উন্নয়নের নিরিখে কোন সাংসদরা এগিয়ে, কে পিছিয়ে, সংসদের ‘রিপোর্ট কার্ড’ একনজরে
২০১৯-এ লোকসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। তার আগে কেন্দ্রীয় রিপোর্ট কার্ডে সাংসদদের বিগত পাঁচ বছরের পারফরম্যান্সের প্রকাশ পেল।
২০১৯-এ লোকসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। তার আগে কেন্দ্রীয় রিপোর্ট কার্ডে সাংসদদের বিগত পাঁচ বছরের পারফরম্যান্সের প্রকাশ পেল। এক্ষেত্রে রাজ্যের সাংসদের পারফরম্যান্সে এলাকা উন্নয়ন তহবিল খরচের নিরিখে বিজেপিকে অনেক পিছনে ফেলে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদরা। ২০১৯-এ এই রিপোর্ট কার্ডই ভোট প্রচারের মুখ্য বিষয় হয়ে উঠতে চলেছে।
এক নিরিখে দেখে নেওয়া যাক কারা রয়েছে প্রথম পাঁচে। আর একেবারে পিছনের সারিতে বাংলার কোন সাংসদরা সেদিকেও নজর দেওয়া যাক।
মমতাবালা ঠাকুর
বনগাঁ-র তৃণমূল সাংসদ এবারই প্রথম সংসদে পা দিয়ে চমকে দিয়েছেন অন্যদের। সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের বরাদ্দ খরচে তিনি সবার আগে। ১০২.৬৭ শতাংশ খরচ করে সবার উপরে স্থান মমতাবালা ঠাকুরের।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
তৃণমূলের তরুণ তুর্কি সাংসদ। যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। তিনি সাংসদদের পারফরম্যান্সেও বাংলার ৪২ জনের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি খরচ করে ফেলেছেন ১০১.৫২ শতাংশ।
ইদ্রিশ আলি
বসিরহাটের সাংসদের পারফরম্যান্সও এবার বেশ নজরকাড়া। তিনি এবার অনেককেই পিছনে ফেলে উঠে এসেছেন তৃতীয় স্থানে। তিনি সংসদ তহবিল থেকে ১০০.৫৫ শতাংশ টাকা খরচ করেছেন এলাকার উন্নয়নে।
কাকলি ঘোষদস্তিদার
বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও উজ্জ্বল পারফরম্যান্স মেলে ধরেছেন সাংসদ হিসেবে। তিনি তাঁর এলাকা উন্নয়ন তহবিলের ৯৯,৫৮ শতাংশ খরচ করেছেন। আর এলাকা উন্নয়নের এই কাজের জন্য পূর্ণ কৃতিত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
অর্পিতা ঘোষ
বালুরঘাটের সাংসদ অর্পিতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই মানুষের পাশে থেকে উন্নয়নের কাজে ব্রতী হয়েছেন। আর তা যে তিনি মেলে ধরেছেন তাঁর সংসদীয় ক্ষেত্রেও, তার প্রমাণ রিপোর্ট কার্ড। সেই অনুযায়ী তিনি ৯৮৪৯ শতাংশ খরচ করেছেন।
আর সবথেকে নিচের দিকে স্থান করে নিয়েছেন যাঁরা তাঁদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য যাঁরা
সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া
বিজেপির দার্জিলিংয়ের সাংসদ সবার পিছনে স্থান পেয়েছেন। সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া এখন পর্যন্ত তাঁর তহবিলের ৫৩.৪৫ শতাংশ খরচ করচে পেরেছেন। এই পারফরম্যান্স অন্যদের তুলনায় তাঁকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে। যদিও তিনি এই পিছিয়ে পড়ার জন্য দায়ী করেছেন জেলা প্রশাসনের অসহযোগিতাকে।
বাবুল সুপ্রিয়
আসানসোলের বিজেপি সাংসদ। আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। উন্নয়নের জন্য মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু রিপোর্ট কার্ডে তার ছাপ পড়েনি। তবে রাজ্যের আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর তুলনায় তাঁর পারফরম্যান্স ভালো। তিনি বরাদ্দ টাকার ৭১.৯২ শতাংশ খরচ করেছেন।
অধীর চৌধুরী
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। তিনি তাঁর সাংসদ তহবিলের মাত্র ৬১. ৫৪ শতাংশ টাকা এলাকা উন্নয়নের কাজে খরচ করতে পেরেছেন। বহরমপুরের এখনও তিনি জনপ্রিয় হলেও, তাঁর পারফরম্যান্স কিন্তু এলাকায় প্রভাব ফেলতে বাধ্য। তৃণমূল যখন তাঁকে হারাতে বদ্ধপরিকর, তখন অধীর চৌধুরী বিরুদ্ধে যাবে এই রিপোর্ট কার্ডও।
প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সাফল্যের মুখ দেখেছেন এই সাংসদরা।
মহম্মদ সেলিম
সিপিএম সাংসদ। রায়গঞ্জ থেকে ত্রিমুখী লড়াইয়ে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। বিরোধীরা যখন জেলা প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করছেন, তার মধ্যে মহম্মদ সেলিম দারুন পারফরম্যান্স করেছেন। তিনি তাঁর সাংসদ তহবিলের ৯৪.৯৮ শতাংশ খরচ করেছেন উন্নয়ন খাতে।
তাপস পাল
কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাপস পাল দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। তারপর অসুস্থও ছিলেন বেশ কিছুদিন। তবু তাঁর পারফরম্যান্স বেশ নজরকাড়া। প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাঁর তহবিলের ৮০ শতাংশের বেশি টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে জানিয়েছেন, জেলাশাসক, স্থানীয় বিধায়ক, পুর চেয়ারম্যানরা সহযোগিতা করেছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের মানুষকে।