মমতার মঞ্চ এড়িয়ে এবার ভোটে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত বর্ধমানের প্রবীণ তৃণমূল বিধায়কের
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মাটি উৎসবের মঞ্চে ছিলেন না। গতকাল ওই অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে দেখিয়েছিলেন শারীরিক অসুস্থতা। আর আজ সকালে সরাসরি টুইট করে জানিয়ে দিলেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তিনি লড়বেন না। সে কথা চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েও দিয়েছেন। তবে সেই চিঠিটি পাঠিয়েছেন গত ৩০ জানুয়ারি! রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক ড. রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের এই পোস্ট দেখে রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
নজরে বর্ধমান দক্ষিণ
বর্ধমানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা বারেবারেই প্রকাশ্যে আসে। তা বেড়েছে সিপিআইএম থেকে বিজেপি হয়ে আইনুল হক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর। এক সময়ে সিপিআইএমের দাপুটে নেতা তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আইনুল হককে মানবেন না বলে প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন তৃণমূলের আরেক দাপুটে নেতা খোকন দাস। রাজ্যে নেতৃত্বও বর্ধমানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানতে পারেনি। বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, আইনুল ও খোকন দুজনেই প্রার্থীপদের প্রত্যাশী। তার মধ্যেই বেড়েছে বিজেপি। বেশিরভাগ ওয়ার্ডে জিতলেও বর্ধমান দক্ষিণে সামান্য ভোটে পিছিয়ে ছিল গেরুয়া শিবির। এই ফলাফলে উৎসাহিত বিজেপি আসন্ন নির্বাচনে টার্গেট করেছে এই আসনটিকেও।
বিধায়ক ও মন্ত্রী রবিরঞ্জন
২০১১ সালে যাঁকে তৃণমূলের প্রার্থী করার কথা ছিল বর্ধমান দক্ষিণ আসনে সেই সিদ্ধান্ত বদলানো হয় বাংলার সাহিত্য জগতের এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সুপারিশে। সেই সুপারিশ মেনে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যাকে প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালেও তিনি জেতেন। কারিগরী শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, বায়ো টেকনোলজি দফতরের মন্ত্রিত্বও সামলেছেন। যদিও বর্ধমানের রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যায়, প্রথম থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অস্বস্তিতে ছিলেন বিধায়ক। দলের কাজকর্মেও সেভাবে পাওয়া যেত না বলে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ ছিল। বিধায়ক কলকাতায় বেশি থাকেন, বর্ধমানে কম থাকেন এমন অভিযোগও ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও সম্পর্ক আগের জায়গায় ছিল না। এক ধর্নামঞ্চে তাঁকে দলনেত্রী মঞ্চে উঠতে নিষেধ করেছিলেন, এমন নজিরও রয়েছে। সেই রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় এবার নির্বাচনে লড়া থেকে অব্যাহতি চাইলেন।
টুইটারে সরে দাঁড়ানোর বার্তা
আজ টুইটারে দলনেত্রীকে লেখা চিঠি পোস্ট করে রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আমার বয়স ও শারীরিক কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার প্রিয় বর্ধমানবাসীদের ধন্যবাদ জানাই ও তাঁদের কল্যাণ কামনা করি। তৃণমূল সূত্রে খবর, এবার আর টিকিট পাবেন না বুঝেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা বা বিডিএ-র চেয়ারম্যান পদেও তিনি আসীন থাকেন কিনা সেদিকেও এখন সকলের নজর।