বারান্দায় রোদ্দুর পাগলু! তৃণমূলের তালিকায় সেলিব্রিটির ছড়াছড়ি
পাহাড় থেকে শুরু করলে প্রথমেই দেখা যাচ্ছে বাইচুং ভুটিয়ার নাম। তিনি দাঁড়াচ্ছেন দার্জিলিং থেকে। 'পাহাড়ি বিছে' পাহাড়ি অঞ্চলে চমক দেবেন, এই আশায় তাঁকে টিকিট দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারতের একদা সেরা ফুটবলারকে দাঁড় করানোয় বাংলার খেলোয়াড় মহলেও দলের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে মনে করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
বালুরঘাট থেকে লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন অর্পিতা ঘোষ। গত কয়েক বছরে মমতার কাছাকাছি থাকার সুবাদে নাট্যকার অর্পিতা ঘোষ বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অর্পিতার একটি নাটক মঞ্চস্থ করতে বাধা দিয়েছিল তৎকালীন শাসক দল সিপিএম। সেই থেকে 'বামপন্থী' অর্পিতা ঘোষ ঝুঁকে পড়েন তৃণমূলের দিকে। সুবক্তা এবং ডাকাবুকো নাট্যকার হিসাবে তিনি কলকাতার শিল্পী মহলে পরিচিত।
বাংলা ব্যান্ড 'ভূমি'-র সৌমিত্র রায় দাঁড়াচ্ছেন মালদহ উত্তর কেন্দ্র থেকে। এই 'ভূমি' রচিত গান 'বারান্দায় রোদ্দুর' এক সময় গোটা পশ্চিমবঙ্গে হিল্লোল তুলেছিল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সৌমিত্রবাবুর পারফরম্যান্সে আপ্লুত হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে লোকসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে বড় চমক দিলেন তৃণমূল নেত্রী। এদিকে, হাওড়া থেকে এবার ফের তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়ক ইন্দ্রনীল সেনকে তৃণমূল কংগ্রেস দাঁড় করাচ্ছে বহরমপুর থেকে। গানের জাদুতে এতদিন ইন্দ্রনীল সেন মোহিত করেছেন বাংলার মানুষকে। এবার তাঁর জাদু চলে কি না, সেটাই দেখতে হবে। কারণ, বহরমপুর কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর খাস তালুক। অধীরবাবুকে ধরাশায়ী করে তিনি যদি জেতেন, তা হলে বুঝতে হবে সত্যিই ইন্দ্রনীল ইন্দ্রবধ করলেন!
সেলিব্রিটি শিক্ষাবিদ তথা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পরিবারের মানুষ সুগত বসু লড়বেন যাদবপুর থেকে। লক্ষণীয়, যাদবপুরের বর্তমান সাংসদ কবীর সুমন টিকিট পাননি এবার। এটা অবশ্য প্রত্যাশিত ছিল। কারণ, গত কয়েক বছর ধরে যেভাবে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগছিলেন, তাতে নিশ্চিতভাবেই চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন।
ঘাটাল থেকে দাঁড়াচ্ছেন 'চাঁদের পাহাড়'-এর নায়ক দেব। বা বলা চলে বাঙালির প্রিয় 'পাগলু' ছেলে। দেবকে প্রার্থী করার প্রস্তাব গৃহীত হয় শেষ সময়ে। তৃণমূল সুপ্রিমো নিজে কথা বলেন। শেষ পর্যন্ত দেব রাজি হন। তবে মিডিয়াকে কিছু জানাননি। এদিন চমকটা তুলে রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাংলা সিনেমার 'জনমদুঃখিনী নারী' সন্ধ্যা রায়কে মেদিনীপুর আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি যে তৃণমূলের কাছাকাছি আসছেন, তা বোঝা গিয়েছিল গত জানুয়ারি মাসের ব্রিগেডে। মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে তিনিও মঞ্চে ছিলেন।
সদ্যপ্রয়াত মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের কন্যা মুনমুন সেন বাঁকুড়া থেকে দাঁড়াচ্ছেন। একদা দুর্দান্ত অভিনেত্রী মুনমুন মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই ভেঙে পড়েন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। তাই তিনি যখন প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেন, মুনমুন আর মানা করতে পারেননি।
তৃণমূল কংগ্রেসের এই তারকাখচিত তালিকায় যথারীতি তাপস পাল এবং শতাব্দী রায় রইলেন। এঁরা এক সময় সোমেন মিত্রর সঙ্গে খুব দহরম-মহরম শুরু করেছিলেন। তাতে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা হয়েছিল, এঁরা আর টিকিট পাবেন না। অথচ টিকিট পেলেন।