কচ্ছপের বদলা মিরজাফর! মুকুলকে নিয়ে আসানসোলের রাজনীতিতে জোর তরজা
তৃণমূলের চার বিধায়ক ও জেলা সভাপতি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে একযোগে তোপ দাগলেন। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়কে পাল্টা আক্রমণ মলয় ঘটকের।
বর্ধমানের রানিগঞ্জে সভা করে মন্ত্রী মলয় ঘটককে 'কচ্ছপ' বলে কটাক্ষ করেছিলেন মুকুল রায়। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুকুল রায়কে চাঁছাছোলা ভাষায় বিঁধলেন মলয় ঘটক অ্যান্ড কোং। তৃণমূলের চার বিধায়ক ও জেলা সভাপতি মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে একযোগে তোপ দাগলেন। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়কে পাল্টা আক্রমণ করে মলয় ঘটক বলেন, 'মিরজাফর বেঁচে থাকলে মুকুল রায়কে দেখে বিষপান করতেন।'
মলয় ঘটক বলেন, 'সিবিআইয়ের ভয়ে বিজেপিতে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। দুর্নীতি থেকে বাঁচতেই তাঁর এই পলায়ন মনোবৃত্তি। কয়েকটা দিন সবুর করুন, দেখবেন কী হাল হয় ওঁর। মুকুলবাবু যাওয়ার জায়গা পাবেন না। ফলে ওইসব মিরজাফরদের কথায় কোনও কাজ নেই। ওই কথায় আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজনীতি করি, তাই আমাদের বাঁচার জন্য অন্য কোনও ডাল ধরার প্রয়োজন হয় না।'
রবিবার রানিগঞ্জের সভায় মুকুল রায় বলেন, 'মলয় ঘটক একটা কচ্ছপ। তাঁকে উলটে দিলে আর চলতে পারবেন না। ভাইকে দিয়েও কোনও কিছু করতে পারছে না। ওর ঘাড়ের উপরই রয়েছেন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শুনেছি, তিনি নাকি মন্ত্রীর একটা কথাও শোনেন না।' মুকুলের এই কটাক্ষের পর আর চুপ করে থাকতে পারেননি মলয় ঘটক।
তিনি একেবারে দলবল নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে মুকুল রায়কে তোপ দেগেছেন। শুধু একা তিনি নন, বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় থেকে তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধান উপাধ্যায়- সবাই মুকুলকে নিশানা করেন। তাঁরা বলেন, 'মুকুল রায় তো একবারও কাঁচরাপাড়ার ওয়ার্ড কাউন্সিলরও হতে পারেননি। আমরা অনেকবার মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। যদি বুকের পাটা থাকে একবার মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেখান না মুকুলবাবু!'
মলয় ঘটকের পাশাপাশি অন্য বিধায়কদের উদ্দেশ্য মুকুল রায় বলেছিলেন, 'কেউই এখানে মুক্ত বাতাস নিতে পারছেন না।' সেই প্রসঙ্গে বিধায়করা বলেন, 'মুকুলবাবু আগে একটা পঞ্চায়েতে জিতে আসুন, তারপর আমাদের নিয়ে কথা বলবেন। আমরা কেমন আছি, তার ঠিকা তো আপনি নেননি। আমরা মুক্ত বাতাসে থাকব, নাকি বদ্ধ বাতাসে থাকব, সেটা নিশ্চয়ই উনি বলে দেবেন না।'
এই মুহূর্তে জমজমাট তরজা শুরু হয়েছে আসানসোলে। আসানসোলের রাজনীতি গত দুদিন ধরে বিজেপি বনাম তৃণমূল কংগ্রেস বাকযুদ্ধে সরগরম। তবে এই সাংবাদিক বৈঠকে জেলা সভাপতি ও চার বিধায়কের উপস্থিতি থাকলেও মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির গরহাজিরা নিয়ে আবার জল্পনা শুরু হয়েছে।