তৃণমূল কংগ্রেসে পদ পেয়েও ‘বিদ্রোহ’ জারি, ২০২১-এর নির্বাচনের আগে একহাত সভাপতিকে
তৃণমূল কংগ্রেসে বিদ্রোহের আগুন নেভাতে পারছেন না খোদ সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি নিজে হাতে কমিটি গড়ে বিক্ষুব্ধদের স্থান করে দেওয়ার পরও দলের মধ্যে কোন্দল অব্যাহতই রয়েছে। প্রবীণ তৃণমূল নেতা এককাট্টা জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। তিনি অনড় সভাপতির অপসারণের দাবিতে। ফলে জলপাইগুড়ি তৃণমূলে অব্যাহত রয়েছে কোন্দল।

মমতার দ্বন্দ্ব মেটানোর প্রয়াস বৃথা!
প্রবীণ তৃণমূল নেতা জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসু বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি কিষাণকুমার কল্যাণীর বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, জেলা সভাপতির সঙ্গে তিনি একসঙ্গে দল করবেন না। তারপর থেকেই তিনি সমান্তরালভাবে দল চালাচ্ছিলেন। এই দ্বন্দ্ব মেটানোর প্রয়াস সর্বদা জারি রেখেও কোনও লাভ হয়নি। এখনও অব্যাহত দুই নেতার লড়াই।

মমতা বন্দ্যোপধ্যায়ের বার্তাও অস্বীকার!
প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহন বসু সাফ জানিয়েছেন, তিনি বিধানসভা ভিত্তিক দলের কোনও কর্মী সম্মেলনে যাবেন না। তাঁর এই বিদ্রোহ জারির পর থেকেই জল্পান শুরু হয়েছে। তবে কি তিনি তৃণমূল সু্প্রিমো মমতা বন্দ্যোপধ্যায়ের বার্তাও অস্বীকার করছেন। তিনি যে পদ দিয়েছেন তাঁর অবমাননা করছেন।

বিদ্রোহী নেতা মোহন বসু সহ সভাপতি হয়েছেন
উল্লেখ্য, জলপাইগুড়ি জেলায় বিজেপিকে ঠেকাতে বিক্ষুব্ধদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুঝিয়ে দেন আসন্ন নির্বাচনে তাঁরা নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল শিকেয় তুলে কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়তে চান। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ জেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে বিদ্রোহী নেতা মোহন বসুকে। তাঁকে সহ সভাপতি করা হয়েছে জেলার।

সমন্বয়ের কমিটি গড়েও বিদ্রোহ তৃণমূলে
তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা কমিটিতে বিক্ষুব্ধদের মধ্যে মোহন বসু ছাড়াও আছেন অমরনাথ ঝা, নিতাই কর প্রমুখ। আর শোকজ হওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন রাজেশ সিং, অরূপ দে প্রমুখ। নতুন জেলা কমিটিতে চেয়ারম্যান হয়েছেন খগেশ্বর রায়, জেলা সভাপতি কিষণকুমার কল্যাণী। কো অর্ডিনেটর মিতালি রায় ও চন্দন ভৌমিক। তৃণমূল যুব সভাপতির দায়িত্বে সৈকত চট্টোপাধ্যায়।

রদবদলে গুরুত্ব পেয়েও বিদ্রোহ ঘোষণা
মোহন বসুকে জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসক করা হয়নি। তারপর থেকেই জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বিরোধ বাধে। তাঁকে বোঝাতে বিধায়ক খগেশ্বর রায় থেকে শুরু করে মনন্ত্রী গৌতম দেব, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস পর্যন্ত যান। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং তাঁকে কমিটিতে রাখেন। তারপরও তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পিছপা হলেন না।

নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেবেন জানুয়ারিতেই
মোহন বসুর কথায়, দলটাকে আমি নিজের ঘর বলে মনে করি। কিন্তু এই দলটা এখন নিজের বলে মনে হচ্ছে না। তাই জানি না কতদিন থাকতে পারব। দলে কর্মী সম্মেলন হচ্ছে, কিন্তু আমি সেখানে যাচ্ছি না। জানুয়ারি মাসেই তিনিই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন বলে জানিয়ে দেন মোহনবাবু।

মমতায় আস্থা, দলে অনাস্থা! প্রয়োজনে সন্ন্যাস
এরপরই তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা আছে। তবে আমি অন্য দলে যাব না। প্রয়োজনে আমি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতে পারি। আমার কিছু শারীরিক সমস্যাও রয়েছে। তা সত্ত্বেও এই দলটার জন্য প্রাণপণ করেছি, কিন্তু দলের নেতারা সেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছেন না জেলায়।

দলটার ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি, তাই কষ্ট হচ্ছে
মোহনবাবু বলেন, জেলা কমিটি শুধু আমাকে নিয়ে নয়, আরও অনেকে আছেন। আমি মানুষকে নিয়ে চলা লোক। কিন্তু চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি দলটা থেকে সরে যাচ্ছেন মানুষ। তাই কষ্ট হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে দলটার ভবিষ্যৎ জেলায় কী হতে চলেছে। এটা এখনই রুখে দেওয়া দরকার। কিন্তু কে করবে সেই কাজ। তিনি গুরু দায়িত্ব পাওয়ার পরেও চাই বিদ্রোহী।

করোনা ঠেকাতে এবার লরির চাকার ফরেনসিকের পরামর্শ! প্রশাসনকে নজরদারির নির্দেশ মমতার
{quiz_384}