বিজেপিতে যোগ দেওয়ার 'পুরস্কার'! শিশির অধিকারীকে রাজ্যপাল করার ভাবনা মোদী সরকারের
কে বলেছে আমি তৃণমূলে আছি? প্রকাশ্যে এমনই মন্তব্য ছুঁড়ে দিয়েছিলেন শিশির অধিকারী। এরপরেই অমিত শাহের সভাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। রীতি মেনে বিজেপির দলীয় পতাকা না নিলেও শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শিশির অধিকারী।
কে বলেছে আমি তৃণমূলে আছি? প্রকাশ্যে এমনই মন্তব্য ছুঁড়ে দিয়েছিলেন শিশির অধিকারী। এরপরেই অমিত শাহের সভাতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। রীতি মেনে বিজেপির দলীয় পতাকা না নিলেও শ্রী রাম স্লোগান দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শিশির অধিকারী।
শুধু তাই নয়, অধিকারী গড়ে বিজেপি কর্মীদের জেতাতে কার্যত অসুস্থ শরীরেই ময়দানে নেমে পড়েন তিনি। এরপরেই প্রবীণ এই সাংসদকে বড় পুরস্কার পেতে চলেছেন তিনি।
শিশির অধিকারীকে রাজ্যপাল করার ভাবনা
প্রবীণ এই রাজনীতিবিদের অভিজ্ঞতা অনেক। আর সেই অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখেই এগোতে চাইছেন বিজেপি। আনন্দবাজার পত্রিকাতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, শিশির অধিকারীকে রাজ্যপাল করার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে এই খবর মিলেছে। সূত্রের খবর, দেশের পূর্বাঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া দু'টি রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবনায় রয়েছে। শিশির নিজে ওই বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানেন না। তবে তাঁর কাছে রাজ্যপাল হওয়ার প্রস্তাব এলে তিনি তা ফেরাবেন না বলেই তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য।
শুভেন্দু বিজেপি যোগের পর থেকেই দূরত্ব
শারীরিক ভাবে অসুস্থ শিশির অধিকারী। তবে শিশিরবাবু এখনও যথেষ্ট শক্তসমর্থ। পাশাপাশিই, রাজনৈতিক ভাবেও তিনি সক্রিয়। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের পর থেকেই তাঁর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়তে থাকে। এমনকি বারবার তাঁকে আক্রমণ করা হোয় শাসকদলের তরফে। যা নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশও করা হয়। শিশিরবাবু বলেন, জোর করে তাঁদের বিজেপিতে পাঠানো হচ্ছে। এরপরেই ক্ষোভ এতটাই বাড়তে থাকে যে নরেন্দ্র মোদী- শাহের সভা যোগ দিয়ে বিজেপিতে নাম লেখান শিশির।
সাংসদ পদ খারিজ করার আবেদন
বিজেপিতে যোগ দিলেও শিশির অধিকারীর সাংসদ রয়েছেন বটে। কিন্তু বাংলায় বিধানসভা ভোট মিটলে তৃণমূল তাঁর সাংসদপদ খারিজের জন্য লোকসভার স্পিকারের কাছে আবেদন জানানো হবে। এমনটাই মন্তব্য করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর আগেই প্রবীণ এই রাজনীতিবিদকে 'সম্মানজনক পুনর্বাসন' দিতে চায় বিজেপি। এমনটাই সূত্রের খবর। আর সেই কারণেই তাঁকে রাজ্যপাল করার ভাবনা।
আগে থেকেই এই ভাবনা
প্রকাশিত খবর বলছে, আগামী অগস্টে পূর্বাঞ্চলের একটি রাজ্যের রাজ্যপালের মেয়াদ শেষ হলে শিশির অধিকারীকে সেখানেই রাজ্যপাল করে পাঠানো হবে। বিজেপির এক নেতা ওই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওনার বয়স হয়েছে। এই অবস্থায় তাঁকে যাতে আর কোনও রাজনৈতিক বিড়ম্বনায় পড়তে হোক, সেটা আমরা চাই না। এমন প্রবীণ এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিক যে রাজ্যের রাজ্যপাল হবেন, সেই রাজ্যই তাঁর প্রজ্ঞা থেকে লাভবান হবে। আমরা সেই পথেই বিজেপি ভাবছে বলে ওই সংবাদ মাধ্যমকে জানান ওই বিজেপি নেতা। অন্যদিকে শিশিরবাবুকে রাজ্যপাল করা হলে ওই আসনটি ফাঁকা হয়ে যাবে। আর ওই আসনে লড়তে পারেন শিশিরের ছোটপুত্র সৌম্যেন্দু। যিনি এই সেদিন পর্যন্তও কাঁথি পুরসভার প্রধান প্রশাসক ছিলেন। শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর যাঁকে ওই পদ থেকে সরকারি নির্দেশে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তার অব্যবহিত পরেই তিনি বিজেপি-তে যোগ দেন। ফলে সৌম্যেন্দুকেও 'পুনর্বাসন' দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সেদিক দিয়ে কাঁথির সাংসদপদের চেয়ে তাঁর পক্ষে ভাল আর কিছু হতে পারে না বলে মিনে করা হচ্ছে।