বিরোধী শূন্য এলাকায় হামলার ভয়ে তটস্থ তৃণমূল, কারণ জানলে অবাক হবেন
ভদ্রেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায়ের খুনের পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে তৃণমূল শিবিরে। মনোজের মতো পরিণতি আশঙ্কায় রয়েছেন শাসকদলের অনেক নেতাই। শুধু ভদ্রেশ্বর নয়, চিত্রটা রাজ্যের অনেক জায়গাতেই।
ভদ্রেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায়ের খুনের পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে তৃণমূল শিবিরে। মনোজের মতো পরিণতি আশঙ্কায় রয়েছেন শাসকদলের অনেক নেতাই। শুধু ভদ্রেশ্বর নয়, চিত্রটা রাজ্যের অনেক জায়গাতেই।
[আরও পড়ুন: ভদ্রেশ্বরের পর বহরমপুর, এবার গুলিতে জখম তৃণমূল নেতা, ভর্তি এসএসকেএম-এ]
মঙ্গলবার রাতে মনোজ উপাধ্যায়ের খুনের ঘটনার পরে আতঙ্ক ছড়ায় শাসক তৃণমূলের অন্দরে। ব্যক্তিগত স্তরে আলোচনায় আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন তাঁরা। প্রথমেই পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছোট থেকে বড় সব নেতাই।
শাসকদলের বড় নেতার যদি নিরাপত্তা না থাকে, তাহলে অন্যদের কী অবস্থা হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন ছড়িয়েছে তৃণমূলের নিচের তলাতেও। ছড়িয়েছে আতঙ্কও।
ভদ্রেশ্বর-সহ হুগলির বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম চলছে। পুলিশের বিরুদ্ধেও জাগছে ক্ষোভ। সেই ক্ষোভ প্রশমনে বুধবার ভদ্রেশ্বরে গিয়ে মনোজ উপাধ্যায়ের খুনিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের আশ্বাস দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেও আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে।
শুধু ভদ্রেশ্বর নয়। রাজ্যের বেশির ভাগ জায়গাই আজ বিরোধী শূন্য। ক্ষমতার লোভেই হোক আর শাসকদলের 'ভয়' বিরোধীদের কণ্ঠস্বর নেই অনেক জায়গাতেই। জলাভূমি ভরাট, বেআইনি প্রোমোটিং, তোলাবাজি কমবেশি রাজ্যের সর্বত্রই চলছে। সেখান থেকেই সুযোগ নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা। খানিকটা শাসকদলের একাংশের মদতেই। এমনটাই জানাচ্ছেন রাজ্যের রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী এর আগে বিভিন্ন সভা থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের বিষয়টি নিয়ে সতর্কও করেছেন। পাল্টা বিরোধী শিবির মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্যকে কটাক্ষও করেছে।
ভদ্রেশ্বরে অবৈধ কাজ বন্ধ করতে গিয়ে খুন হতে হল চেয়ারম্যানকে। কিন্তু অন্য জায়গায় কাঁচা টাকার হাতবদল নিয়ে লাগছে লড়াই।
বিরোধী নেত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিপিএম নেতাদের অবস্থান নিয়ে কটাক্ষ করতেন। বলতেন, একসময়ে যাঁদের হাতে বিড়ির খাওয়ার টাকা থাকত না, তাঁরা দামি সিগারেট খান। আর দরমার পার্টি অফিস তিনতলা পার্টি অফিসে পরিণত। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার ছয় বছরের মধ্যেই তাদের প্রায় সবকটি পার্টি অফিস পাকাপোক্ত। আর মুখ্যমন্ত্রীর দলের অনেক নেতাই, যাঁরা কিনা সাইকেলে ঘুরতেন তাঁরা এখন এসইউভি ছাড়া চলতে পারেন না। দলের নেতাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন জায়ছে স্থানীয় মানুষের মনেই। বলছেন রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্বের একাংশ।
পঞ্চায়েত ভোটের সামনে এই ধরনের হামলার ঘটনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। ফলে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে তৃণমূলের নেতাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।