সেচমন্ত্রী হিসেবে ‘রেকর্ড’ কাজ রাজীবের! শিষ্টাচার মেনেই ‘স্বচ্ছ’ জবাব দিলীপকে
সেচমন্ত্রী হিসেবে ‘রেকর্ড’ কাজ! শিষ্টাচার মেনেই দিলীপকে জবাব দিলেন ‘স্বচ্ছ’ রাজীব
বাংলার রাজনীতিতে তিনি স্বচ্ছতার পরিচয় রেখে কাজ করে চলেছেন প্রতিটি পদক্ষেপে। সেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরু্দ্ধেই কি না দুর্নীতির কালি ছিটিয়ে ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। প্রাক্তন সেচমন্ত্রী তার জবাব দিলেন শিষ্টাচার মেনেই। তিনি এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতির শিষ্টাচারেরও প্রভূত সুখ্যাতিও করেন।
রাজীবের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ ছিল দিলীপের
রাজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল সেচমন্ত্রী থাকাকালীন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরবনে গিয়ে শুধু ছবি তুলেছেন, কাজের কাজ কিছুই করেননি। ২০০৯-এ ঘূর্ণিঝড় আয়লায় সুন্দরবন বিধ্বস্ত হওয়ার পর ১০ বছরে কোনও কাজই হয়নি। তিনি নদী বাঁধ তৈরির টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও করেছিলেন রাজীবের বিরুদ্ধে।
দিলীপকে শিষ্টাচার মেনে জবাব রাজীবের
অভিযোগ খণ্ডন করে একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজীব বলেন, রাজনীতিতে মতাদর্শের ফা্রাক থাকতে পারে, তা থাকবেও। কিন্তু রাজনীতিতে ব্যক্তিগত শত্রুতার কোনও জায়গা নেই। দিলীপবাবু একটা কথা বলেছেন, আমার খুব খারাপ লেগেছিল। উনি কী বলেছিলেন, সেই ভিডিও আমি শুনিনি। ওয়েব পোর্টালে পড়েছিলাম শুধু। তার দুদিনের মাথায় দিলীপবাবু ফোন করে জানিয়েছেন তিনি ‘আত্মসাৎ' কথাটি বলেননি। আমি তাঁর এই শিষ্টাচারে খুব আনন্দিত, খুশি।
রাজীবের কাজ রেকর্ডে লিপিবদ্ধ
রাজীব বলেন, আমি ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সেচ দফতরের দায়িত্বে ছিলাম। এই পাঁচ বছরে যে কাজ হয়েছে, যেভাবে কাজ হয়েছে, তা আগে কখনও হয়নি। তা লিপিবদ্ধ রয়েছে বিধানসভার রেকর্ডে। শুধু আমার দলই নয়, বিরোধীরাও সে দফতরের কাজের প্রশংসা করেছিলেন। তিনি বলেন, তাঁর আমলে পাঁচ বছরে সবথেকে বেশি বাঁধ নির্মাণ, বাঁধ সংস্কার, সেচ খাল সংস্কার ইত্যাদি সমস্ত কাজ হয়েছে।
অধিগ্রহণে দেরি, খরচ বৃদ্ধি
দেরি আর আয়লাবিধ্বস্ত বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজীবের জবাব, আয়লার বাঁধ নির্মাণের টাকা যখন বরাদ্দ হয়েছিল, আর ১১-১২ সালে যখন কাজ শুরু হয়েছিল, তার মধ্যে খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সিপিএম মাত্র ২৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল। এরপর আমাদের সরকার জমি অধিগ্রহণ প্রথা পুরোপুরি পরিবর্তন করে দেয়। জোর করে কোনও জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি। বাজারদর অনুযায়ী জমি নেওয়া হয়েছে। তার জেরেই বিলম্ব হয়।
১০০ কিমি বাঁধ নির্মাণ বরাদ্দ টাকায়
আর কাজ শুরুর সময় বরাদ্দ টাকায় ১০০ কিমির বেশি বাঁধ নির্মাণ সম্ভব ছিল না। ১০০ কিমি বাঁধ নির্মাণ হয়েছে সুন্দরবনে। এটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি। প্রয়োজনে সুন্দরবনে ঘুরে ঘুরে দেখাতে পারি ১০০ কিমি বাঁধ কোথায় কোথায় হয়েছে। তাই কাজ হয়নি এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। ওই ১২০০ কোটি টাকায় যে কাজ হওয়ার পুরোটাই হয়েছে।
স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ, নম্রতায় জবাব
রাজীব বলেন, সারাজীবন স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে এসেছি। যতদিন কাজ করব, স্বচ্ছতার সঙ্গেই করব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছিলেন মানুষের জন্য কাজ করার জন্য। সুন্দরবনের মানুষের জন্য তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। এছাড়া বাম আমলে ১৮০ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছি। তা বিভিন্ন এজেন্সির কাছ থেকে উদ্ধার করে আমি সরকারি কোষাগারে ফিরিয়ে দিয়েছি। ফলে দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বললাম, কেউ প্রমাণ দিতে পারলে আমি দায়িত্ব ছেড়ে দেব।
ছবি সৌ:রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক প্রোফাইল
কেন্দ্রে যে সার্কাস চলছে, আর তাতে একাধিক জোকার সামিল হয়েছে, রাজনাথকে পাল্টা কংগ্রেসের