মমতাকে চিঠি, সৌমেন্দুকে নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করছেন দিব্যেন্দু! 'ভবিতব্য'কে ধরে নিয়েই পদক্ষেপ
কাঁথি (contai) পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে ভাই সৌমেন্দু অধিকারীর অপসারণের তীব্র বিরোধিতা করেছেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দাদা দিব্যেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিতে চলেছেন। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ভাইকে দায়িত্বে না ফেরানো পর্যন্ত তিনি এবং তাঁর সাংসদ বাবা পুরসভায় যাবেন না।

প্রথম অভিযোগ করেছিলেন অখিল গিরি
কাঁথি পুরসভার প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারীকে নিয়ে প্রথম অভিযোগ করেছিলেন রামনগরের তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরি। তাঁর অভিযোগ ছিল, শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে দাদার অনুগামী কিংবা বিজেপির কর্মসূচির আয়োজন করছেন সৌমেন্দু অধিকারীই। তিনি আরও দাবি করেছিলেন, সৌমেন্দু শুধু মিছিলেই হাঁটছেন না, বাকি সব কাজ করছেন। সৌমেন্দুর দ্বিচারিতা দল ধরে ফেলেছে বলে মন্তব্য করে তিনি জানিয়েছিলেন, সৌমেন্দুকে শীঘ্রই দায়িত্ব থেকে সরানো হবে। কাঁথি দেশপ্রাণ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তৃণমূল নেতাও একই কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে দলেরই বিরোধিতা করবেন তা হতে পারে না।

মঙ্গলবার দায়িত্ব থেকে অপসারণ
মঙ্গলবার কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শুভেন্দু অধিকারীর ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারীকে। ফিরহাদ হাকিমের নগরোন্নয়ন দফতরের নির্দেশেই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অপসারণের খবর পেয়ে অবশ্য হতবাক হয়েছিলেন সৌমেন্দু।

প্রকাশ্যেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা দিব্যেন্দুর
সৌমেন্দুকে অপসারণের খবর পেয়েই তীব্র বিরোধিতা করেন তমলুকের সাংসদ দাদা দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, তিনি চিঠিতে লিখেছেন, এক তৃণমূল নেতা মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে সৌমেন্দুকে অবিচার ও অনৈতিক সিদ্ধান্তের শিকার হতে হচ্ছে। অবিলম্বে তাঁকে দায়িত্বে ফেরানোর দাবিও করেছেন তিনি। বোর্ডের দায়িত্বও তাঁর হাতেই তুলে দেওয়ার দাবি করেছেন তিনি। যদি তা না করা হয়, তাহলে তিনি ও তাঁর বাবা শিশির অধিকারী পুরসভার অফিসে যাবে না বলে জানিয়েছেন। চিঠিতে দিব্যেন্দু উল্লেখ করেছেন, সৌমেন্দুর পাশাপাশি তিনি ও তাঁর বাবা তৃণমূলেই রয়েছেন।

শুভেন্দুকে নিয়ে দিব্যেন্দু
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দিব্যেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন, তিনি দল ছাড়ছেন না। নিজেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক বলে দাবি করেছিলেন তিনি। বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারীর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলেও মন্তব্য করেছিলেন দিব্যেন্দু। ভবিষ্যতে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে দিব্যেন্দু বলেছিলেন, তিনি তো আর পাগলা ষাঁড় হয়ে যাননি।

অধিকারী পরিবারের অভিযোগ
অধিকারীর পরিবারের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, শিশির অধিকারীর পরিবারকে কোণঠাসা করে অসম্মান করতে অধিকারী পরিবারের বিরোধী অখিল গিরির গোষ্ঠীকে খুব তোল্লাই দেওয়া হচ্ছে। যা করা হচ্ছে তা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই করা হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত করা হয়েছে। প্রসঙ্গত শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগদানের আগে শিশির অধিকারী খেদ প্রকাশ করে বলেছিলেন, দলের একাংশ শুভেন্দু অধিকারীকে বিজেপির দিকে ঠেলে দিচ্ছে!

ঘর দেখছে অধিকারী পরিবার
অধিকারী পরিবার সূত্রে খবর, কাঁথি পুরসভার উল্টোদিকে তাঁরা একটি ঘর দেখেছেন। সৌমেন্দু অধিকারীকে দায়িত্বে ফেরানো না হলে, সেই ঘর থেকেই দিব্যেন্দু অধিকারী এবং শিশির অধিকারী জনসংযোগের কাজ চালাবেন বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

একুশে জোট যেন না ভাঙে, মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী এবং আসন ভাগাভাগি নিয়ে কংগ্রেসি-বার্তা