ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ অব্যাহত, গুরুতর জখম এক কর্মী
রাজ্য থেকে জেলার শীর্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বারেবারে বলছেন যে দলের মধ্যে কোনও রকম গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু দলের ব্লক বা অঞ্চল স্তরের নেতা কর্মীরা তা মানতে নারাজ। আর তাই গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব বহাল তবিয়তে আছে তৃণমূল কংগ্রেসের একেবারে নীচের তলায়। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর এলাকার এক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় তাই উঠে আসছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তত্ত্ব। অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের এক কর্মীকে হাঁসুয়া জাতীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কোপানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের আরেক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। যদিও এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি এলাকার বা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি।
সোমবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে গোপীবল্লভপুর দু'নম্বর ব্লকের চোরচিতা গ্রামে। গুরুতর জখম ওই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীর নাম চন্দন দে (৩০)। বর্তমানে চন্দন ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , সোমবার সন্ধ্যায় চোরচিতা গ্রামে একটি জশসার অনুষ্ঠান চলছিল। তা দেখার জন্য চন্দন বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফাঁকা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময়ই আচমকা দুষ্কৃতীরা চন্দনকে হাঁসুয়া জাতীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। চন্দনের চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা ছুটে এলে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় ওই দুষ্কৃতীরা। সেখান থেকে চন্দনকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় তপসিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাকে নিয়ে হয় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।
অভিযোগ এই ঘটনার পেছনে আছে তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। গোপীবল্লভপুর দু'নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি কালিপুর সুরের অনুগামী চন্দন। অপরদিকে বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি টিঙ্কু পালের গোষ্ঠীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই কালীপুরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। এই ঘটনার পেছনে এলাকার তৃণমূলে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে বলেই দাবি করেছেন এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ।
কালিপুর সুরের দাবি, রাজীব কর নামে এক ঠিকাদারের নেতৃত্বে এই নিন্দনীয় ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে আমাদের দলের অনেকের মদত রয়েছে। তাদের নাম আমি উল্লেখ করছি না। এর আগেও রাজীবের নেতৃত্বে এলাকায় বোমাবাজিও করা হয়েছিল। যারা দলের বদনাম করছে তারা তাকে মদত করছে। তখন পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তাই পুলিশের প্রতি আমাদের কোন আস্থা বা বিশ্বাস নেই সেজন্য আমরা এখনও কারোর বিরুদ্ধে থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করিনি।
টিঙ্কু পাল ও তৃণমূল কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি বীরবাহা সরেন টুডু এই ঘটনা সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি। বেলিয়াবেড়া থানার ওসি সৌরভ ঘোষ বলেন, ঘটনার লিখিত অভিযোগ এখনও পর্যন্ত থানায় করা হয়নি। তবে আমরা খোঁজ নিচ্ছি। ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।