পাহাড়ের চাকা ঘুরছে, তিনমাস পর মন্ত্রী পা রাখতেই স্বাভাবিক ছন্দে মিরিক
পাহাড়ে বনধ শুরু হওয়ার পর থেকে কোনও তৃণমূলমন্ত্রী পা রাখতে সাহস করেননি। নবান্নে সর্বদল বৈঠকের পর থেকে ক্রমশ পাহাড়ে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে।
পাহাড়ের চাকা ঘুরছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন ক্রমশ কমছে। ফের পাহাড়ে তৃণমূল-মন্ত্রীর পা রাখা সেই বার্তাই দিল এবার। মোর্চা-সমর্থকরা তৃণমূলমন্ত্রী গৌতম দেবের পাশে দাঁড়িয়ে বনধের বিরোধিতায় সওয়াল করলেন। আবার মন্ত্রী নিজে হাতে ত্রাণ তুলে দিলেন পাহাড়বাসীদের হাতে। যান চলাচল শুরু হল পাহাড়ের একটা অংশে। খুলল দোকান-বাজারও।
পাহাড়ে বনধ শুরু হওয়ার পর থেকে কোনও তৃণমূলমন্ত্রী পা রাখতে সাহস করেননি। নবান্নে সর্বদল বৈঠকের পর থেকে ক্রমশ পাহাড়ে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। বনধ বিরোধিতায় পথে নেমেছে তৃণমূল। মোর্চার বিনয়পন্থীরাও মিছিল করেছেন বনধের বিরেধিতায়। পাহাড়ে গুরুং বিরোধী সুর বাজছে। এদিন আবার মন্ত্রী গৌতম দেব পাহাড়ে পা রেখে অভয়বাণী দিলেন। তাঁর বরাভয়েই খুলল দোকান-বাজার।
বুধবার সকালে মিরিকের গাড়িধুরা বাজারে শান্তি মিছিল হয়। প্রায় দু-হাজার মানুষ পা মেলান এই মিছিলে। মোর্চার সমর্থকরাও মিছিলে পা মিলিয়ে জানিয়ে দেন আর বনধ মানা হবে না। এই মিছিলের পরই গাড়িধুরা ও পানিঘাটায় দোকান খোলেন ব্যবসায়ীরা। গৌতমবাবু বলেন, 'কেউ ভয় পাবেন না। প্রশাসন আপনাদের সঙ্গে রয়েছে। পাহাড়ের মানুষ কার্যত না খেয়ে রয়েছেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাই এদিন ১ লরি চাল ও আটা বিলি করা হয়। পরিবার পিছু ১০ কেজি চাল ও ৫ কেজি করে আটা দেওয়া হয়।'
গৌতমবাবু বলেন, 'মোর্চার বনধে পাহাড়ে এমনই পরিস্থতি হয়েছে যে, শাক-পাতা ও মাশুরুম খেয়ে দিন কাটছে পাহাড়বাসীর। তাই এই ত্রাণ বিলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তৃণমূলের তরফে।' তিনি বলেন, 'পুজোর আগে পাহাড়ে স্বাভাবিক ছন্দ ফেরানো হবেই। আগামী ১২ সেপ্টেম্বর উত্তরকন্যার বৈঠকেই চূড়ান্ত হয়ে যাবে সবকিছু।'
এদিন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে পাহাড়ে গিয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী, জিটিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ প্রধান প্রমুখ। পাহাড়ের শরীরী ভাষা এখন বদলাতে শুরু করেছে। বদলাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ। মোর্চায় ফাটল ধরেছে। আড়াআড়ি দু-ভাগ হয়ে গিয়েছে পাহাড়ের শাসকেরা। টানা বনধে বিরক্ত হয়ে মানুষ এখন মোর্চার সঙ্গ ত্যাগ করছে।