পুনরায় পঞ্চায়েত ভোটের সওয়াল! বিজেপির যুক্তি নস্যাৎ তৃণমূলের, প্রতীক্ষা সুপ্রিম-রায়ের
পুনরায় পঞ্চায়েত ভোটের জন্য জোর সওয়াল চালাল বিজেপি। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও নির্বাচন কমিশন ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলগুলিরও একই অভিমত।
পুনরায় পঞ্চায়েত ভোটের জন্য জোর সওয়াল চালাল বিজেপি। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও নির্বাচন কমিশন ছাড়া অন্যান্য বিরোধী দলগুলিরও একই অভিমত। সবাই-ই চাইছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী আসনে ফের ভোট হোক। মানুষের ভোটদানের অধিকার ও ভোটে অংশগ্রহণ করার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানান বিজেপির আইনজীবী।
আর এই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, আপনাদের বক্তব্য বুঝতে পেরেছি। আপনারা বলতে চাইছেন রাজ্যে নির্বাচনের অনুকূল পরিস্থিতি ছিল না। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসনগুলিতে কেবল একটিই রাজনৈতিক দলের সদস্যের মনোনয়ন ছিল। গণতন্ত্রের বহুদলীয় ব্যবস্থা তার ফলে লঙ্ঘিত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণ শুনে বিজেপির আইনজীবী বলেন, রাজ্যে গণতন্ত্র বিপন্ন। এই অবস্থায় মহামান্য আদালতই পারে রাজ্যের গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে। অর্থাৎ তাঁর সওয়ালে ফের ভোটের আর্জিই বারবার ঘুরে ফিরে আসে।
আর উল্টোদিকে রাজ্য সরকারের দাবি, রাজ্যের গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এই মামলার কারণে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় রাজ্যে তৈরি হয়েছে সাংবিধানিক সংকট। ২২ হাজার কোটি টাকার তহবিল পড়ে রয়েছে। সেই টাকা গ্রামের উন্নয়নে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে আবশ্যক হয়ে পড়েছে মামলার জরুরি রায়দান। এরপরই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, মামলার শুনানি আজই শেষ হচ্ছে, শীঘ্রই রায়দান হবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবীর দাবি নস্যাৎ করে বিজেপির আইনজীবী জানান, পঞ্চায়েত আইনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন করেছে রাজ্য সরকার। তার ফলে এখন প্রশাসক নিয়োগের বন্দোবস্ত করা যায়। সম্প্রতি রাজ্য সরকার প্রশাসক নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্তও নেয়।
তৃণমূল কংগ্রেসের আইনজীবী-সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা জানান, বিরোধীরা চাইছেন নির্বাচন প্রক্রিয়াটিকে একেবারে নস্যাৎ করে দিতে। তারপর চাইছে নির্বাচন কমিশনারকে সরিয়ে দিয়ে। আর চাইছেন ই-মনোনয়নকে বৈধ করতে। সেই নিয়মে তো কোনও বিচ্যুতি ঘটেনি। বিরোধীরা যদি প্রার্থী দিতে না পারেন, তার দায় আমাদের নয়। আমরা তো আর প্রার্থী এনে দেব না।
তিনি বলেন, আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কখনও কোনও দল জেতেনি, এমনটা তো নয়। এর আগেও বহুবার এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রার্থী দিতে না পারায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে কোনও না কোনও দল। এই অবস্থায় ঝুলে রয়েছে পঞ্চায়েত মামলা। শুনানি শেষ। এ সপ্তাহের মধ্যেই জানা যাবে বিজয়লক্ষ্মী কার দিকে ঢলে।