাঁকে দেখেই আমরা রাজনীতি করছি। এখন তৃণমূলটাই আসল কংগ্রেস হয়ে উঠেছে জেলায়। গনি খানের জেলার মানুষ তাই তৃণমূলকে বেছে নিয়েছেন।