তৃণমূলের কেষ্টার ‘কীর্তি’ অব্যাহত! এবার চোখ রাঙালে চোখ তুলে নেওয়ার হুঙ্কার
এবার বিরোধীদের চোখ তুলে নেওয়ার নিদান দিলেন তিনি। বীরভূমের মহম্মদ বাজারের সভাতে স্বমহিমায় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
বিতর্কের মাঝেও স্বমহিমায় বীরভূম তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এবার বিরোধীদের চোখ তুলে নেওয়ার নিদান দিলেন তিনি। বীরভূমের মহম্মদ বাজারের সভা থেকে তিনি হুঙ্কার ছাড়লেন, 'চোখ রাঙালে চোখ তুলে নেবেন তিনি। সেই জায়গায় বসিয়ে দেবেন পাথরের চোখ।' আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে কর্মিসভা থেকে বিরোধীদের জন্য এই 'দাওয়াই' ঠিক করে দিলেন অনুব্রত।
তিনি এদিন বলেন, 'কী করে ভোট করতে হয়, তা আমার জানা আছে। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে আমরাই জিতব।' এ প্রসঙ্গেই তিনি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, 'চোখ রাঙালে চোখ তুলে নেওয়া হবে। তাতে কোনও অসুবিধা নেই। চোখ তুলে পাথরের চোখ লাগিয়ে দেওয়া হবে। অনেক পাথর আছে।'
দলের নিষেধ কার্যত উড়িয়ে তৃণমূল নেতার এহেন কথাবার্তায় রাজনৈতিক মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ প্রসঙ্গে সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নিশানা অনুব্রতকে ছাড়িয়ে চলে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত। মহম্মদ সেলিম বলেন, 'দল ও দলের নেত্রীর প্রত্যক্ষ মদতেই এসব করে চলেছেন অনুব্রত।'
আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, 'এসব তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৃষ্টি-কলার নমুনা। এসবেরল পিছনে যে সক্রিয় মদত রয়েছে আমাদের দিদি-র, তা প্রমাণিত। এসব তৃণমূলের পালোয়ানদের কাজ। এসব পালোয়ানরা আবার বিনা পুলিশের এক পাও চলতে পারেন না, আবার পুলিশকেই গালমন্দ করেন। লন্ডন-স্কটল্যান্ড জয় করা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে এটাই এখন বাংলার সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।' বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'অনুব্রত মণ্ডলের পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে তার কথাই এখন বড় প্রমাণ।'
[আরও পড়ুন : 'আমি পুলিশ হলে ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দিতাম', তৃণমূলের 'কেষ্টা'কে কে দিলেন এমন জবাব]
এর আগে মঞ্চে দাঁড়িয়ে পুলিশকে 'বোম' মারার নিদান দিয়েছিলেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার নিদান দিয়েছিলেন। আর তিনদিন আগে সরাসরি পুলিশের দিকে আঙুল উঁচিয়ে 'কর্তব্য' বোঝালেন তিনি। সময় নির্ধারণ করে দিলেন অভিযুক্তদের গ্রেফতারির। অন্যথায় ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ক্ষার করে দেওয়ার হুঙ্কার ছাড়লেন।
এখানেই শেষ নয়, আবদুল মান্নান ও বিকাশ ভট্টাচার্যকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেবেন বলেও তোপ দাগলেন পুলিশের সামনেই। তবু পুলিশ নির্বিকার। তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কথায় ঘাড় নেড়ে সহমত পোষণ করতে দেখা গেল পুলিশ আধিকারিককে। পুলিশের এই ভেজা বিড়ালের মতো আচরণের সমালোচনা চলছিলই। তারপরও মুখে লাগাম লাগল না অনুব্রতর। ফের তিনি বিরোধীদের নিশানায় উসকানিমূলক কথা বললেন।